Download WB Holiday Calendar App 2026

Download Now!
প্রযুক্তি

AI Remote Jobs: AI-এর কারণে বিপদে ‘রিমোট জব’! গুগল ডিপমাইন্ডের সহ-প্রতিষ্ঠাতার সতর্কবার্তা, পাল্টে যাবে কাজের ধরণ

AI Remote Jobs: গুগল ডিপমাইন্ডের (Google DeepMind) সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং চিফ এজিআই সায়েন্টিস্ট শেন লেগ (Shane Legg) কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই (AI)-এর ভবিষ্যৎ প্রভাব নিয়ে এক গভীর ও তাৎপর্যপূর্ণ সতর্কবার্তা দিয়েছেন। তাঁর মতে, এআই এখন আর কেবল কাজের গতি বাড়ানোর সাধারণ সফটওয়্যার বা টুল নয়, বরং এটি মানুষের বুদ্ধিমত্তার স্তরে পৌঁছানোর খুব কাছাকাছি চলে এসেছে। আগামী এক দশকের মধ্যে এআই প্রযুক্তির এই অগ্রগতি মানুষের কাজ করার পদ্ধতি, উপার্জন এবং অর্থনীতিতে তাদের অবস্থানকে সম্পূর্ণ নতুন করে সংজ্ঞায়িত করতে পারে। প্রফেসর হান্না ফ্রাই-এর সাথে এক সাক্ষাৎকারে শেন লেগ ব্যাখ্যা করেছেন কেন এআই এখন কেবল সহায়ক বা অ্যাসিস্ট্যান্টের ভূমিকা ছাড়িয়ে এমন এক পর্যায়ে যাচ্ছে, যা নীরবে রিমোট বা দূরবর্তী কাজের (Remote Work) বড় অংশ নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে।

রিমোট জবের ওপর বড় ধাক্কা এবং ঝুঁকির সম্ভাবনা

শেন লেগের মতে, যে সমস্ত কাজ পুরোপুরি অনলাইনে বা ইন্টারনেটের মাধ্যমে করা হয় এবং যেখানে শারীরিক উপস্থিতির প্রয়োজন নেই, সেই কাজগুলোই এআই-এর কারণে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। তিনি একটি সহজ কিন্তু কঠোর বাস্তব তুলে ধরেছেন: “যদি আপনি আপনার কাজটি শুধুমাত্র একটি কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট ব্যবহার করে দূর থেকে বা বাড়ি বসে করতে পারেন, তবে সেই কাজটি ভবিষ্যতে এআই দ্বারা প্রতিস্থাপিত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।” যত দিন যাচ্ছে, এআই আরও নির্ভরযোগ্য এবং দক্ষ হয়ে উঠছে, ফলে কোম্পানিগুলোর হয়তো আর বাড়ি থেকে কাজ করা বড় বড় টিম বা দলের প্রয়োজন হবে না।

সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং ও কর্মসংস্থানে পরিবর্তন

বিশেষ করে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বা কোডিংয়ের ক্ষেত্রে এই পরিবর্তন খুব দ্রুত দৃশ্যমান হবে বলে মনে করেন শেন লেগ। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন যে, এআই টুলগুলো কাজের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেওয়ায় ইঞ্জিনিয়ারদের বড় দলের প্রয়োজন কমে আসবে। তাঁর ভাষায়, “যেখানে আগে ১০০ জন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের প্রয়োজন হতো, সেখানে হয়তো ভবিষ্যতে মাত্র ২০ জন ইঞ্জিনিয়ার এবং উন্নত এআই টুলের মাধ্যমেই সেই কাজ করা সম্ভব হবে।” এর ফলে উৎপাদনশীলতা বাড়লেও, এন্ট্রি-লেভেল বা নতুনদের জন্য এবং রিমোট কাজের সুযোগ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যেতে পারে।

অর্থনীতির কাঠামোতে আমূল পরিবর্তন

শেন লেগের উদ্বেগ কেবল নির্দিষ্ট কিছু পেশার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। তিনি বারবার জোর দিয়েছেন যে, এআই অর্থনীতি এবং সমাজের কাঠামোকেই বদলে দেবে। বর্তমানে মানুষ তাদের মানসিক বা শারীরিক শ্রমের বিনিময়ে অর্থ উপার্জন করে, কিন্তু যখন মেশিন বা যন্ত্র মানুষের চেয়ে ভালো, দ্রুত এবং সস্তায় সেই কাজ করতে পারবে, তখন এই প্রথাগত ব্যবস্থা আর কার্যকর নাও হতে পারে। তিনি উল্লেখ করেন, ডেটা সেন্টারগুলো এখন মেগাওয়াট পাওয়ার খরচ করে এবং আলোর গতিতে তথ্য প্রসেস করতে সক্ষম, যা মানুষের মস্তিষ্কের পক্ষে অসম্ভব। তাই মেশিনের ক্ষমতা মানুষের বুদ্ধিমত্তার সীমানা ছাড়িয়ে যাওয়া এখন আর কোনো তাত্ত্বিক বিষয় নয়।

সবার আগে খবরের আপডেট পান!

টেলিগ্রামে যুক্ত হন

২০২০ সালের পরিস্থিতির সাথে তুলনা

শেন লেগ এই পরিস্থিতিকে ২০২০ সালের শুরুর দিকের সময়ের সাথে তুলনা করেছেন। সেসময় বিশেষজ্ঞরা আসন্ন মহামারী সম্পর্কে সতর্ক করলেও অনেকেই তা গুরুত্বের সাথে নেননি। তিনি বলেন, “মানুষের পক্ষে বিশ্বাস করা খুব কঠিন যে সত্যিই একটি বড় পরিবর্তন আসছে।” কিন্তু যখন মৌলিক শক্তিগুলো কাজ করতে শুরু করে, তখন বড় পরিবর্তন আসাটা অবধারিত। আগামী কয়েক বছরে এআই কেবল সহায়ক টুল থেকে সরে এসে স্বাধীনভাবে অর্থনৈতিক কাজ করতে শুরু করবে।

উজ্জ্বল ভবিষ্যতের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ

এতসব আশঙ্কার মাঝেও শেন লেগ ভবিষ্যৎকে পুরোপুরি নেতিবাচক হিসেবে দেখছেন না। তিনি বিশ্বাস করেন, এআই বিজ্ঞানের অগ্রগতি এবং উৎপাদনশীলতা বাড়িয়ে একটি “স্বর্ণযুগ” (Golden Age) নিয়ে আসতে পারে। তবে আসল চ্যালেঞ্জটি হলো সম্পদ বন্টন। বুদ্ধিমান মেশিনের মাধ্যমে তৈরি হওয়া সম্পদ কীভাবে সমাজে ভাগ করা হবে এবং মানুষ যাতে কর্মহীন বা উদ্দেশ্যহীন না হয়ে পড়ে, তা নিশ্চিত করাই হবে মূল কাজ। সরকার এবং প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই পরিবর্তন আসার আগেই নতুন করে চিন্তাভাবনা শুরু করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

WBPAY Team

আমাদের প্রতিবেদন গুলি WBPAY Team এর দ্বারা যাচাই করে লেখা হয়। আমরা একটি স্বাধীন প্ল্যাটফর্ম যা পাঠকদের জন্য স্পষ্ট এবং সঠিক খবর পৌঁছে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের লক্ষ্য এবং সাংবাদিকতার মান সম্পর্কে জানতে, অনুগ্রহ করে আমাদের About us এবং Editorial Policy পৃষ্ঠাগুলি পড়ুন।
Back to top button