নির্দেশিকা

BLO Stamp Rule: বিএলও-দের স্ট্যাম্প দেওয়া কি বাধ্যতামূলক? নির্বাচন কমিশনের নতুন বিজ্ঞপ্তি ঘিরে বড় আপডেট

BLO Stamp Rule: পশ্চিমবঙ্গ সহ সারা দেশে নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে ভোটার তালিকা সংশোধন এবং এনুমারেশন বা তথ্য যাচাইয়ের কাজ চলছে। এই প্রক্রিয়ার মেরুদণ্ড হলেন বুথ লেভেল অফিসার বা বিএলও (BLO)-রা। তাঁরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করেন এবং প্রয়োজনীয় ফর্ম জমা নেন। সম্প্রতি এই এনুমারেশন ফর্ম জমা নেওয়ার সময় রিসিভ কপি দেওয়া নিয়ে সাধারণ মানুষ ও বিএলও-দের মধ্যে এক ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছিল। সেই বিভ্রান্তি দূর করতেই নির্বাচন কমিশন এবার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।

নির্বাচন কমিশনের নজরে এসেছে যে, ভোটার তালিকা সংশোধনের সময় এনুমারেশন ফর্ম জমা নেওয়ার পর, রিসিভ কপিতে বিএলও-দের স্ট্যাম্প দেওয়া নিয়ে একটি অসামঞ্জস্য তৈরি হয়েছে। কোথাও বিএলও-রা স্ট্যাম্প দিচ্ছেন, আবার কোথাও দিচ্ছেন না। এই বিষয়টি নিয়ে সাধারণ ভোটারদের মনে প্রশ্ন জাগছিল, যার সঠিক উত্তর দেওয়া প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল।

কেন এই নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি করা হলো?

দেখা গেছে যে, অনেক বিএলও (BLO) রিসিভ কপিতে নিজের সই করার পাশাপাশি একটি স্ট্যাম্প ব্যবহার করছেন। এই স্ট্যাম্পে সাধারণত বিধানসভার নম্বর, পার্ট নম্বর এবং বিএলও-র পদমর্যাদা উল্লেখ থাকে। অন্যদিকে, অনেক বিএলও শুধুমাত্র সই করে রিসিভ কপি ভোটারকে ফেরত দিচ্ছেন, কোনো স্ট্যাম্প ব্যবহার করছেন না।

এই পার্থক্যের ফলে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে একটি ভুল ধারণা তৈরি হচ্ছিল। যাঁরা স্ট্যাম্প দেওয়া রিসিভ কপি পাচ্ছেন না, তাঁরা মনে করছিলেন যে তাঁদের ফর্মটি হয়তো সঠিক বা বৈধভাবে জমা পড়েনি। এর ফলে অনেক ক্ষেত্রে বিএলও-দের সাধারণ মানুষের প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছিল এবং অহেতুক বিরূপ প্রতিক্রিয়া বা তর্কাতর্কির সৃষ্টি হচ্ছিল। এই সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যেই নির্বাচন কমিশন স্পষ্ট নির্দেশিকা সামনে এনেছে।

সবার আগে খবরের আপডেট পান!

টেলিগ্রামে যুক্ত হন

নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকায় কী বলা হয়েছে?

কমিশনের এই নতুন বিজ্ঞপ্তিতে বিএলও এবং ভোটার উভয়ের জন্যই বিষয়টি অত্যন্ত স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। নিচে নির্দেশিকার মূল পয়েন্টগুলি আলোচনা করা হলো:

১. স্ট্যাম্প ব্যবহার বাধ্যতামূলক নয় (Not Mandatory):
নির্বাচন কমিশন স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে, এনুমারেশন ফর্মের রিসিভ কপিতে বিএলও-দের রাবার স্ট্যাম্প ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক নয়। অর্থাৎ, কোনো বিএলও যদি স্ট্যাম্প না দেন, তবে তিনি কোনো নিয়ম লঙ্ঘন করছেন না। এটি সম্পূর্ণ ঐচ্ছিক বিষয়।

২. রিসিভ কপিতে সই আবশ্যক:
স্ট্যাম্প ঐচ্ছিক হলেও, রিসিভ কপিতে বিএলও-র স্বাক্ষর বা সই (Signature) থাকাটা বাধ্যতামূলক। বিএলও ফর্মটি গ্রহণ করার পর অবশ্যই তাতে নিজের সই করবেন এবং সেই কপিটি ভোটারকে প্রমাণস্বরূপ ফেরত দেবেন। স্ট্যাম্প না থাকলেও শুধুমাত্র সই থাকলেই ওই রিসিভ কপিটি ১০০% বৈধ বলে গণ্য হবে।

৩. ভোটার ও বিএলও-দের করণীয়:

  • বিএলও-দের জন্য: যাঁদের কাছে স্ট্যাম্প নেই বা যাঁরা ব্যবহার করছেন না, তাঁদের চিন্তার কোনো কারণ নেই। সই করে রিসিভ কপি দিলেই দায়িত্ব পালন করা হবে।
  • ভোটারদের জন্য: যদি আপনার রিসিভ কপিতে বিএলও-র স্ট্যাম্প না থাকে, কিন্তু সই থাকে, তবে অযথা আতঙ্কিত হবেন না। আপনার আবেদনটি সঠিকভাবে গৃহীত হয়েছে।

সচেতনতা বৃদ্ধিতে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা

নির্বাচন কমিশন শুধুমাত্র সরকারি আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, বরং সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে রাজনৈতিক দলগুলিকেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, সমস্ত রাজনৈতিক দল যেন তাদের বুথ লেভেল এজেন্ট বা বিএলএ (BLA)-দের মাধ্যমে এই সঠিক তথ্যটি সাধারণ ভোটারদের কাছে পৌঁছে দেয়। যাতে ফর্ম জমা দেওয়ার সময় কোনো ভুল বোঝাবুঝি না হয়।

একনজরে নির্দেশিকার সারাংশ:

বিষয়নির্দেশিকা
স্ট্যাম্প ব্যবহারবাধ্যতামূলক নয় (ঐচ্ছিক)
স্বাক্ষর (Signature)বাধ্যতামূলক (Mandatory)
রিসিভ কপির বৈধতাসই থাকলেই সম্পূর্ণ বৈধ

পরিশেষে বলা যায়, নির্বাচন কমিশনের এই পদক্ষেপ মাঠপর্যায়ে কাজের গতি বাড়াবে এবং বিএলও ও ভোটারদের মধ্যে আস্থার সম্পর্ক বজায় রাখতে সাহায্য করবে। তাই রিসিভ কপিতে স্ট্যাম্প না দেখলে ঘাবড়ানোর কিছু নেই, সইটি ভালো করে দেখে নিন।

WBPAY Team

আমাদের প্রতিবেদন গুলি WBPAY Team এর দ্বারা যাচাই করে লেখা হয়। আমরা একটি স্বাধীন প্ল্যাটফর্ম যা পাঠকদের জন্য স্পষ্ট এবং সঠিক খবর পৌঁছে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের লক্ষ্য এবং সাংবাদিকতার মান সম্পর্কে জানতে, অনুগ্রহ করে আমাদের About us এবং Editorial Policy পৃষ্ঠাগুলি পড়ুন।
Back to top button