EPF Investment: PF গ্রাহকদের জন্য বড় সুখবর! সুদের হার বাড়াতে বিনিয়োগের নিয়মে বদল, শীঘ্রই মিলতে পারে ৮.৫% সুদ
EPF Investment: দেশের প্রায় আট কোটি এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড (EPF) গ্রাহকের জন্য আসতে চলেছে এক দারুণ সুখবর। কোটি কোটি চাকুরিজীবীর ভবিষ্যতের সঞ্চয়ের উপর সুদের হার বাড়ানোর জন্য এক বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে কেন্দ্র। ইপিএফে জমা হওয়া টাকা বিনিয়োগের বর্তমান নিয়মে বেশ কিছু খামতি রয়েছে বলে স্বীকার করে নিয়েছে এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজেশন (EPFO)। এই ‘ভুল’ বিনিয়োগ নীতির কারণে গ্রাহকরা তাঁদের প্রাপ্য লাভ থেকে বঞ্চিত হচ্ছিলেন। এবার সেই নিয়ম ঢেলে সাজানোর প্রস্তাব চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
প্রভিডেন্ট ফান্ডের কেন্দ্রীয় অছি পরিষদের বৈঠকে পাশ হওয়া এই নতুন প্রস্তাবটি ইতিমধ্যেই শ্রমমন্ত্রকের ছাড়পত্র পেয়ে গিয়েছে। বর্তমানে এটি অর্থ মন্ত্রকের কাছে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। অর্থ মন্ত্রকের সবুজ সঙ্কেত পেলেই পিএফ গ্রাহকদের জন্য খুলে যাবে আরও বেশি রিটার্ন পাওয়ার রাস্তা।
কেন এই নিয়ম বদলের প্রয়োজন পড়ল?
EPFO-র বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, গ্রাহকদের বেতনের যে অংশ পিএফ খাতে জমা হয়, তার একটি বড় অংশ বিভিন্ন বন্ড এবং শেয়ার বাজারে খাটানো হয়। এই বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত লাভের অংশই গ্রাহকদের সুদ হিসেবে দেওয়া হয়।
সমস্যাটি হল, নিয়ম অনুযায়ী গ্রাহকের টাকা থেকে সর্বনিম্ন ২০ শতাংশ কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বন্ডে বিনিয়োগ করার কথা। কিন্তু বাস্তবে বাজারে যথেষ্ট পরিমাণে উচ্চ রিটার্ন দেওয়া বন্ড পাওয়া যায় না। ফলে পোর্টফোলিও ম্যানেজারদের অনেক সময়েই কম সুদের হারে টাকা খাটাতে বাধ্য হতে হয়, যা সরাসরি গ্রাহকদের প্রাপ্য সুদের উপর প্রভাব ফেলে। এই সমস্যা সমাধানের জন্যই বিনিয়োগের কাঠামোয় বদল আনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
সবার আগে খবরের আপডেট পান!
টেলিগ্রামে যুক্ত হনকী কী পরিবর্তন আনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে?
কেন্দ্রীয় অছি পরিষদের বৈঠকে বিনিয়োগের নিয়মে দুটি বড় পরিবর্তনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যার মূল লক্ষ্য হল গ্রাহকদের রিটার্ন বাড়ানো।
- রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বন্ডে বিনিয়োগ: বর্তমানে যেখানে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বন্ডে সর্বনিম্ন ২০% বিনিয়োগ বাধ্যতামূলক, সেই সীমা কমিয়ে ১০% করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এর ফলে কম রিটার্ন দেওয়া বন্ডে টাকা আটকে রাখার বাধ্যবাধকতা কমবে।
- সরকারি লগ্নিপত্রে (G-Sec) বিনিয়োগ: অন্যদিকে, গভর্নমেন্ট সিকিউরিটিজ বা সরকারি লগ্নিপত্রে বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা ৬৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সরকারি লগ্নিপত্র যেহেতু অনেক বেশি সুরক্ষিত এবং ভালো রিটার্ন দেয়, তাই এখানে বিনিয়োগ বাড়লে গ্রাহকদের লাভও বাড়বে।
এই বদলগুলির একটি তুলনামূলক চিত্র নিচে দেওয়া হল:
| বিনিয়োগের ক্ষেত্র | বর্তমান নিয়ম | প্রস্তাবিত নিয়ম |
|---|---|---|
| রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বন্ড | সর্বনিম্ন ২০% (সর্বোচ্চ ৪৫%) | সর্বনিম্ন ১০% |
| সরকারি লগ্নিপত্র (G-Sec) | সর্বোচ্চ ৬৫% | সর্বোচ্চ ৭৫% |
৮.৫ শতাংশ পর্যন্ত সুদ পাওয়ার সম্ভাবনা
কেন্দ্রীয় অছি পরিষদের সদস্য এবং টিউসিসি-র সাধারণ সম্পাদক এস পি তিওয়ারি জানিয়েছেন, তাঁরা এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ডে (ETF) বিনিয়োগের হার বাড়ানোর জন্যও দাবি জানিয়েছেন। কারণ শেয়ার বাজারের সঙ্গে যুক্ত এই ফান্ড থেকেই সবথেকে বেশি রিটার্ন আসে। তাঁর মতে, এই প্রস্তাবগুলি অনুমোদিত হলে গ্রাহকদের জন্য ৮.৫ শতাংশ পর্যন্ত সুদ পাওয়া সম্ভব হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন যে, অর্থ মন্ত্রক থেকে খুব শীঘ্রই এই বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসবে, যা দেশের কোটি কোটি পিএফ গ্রাহকের মুখে হাসি ফোটাবে।