SIR: নতুন এনুমারেশন ফর্ম ফিল-আপ করার সম্পূর্ণ পদ্ধতি, ভুল না করতে হলে অবশ্যই দেখুন
SIR: পশ্চিমবঙ্গ নির্বাচন কমিশন ২০২৫ সালের চূড়ান্ত ভোটার তালিকার জন্য বিশেষ গণনা (Voter Enumeration) পর্ব শুরু করতে চলেছে। এই প্রক্রিয়া ৪ঠা নভেম্বর থেকে শুরু হবে। বর্তমানে অফলাইনে এই কাজ শুরু করার প্রস্তুতি নেওয়া হলেও, শীঘ্রই অনলাইন প্রক্রিয়াও চালু হবে। ২০২৫ সালের ভোটার তালিকায় যাদের নাম নথিভুক্ত আছে, তাদের প্রত্যেককেই এই নতুন ফর্মটি পূরণ করতে হবে এবং এটি বাধ্যতামূলক। এই প্রতিবেদনে আমরা এই ফর্মটি নির্ভুলভাবে পূরণ করার প্রতিটি ধাপ বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।
ফর্মে কোন তথ্য আগে থেকেই প্রিন্ট করা থাকবে?
আপনাকে যে ফর্মটি দেওয়া হবে, তাতে আপনার ভোটার কার্ডের ডেটাবেস থেকে নেওয়া বেশ কিছু তথ্য আগে থেকেই প্রিন্ট করা থাকবে। আপনাকে শুধু মিলিয়ে দেখতে হবে সব ঠিক আছে কিনা। যে তথ্যগুলি প্রিন্ট করা থাকবে:
- আপনার নাম, এপিক নম্বর (EPIC No.) এবং ঠিকানা।
- আপনার বিধানসভা ও লোকসভা কেন্দ্রের নাম ও নম্বর।
- পার্ট নম্বর, সিরিয়াল নম্বর এবং রাজ্যের নাম।
- একটি বিশেষ কিউআর কোড (QR Code)।
- আপনার বর্তমান ছবি (সাদা-কালো বা রঙিন হতে পারে)।
আপনাকে কী কী তথ্য পূরণ করতে হবে? (২০২৫ সালের তথ্য)
ফর্মের প্রথম অংশে আপনাকে কিছু সাম্প্রতিক তথ্য আপডেট করতে হবে। এই অংশটি খুব সাবধানে পূরণ করুন।
- নতুন রঙিন ছবি: নির্দিষ্ট স্থানে আপনাকে অবশ্যই একটি সাম্প্রতিক পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি লাগাতে হবে।
- জন্ম তারিখ (Date of Birth): এটি পূরণ করা বাধ্যতামূলক। দিন, মাস ও বছরের নির্দিষ্ট ফরম্যাটে (DD/MM/YYYY) এটি লিখতে হবে।
- মোবাইল নম্বর: এটিও বাধ্যতামূলক। নির্বাচন সংক্রান্ত ভবিষ্যতের সমস্ত তথ্য ও OTP আপনার এই নম্বরেই আসবে।
- আধার নম্বর: এটি ঐচ্ছিক (Optional)। আপনি চাইলে দিতে পারেন, অথবা এই ঘরটি ফাঁকাও রাখতে পারেন।
- পিতা/মাতা/স্বামীর বিবরণ: আপনাকে পিতা বা অভিভাবকের নাম লিখতে হবে। তাদের এপিক নম্বর থাকলে উল্লেখ করতে পারেন, তবে তা বাধ্যতামূলক নয়। বিবাহিত মহিলারা স্বামীর নাম এবং তার এপিক নম্বর (ঐচ্ছিক) দেবেন। অবিবাহিতদের ক্ষেত্রে ‘Spouse’s Name’-এর ঘরটি ‘Not Applicable’ লিখে দিন।
২০০২ সালের তথ্য: কাদের কী পূরণ করতে হবে?
ফর্মের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো ২০০২ সালের তথ্য প্রদান। এখানে দুটি আলাদা ভাগ রয়েছে, যা আপনার জন্ম সালের উপর নির্ভর করছে।
সবার আগে খবরের আপডেট পান!
টেলিগ্রামে যুক্ত হন১. যাদের নাম ২০০২ সালের ভোটার লিস্টে ছিল:
আপনার জন্ম যদি ১৯৮৪ সাল বা তার আগে হয়ে থাকে, তবে আপনার নাম ২০০২ সালের ভোটার লিস্টে থাকার সম্ভাবনা প্রবল। সেক্ষেত্রে আপনাকে ফর্মের বাঁ-দিকের অংশটি পূরণ করতে হবে। এখানে আপনাকে নিজের ২০০২ সালের তথ্য, যেমন, তৎকালীন নাম, এপিক নম্বর (যদি থাকে), রিলেটিভের নাম (সাধারণত পিতা), এবং ২০০২ সালের ঠিকানা অনুযায়ী বিধানসভা, পার্ট নম্বর ও সিরিয়াল নম্বর উল্লেখ করতে হবে।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: জেলা ভাগের কারণে ২০০২ সালের বিধানসভা কেন্দ্রের নাম বা নম্বর বর্তমানের থেকে আলাদা হতে পারে। এতে চিন্তার কিছু নেই, ২০০২ সালের লিস্ট অনুযায়ী যে তথ্য ছিল, সেটিই নির্ভুলভাবে লিখুন।
২. যাদের নাম ২০০২ সালের ভোটার লিস্টে ছিল না:
আপনার জন্ম যদি ১৯৮৪ সালের পরে হয়, তবে আপনার নাম ২০০২ সালের ভোটার লিস্টে থাকার কথা নয়। সেক্ষেত্রে আপনাকে ফর্মের বাঁ-দিকের অংশটি পূরণ করতে হবে না। পরিবর্তে, আপনাকে ডান-দিকের অংশটি পূরণ করতে হবে।
এই অংশে, আপনাকে আপনার পরিবারের এমন একজন নিকট আত্মীয়ের (Relative) বিবরণ দিতে হবে, যার নাম ২০০২ সালের ভোটার লিস্টে ছিল। আপনি আপনার পিতা, মাতা, কাকা, কাকিমা বা অন্য কোনো নিকট আত্মীয়ের তথ্য দিতে পারেন। আপনাকে সেই আত্মীয়ের নাম, তার ২০০২ সালের এপিক নম্বর (যদি থাকে), আপনার সঙ্গে তার সম্পর্ক এবং তার ২০০২ সালের ভোটার লিস্টের ঠিকানা (বিধানসভা, পার্ট নম্বর, সিরিয়াল নম্বর) উল্লেখ করতে হবে।
ফর্মটি পূরণ করার পর নির্দিষ্ট স্থানে স্বাক্ষর করতে ভুলবেন না। যদি আপনার পরিবারের কোনো সদস্য বাইরে থাকেন, তবে আপনি তাদের ফর্মটি পূরণ করে নিজে স্বাক্ষর করতে পারেন এবং ‘Relationship’-এর কলামে আপনার সম্পর্ক (যেমন ‘Father’ বা ‘Mother’) উল্লেখ করে দিতে পারেন। এই ফর্মের উপর ভিত্তি করেই ২০২৫ সালের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা তৈরি হবে, তাই সতর্কতার সাথে পূরণ করুন।