WB Govt Employees: বকেয়া ডিএ ও ষষ্ঠ বেতন কমিশন নিয়ে ইউনিটি ফোরামের গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ও সাফল্য

WB Govt Employees: পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মীদের দীর্ঘদিনের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) এবং ষষ্ঠ বেতন কমিশন নিয়ে চলা আইনি লড়াইয়ে এক নতুন মোড় এসেছে। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা একটি ঐতিহাসিক রায় দিয়েছেন, যা রাজ্য সরকারি কর্মচারী মহলে ব্যাপক আশার সঞ্চার করেছে। এই রায়ে ষষ্ঠ বেতন কমিশনের রিপোর্ট অবিলম্বে প্রকাশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যা ইউনিটি ফোরামের নিরলস প্রচেষ্টার ফল।
ইউনিটি ফোরামের ঐতিহাসিক পদক্ষেপ
ইউনিটি ফোরামের আহ্বায়ক দেবপ্রসাদ হালদার ষষ্ঠ বেতন কমিশনের রিপোর্ট জনসমক্ষে আনার জন্য তথ্য জানার অধিকার (RTI) আইনের আশ্রয় নিয়েছিলেন। তাঁর এই সাহসী পদক্ষেপের কারণেই বিচারপতি সিনহা রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন দ্রুত কমিশনের সুপারিশের কপি অর্থ মন্ত্রকের ওয়েবসাইটে আপলোড করতে। পশ্চিমবঙ্গের অন্য কোনও কর্মচারী সংগঠন এই ধরনের উদ্যোগ নেয়নি, তাই এটি ইউনিটি ফোরামের জন্য একটি বিরাট সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
সুপ্রিম কোর্টে আপিলের সম্ভাবনা
যদিও হাইকোর্টের রায় এখনও সরকারিভাবে প্রকাশিত হয়নি, তবে এটি সরকারের জন্য একটি চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতি তৈরি করেছে। ইউনিটি ফোরাম সুপ্রিম কোর্টের গ্রীষ্মকালীন অবকাশ শেষ হওয়ার পর, অর্থাৎ ১৪ই জুলাই-এর পর, তাদের আইনজীবীদের সাথে পরামর্শ করবে। সুপ্রিম কোর্টে এই বিষয়ে আপিলের প্রয়োজন আছে কিনা, তা নিয়ে তখন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই রায়ের ওপর বহু কর্মীর ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে।
ষষ্ঠ বেতন কমিশন এবং ডিএ মামলার প্রভাব
আলোচনায় ষষ্ঠ বেতন কমিশন রিপোর্টের সাথে সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন ডিএ মামলার সম্পর্ক উঠে এসেছে। দেবপ্রসাদ হালদার ব্যাখ্যা করেছেন যে, কর্মীরা পঞ্চম বেতন কমিশনের সময় থেকে বকেয়া (৫০% ডিএ) নিয়ে লড়ছেন। এখন, ষষ্ঠ বেতন কমিশনের মেয়াদ ২০২৫ সালে শেষ হচ্ছে। তাই, ইউনিটি ফোরাম নিশ্চিত করতে চায় যে কর্মীরা পঞ্চম এবং ষষ্ঠ উভয় কমিশনের সমস্ত বকেয়া পাওনা বুঝে পান, যার মধ্যে ROPA 2019 অনুযায়ী বর্তমান মহার্ঘ ভাতাও অন্তর্ভুক্ত। সুপ্রিম কোর্টে এই সম্পূর্ণ বিষয়টি ৪ঠা আগস্ট, ২০২৫ তারিখে উত্থাপন করা হবে।
সরকারের অবস্থান এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ
পশ্চিমবঙ্গ সরকার সুপ্রিম কোর্টে (তাদের SLP-এর ৮২ নম্বর পৃষ্ঠায়) জানিয়েছে যে তারা ষষ্ঠ বেতন কমিশন বাস্তবায়ন করেছে এবং ROPA 2019 অনুযায়ী কোনও ডিএ বকেয়া নেই। তবে, বিচারপতি সঞ্জয় করোলের বেঞ্চ গত ১৬ই মে, ২০২৫ তারিখে সরকারকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে ২৫% বকেয়া ডিএ পরিশোধ করার নির্দেশ দিয়েছে। এই নির্দেশ কার্যকর না হলে ইউনিটি ফোরাম কী পদক্ষেপ নেবে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে।
আদালতের রায়ের স্পষ্টীকরণ এবং ভুল তথ্যের প্রভাব
আদালতের রায় “মুলতুবি” থাকায় সরকারের পক্ষে এর পর্যালোচনা সম্ভব নয়। বিচারপতি সমস্ত পক্ষকে চার সপ্তাহের মধ্যে লিখিত জমা দিতে বলেছেন। আদালত পুনরায় খুললে ইউনিটি ফোরাম তাদের লিখিত বক্তব্য জমা দেবে। কিছু সংবাদমাধ্যমে সরকারের বক্তব্য এবং বকেয়া ডিএ নিয়ে ভুল তথ্য ছড়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। সংবাদমাধ্যমে উল্লিখিত ২৫% ডিএ আসলে মোট বকেয়া অর্থের ২৫%, শুধু ডিএ নয়। বিচারক প্রাথমিকভাবে ৫০% দেওয়ার কথা বলেছিলেন, কিন্তু আদালতকে একটি নির্দিষ্ট সালিশি প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়।
এই পরিস্থিতিতে, ইউনিটি ফোরাম ভবিষ্যতের ঘটনাবলীর দিকে নজর রেখেছে এবং সরকারি কর্মীদের ন্যায্য পাওনা আদায়ে তাঁরা বদ্ধপরিকর।