West Bengal DA: মহার্ঘ ভাতার আসল খরচ কত? তথ্য চেয়ে অর্থ দপ্তরে RTI দাখিল ইউনিটি ফোরামের

West Bengal DA: রাজ্য সরকারি কর্মী এবং পেনশনভোগীদের মহার্ঘ ভাতা (DA) নিয়ে রাজ্যের প্রকৃত খরচের চিত্র জানতে চেয়ে তথ্য জানার অধিকার আইনের (RTI) দ্বারস্থ হলেন ইউনিটি ফোরামের আহ্বায়ক পলাশ দত্ত। আজ, ২৬ জুন ২০২৫, তিনি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অর্থ দপ্তরে একটি আরটিআই আবেদন জমা দিয়েছেন। এই আবেদনের মূল লক্ষ্য হলো, চলতি বছরের এপ্রিল মাস থেকে কার্যকর হওয়া ডিএ সংক্রান্ত রাজ্য সরকারের সাম্প্রতিক বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা।
এই পদক্ষেপটি রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের ডিএ সংক্রান্ত বিতর্কের আবহে একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। পলাশ দত্তের এই আবেদনের ফলে মহার্ঘ ভাতা নিয়ে রাজ্য সরকারের আর্থিক দায়বদ্ধতা এবং স্বচ্ছতা সামনে আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।
RTI আবেদনে কী কী তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে?
দুর্গাপুরের বাসিন্দা তথা বাঁকুড়ার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক পলাশ দত্ত তাঁর আবেদনে মূলত পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলে ধরেছেন। অর্থ দপ্তরের ০৪.০৩.২০২৫ তারিখের মেমোর্যান্ডাম নং ১১৩৫-এফ(পি২)-এর ভিত্তিতে এই প্রশ্নগুলি করা হয়েছে, যা ১লা এপ্রিল ২০২৫ থেকে ডিএ কার্যকর করার কথা বলে।
জানতে চাওয়া তথ্যগুলি হলো:
- প্রাপকদের শ্রেণিবিভাগ: উক্ত সরকারি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, কোন কোন শ্রেণীর (যেমন: রাজ্য সরকারি কর্মী, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্মী, বিধিবদ্ধ সংস্থা, পঞ্চায়েত, পৌরসভা ইত্যাদি) মোট কতজন কর্মী বা পেনশনভোগী এই বর্ধিত মহার্ঘ ভাতার আওতায় এসেছেন? প্রতিটি বিভাগের প্রাপকের সংখ্যা আলাদাভাবে জানতে চাওয়া হয়েছে।
- মোট প্রাপকের সংখ্যা: সব বিভাগ মিলিয়ে এই মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধির ফলে মোট কতজন উপকৃত হচ্ছেন?
- বিভাগভিত্তিক খরচের পরিমাণ: প্রতিটি বিভাগের জন্য মহার্ঘ ভাতা দিতে সরকারের ঠিক কত টাকা খরচ হচ্ছে? টাকার অঙ্কে সেই হিসাব জানতে চাওয়া হয়েছে।
- বার্ষিক মোট খরচ: ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে মহার্ঘ ভাতা বাবদ রাজ্য সরকারের মোট আনুমানিক কত টাকা খরচ হবে?
- ডিএ নির্ধারণের ভিত্তি: সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হিসেবে জানতে চাওয়া হয়েছে, ঠিক কীসের ভিত্তিতে বা কোন পরিমাপকের উপর নির্ভর করে রাজ্য সরকার এই মহার্ঘ ভাতার হার নির্ধারণ করেছে?
এই RTI কেন এতটা গুরুত্বপূর্ণ?
কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘ ভাতার দাবিতে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের আন্দোলন বহুদিনের। রাজ্য সরকার বিভিন্ন সময়ে ডিএ ঘোষণা করলেও কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের ডিএ-এর হারের একটি বড় পার্থক্য রয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে, সরকারের প্রকৃত আর্থিক দায়ভার কত, তা স্পষ্ট নয়। এই RTI-এর উত্তর মিললে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি পরিষ্কার হবে:
- স্বচ্ছতা: ডিএ বাবদ রাজ্যের কোষাগার থেকে ঠিক কত টাকা খরচ হচ্ছে, তার একটি পরিষ্কার চিত্র পাওয়া যাবে।
- তথ্যভিত্তিক আলোচনা: আগামী দিনে ডিএ সংক্রান্ত যেকোনো আলোচনা বা দাবির ক্ষেত্রে এই তথ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।
- আর্থিক পরিকল্পনা: রাজ্য সরকার তার কর্মীদের জন্য কতটা আর্থিক ভার বহন করছে এবং ভবিষ্যতে আরও ডিএ বৃদ্ধির সুযোগ কতটা রয়েছে, তার একটি ধারণা পাওয়া যাবে।
তথ্য জানার অধিকার আইন, ২০০৫ অনুযায়ী, রাজ্য অর্থ দপ্তর আগামী ৩০ দিনের মধ্যে এই আবেদনটির উত্তর দিতে বাধ্য। পলাশ দত্তের এই উদ্যোগের ফলে রাজ্যের লক্ষ লক্ষ কর্মচারী এবং পেনশনভোগী এখন সরকারের উত্তরের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। এই তথ্য রাজ্যের আর্থিক অবস্থা এবং কর্মচারী কল্যাণের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার বিতর্ককে নিঃসন্দেহে এক নতুন পথে চালিত করবে।