Dearness Allowance

25% DA: “আমরা রাজ্যকে বুঝিয়ে দেব, সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার প্রয়োজন নেই” ডিএ মামলায় বিস্ফোরক মন্তব্য

25% DA: ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারী এবং রাজ্য সরকারের মধ্যেকার দীর্ঘদিনের টানাপোড়েন এক নতুন মোড় নিয়েছে। রাজ্য সরকারের কর্মীরা যখন তাদের ন্যায্য পাওনার জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন, তখন রাজ্য সরকার আইনি জটিলতার অজুহাত দেখিয়ে চলেছে। সম্প্রতি, Confederation of State Government Employees-এর সাধারণ সম্পাদক, মলয় মুখোপাধ্যায়, রাজ্য সরকারের এই অবস্থানের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, “আমরা রাজ্যকে বুঝিয়ে দেব, সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার প্রয়োজন নেই।”

মূল ঘটনা

মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট গত ১৬ মে যে রায় দিয়েছে তাতে উল্লেখ আছে যে, কলকাতা হাইকোর্ট বা স্যাটের পূর্ববর্তী রায় অনুযায়ী রাজ্য সরকারকে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা সংক্রান্ত মামলায় স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল (SAT) একটি স্পষ্ট রায় দিয়েছিল। কিন্তু রাজ্য সরকার সেই রায়কে বুঝতে পারছে না বলে অভিযোগ উঠেছে এবং পুনরায় সুপ্রিম কোর্টে স্পষ্টতার জন্য আবেদন করতে পারে। মলয় মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য অনুযায়ী, তারা ট্রাইব্যুনালের রায়ের কপি রাজ্যের মুখ্য সচিব এবং অর্থ সচিবের কাছে জমা দিয়েছেন। তাঁর বিশ্বাস, রাজ্য সরকার যদি আলোচনার জন্য তাদের ডাকত, তাহলে রাজ্যের সুবিধা অনুযায়ী কিভাবে ডিএ মেটানো সম্ভব, সেই বিষয়ে তারা একটি সুস্পষ্ট ধারণা দিতে পারত।

আলোচনার দরজা খোলা

কর্মচারী সংগঠনের নেতৃত্ব আলোচনার মাধ্যমে সমাধানসূত্র বের করতে যে ইচ্ছুক, তা মলয় মুখোপাধ্যায়ের কথায় স্পষ্ট। তিনি জানান, “আমরা রাজ্যকে বুঝিয়ে বলতে পারতাম। রাজ্যের সুবিধা মতোই কীভাবে টাকা দেওয়া যায়, তার পথ বাতলে দিতে পারতাম।” তাদের এই বক্তব্য থেকে পরিষ্কার যে, তারা শুধুমাত্র নিজেদের দাবি নিয়েই সরব নন, রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতির কথাও মাথায় রাখছেন।

  • কর্মচারীদের প্রস্তাব: কর্মরতদের ক্ষেত্রে প্রভিডেন্ট ফান্ডে টাকা জমা দেওয়া এবং অবসরপ্রাপ্তদের ক্ষেত্রে ১২টি মাসিক কিস্তিতে পেনশন-এর সাথে বকেয়া মেটানোর মতো বাস্তবসম্মত প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।
  • সরকারের গড়িমসি: কিন্তু রাজ্য সরকার সেই পথে না হেঁটে, বিষয়টি আরও জটিল করে তুলেছে এবং রায়ের ব্যাখ্যা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছে, যা আদতে সময় নষ্ট করার কৌশল বলেই মনে করছেন কর্মীরা।

সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়া নিয়ে প্রশ্ন

মলয় মুখোপাধ্যায়ের মতে, রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপ সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয়। তার উত্থাপিত প্রধান যুক্তিগুলি হলো:

  • ট্রাইব্যুনালের রায় স্পষ্ট: বিচারপতি রঞ্জিত কুমার বাগ এবং বিচারপতি সুবেশ দাসের বেঞ্চের দেওয়া রায় অত্যন্ত সুস্পষ্ট। কীভাবে বকেয়া মেটাতে হবে, তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা রায়েই রয়েছে।
  • সুপ্রিম কোর্টের অপ্রয়োজনীয়তা: ROPA রুলস অনুযায়ী ডিএ প্রদানের বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের অজানা নয়। তাই নতুন করে সেখানে যাওয়ার কোনো প্রয়োজন ছিল না।
  • কর্মচারীদের হতাশা: সরকারের এই মনোভাবে কর্মীরা হতাশ। আলোচনার মাধ্যমে যে সমস্যার সমাধান সম্ভব ছিল, সরকার একতরফাভাবে তা আইনি লড়াইয়ের দিকে ঠেলে দিয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

রাজ্যের এই একতরফা সিদ্ধান্তের ফলে একদিকে যেমন সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে, তেমনই রাজ্যের কোষাগারের ওপর আইনি লড়াইয়ের বাড়তি চাপ পড়ছে। এখন দেখার বিষয়, রাজ্য সরকার কি কর্মচারী সংগঠনগুলির সঙ্গে আলোচনায় বসে এই জট ছাড়াতে উদ্যোগী হবে, নাকি সুপ্রিম কোর্টের স্পষ্টতার জন্যই অপেক্ষা করবে। তবে এই ঘটনায় রাজ্য এবং তার কর্মীদের মধ্যেকার সম্পর্ক যে আরও একবার তিক্ত হলো, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।

WBPAY

The site wbpay.in is a collaborative platform voluntarily monitored by a dedicated group of reporters of West Bengal. The site features insightful posts and articles authored by experts in various fields, ensuring high-quality content that informs and engages the community. With a focus on transparency and public service, wbpay.in aims to provide valuable resources and updated news relevant to the citizens and employees of West Bengal. For any query please mail us at [email protected]

Related Articles

Back to top button