চাকরি

32000 Teacher Case: ৩২ হাজার চাকরি বাতিল মামলা, উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য, হাইকোর্টে দীর্ঘ সওয়াল-জবাব

32000 Teacher Case: কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল মামলার শুনানি অব্যাহত। বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। প্রায় দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা এই শুনানিতে মূলত ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষ, অর্থাৎ পার্শ্বশিক্ষক এবং অন্যান্য চাকরিহারাদের আইনজীবীরা তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।

পার্শ্বশিক্ষকদের বক্তব্য

মামলার শুনানিতে পার্শ্বশিক্ষকদের আইনজীবীরা জোরালো সওয়াল করেন। তাদের প্রধান যুক্তিগুলি হলো:

  • মূল মামলার অংশ নন: পার্শ্বশিক্ষকদের আইনজীবী জয়ন্ত মিত্র এবং সুবীর সান্যাল আদালতে জানান যে, যে মূল রিট পিটিশনের ভিত্তিতে চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সেই মামলায় পার্শ্বশিক্ষকরা পক্ষ ছিলেন না। তাই তাদের চাকরি বাতিল করা উচিত হয়নি।
  • নিয়োগের নিয়ম ভিন্ন: পার্শ্বশিক্ষকদের নিয়োগের নিয়ম এবং যোগ্যতা, বিশেষ করে অ্যাপটিটিউড টেস্টের ক্ষেত্রে, সাধারণ শিক্ষকদের থেকে ভিন্ন ছিল। তাদের ক্ষেত্রে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতাকে অ্যাপটিটিউড টেস্টের বিকল্প হিসেবে গণ্য করা হয়েছিল।
  • দুর্নীতির অভিযোগ ভিত্তিহীন: একক বেঞ্চের রায়ে যে ‘বিশাল দুর্নীতি’র কথা বলা হয়েছে, তা মূলত মিডিয়া রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে তৈরি এবং এটি সঠিক নয় বলে পার্শ্বশিক্ষকদের আইনজীবীরা দাবি করেন।
  • বর্তমান পরিচয়: পার্শ্বশিক্ষকরা এখন আর পার্শ্বশিক্ষক নন, তারা এখন প্রাথমিক শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত। তাই তাদের পুরনো পরিচয়ের ভিত্তিতে বিচার করা উচিত নয়।

অব্যাহতি প্রাপ্ত ক্যাটাগরির বক্তব্য

জমির বিনিময়ে চাকরি পাওয়া এবং স্বাধীনতা সংগ্রামীদের পরিবারের সদস্যদের মতো অব্যাহতি প্রাপ্ত ক্যাটাগরির আইনজীবীরাও আদালতে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।

  • দুর্নীতির সঙ্গে যোগ নেই: তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া সার্টিফিকেট জমা দেওয়ার মাধ্যমে হয়েছে এবং নিয়োগ প্রক্রিয়ার দুর্নীতি বা অনিয়মের অভিযোগের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই।
  • শূন্যপদের সংখ্যা: অ্যাপটিটিউড টেস্টে শূন্য পেলেও তাদের চাকরি যেত না, কারণ শূন্যপদের তুলনায় প্রার্থীর সংখ্যা অনেক কম ছিল। তাই কাট-অফের কোনো প্রশ্নই ওঠে না।

অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্তদের বক্তব্য

২৩৭ জন পিটিশনারের আইনজীবী অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন তোলেন যে, নিয়োগের পাঁচ বছর পর কীভাবে চাকরি বাতিল করা যায়, বিশেষ করে যখন পিটিশনাররা নির্বাচন প্রক্রিয়ার বিস্তারিত কিছুই জানতেন না।

৬৩৫ জন শিক্ষকের আইনজীবী প্রতীক ধর বলেন যে, একক বেঞ্চের রায়টি ত্রুটিপূর্ণ, কারণ তাদের ‘ অপ্রশিক্ষিত’ বলা হলেও তারা ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসের মধ্যেই তাদের ডি.এল.এড. কোর্স সম্পন্ন করেছিলেন, যা রিট পিটিশন দাখিল করার অনেক আগে।

আদালতের পর্যবেক্ষণ

শুনানি চলাকালীন বিচারপতি বিভিন্ন বিষয় স্পষ্ট করার জন্য প্রশ্ন করেন। পার্শ্বশিক্ষক এবং প্রাথমিক শিক্ষকদের মধ্যে পার্থক্য, বিভিন্ন ক্যাটাগরির জন্য অ্যাপটিটিউড টেস্টের প্রযোজ্যতা ইত্যাদি বিষয়ে তিনি জানতে চান।

এই মামলার পরবর্তী শুনানি ১৪ই জুলাই, ২০২৫-এ ধার্য করা হয়েছে।

WBPAY Team

আমাদের প্রতিবেদন গুলি WBPAY Team এর দ্বারা যাচাই করে লেখা হয়। আমরা একটি স্বাধীন প্ল্যাটফর্ম যা পাঠকদের জন্য স্পষ্ট এবং সঠিক খবর পৌঁছে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের লক্ষ্য এবং সাংবাদিকতার মান সম্পর্কে জানতে, অনুগ্রহ করে আমাদের About us এবং Editorial Policy পৃষ্ঠাগুলি পড়ুন।
Back to top button