Recruitment News

32000 Teacher Case: ২৬ হাজারের মতই কী ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক বাতিল মামলাতেও যোগ্য-অযোগ্য বিতর্ক? জানুন আসল ঘটনা

32000 Teacher Case: সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট ২০১৬ সালের SSC প্যানেলের প্রায় ২৬,০০০ চাকরি বাতিলের রায় বহাল রেখেছে। শীর্ষ আদালতের মতে, এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এতটাই দুর্নীতি হয়েছে যে যোগ্য ও অযোগ্যদের আলাদা করা কার্যত অসম্ভব। এই রায়ের পর থেকেই ৩২,০০০ প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিল মামলা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠছে। দুটি মামলার প্রেক্ষাপট কি এক? SSC-র মতো প্রাইমারি মামলাতেও কি যোগ্য-অযোগ্য বিতর্কের সূচনা হচ্ছে? দুটি মামলার মূল পার্থক্য এবং হাইকোর্টের যুক্তিগুলো জেনে নেওয়া যাক।

সুপ্রিম কোর্টের চোখে SSC-র ২৬,০০০ চাকরি বাতিলের কারণ

সুপ্রিম কোর্ট যে কারণে কলকাতা হাইকোর্টের ২৬,০০০ চাকরি বাতিলের রায়কে সমর্থন করেছে, তার ভিত্তি হলো সুস্পষ্ট এবং প্রমাণিত দুর্নীতি। বিষয়টি শুধু পদ্ধতিগত ভুল ছিল না, বরং এক কথায় এটি ছিল একটি “নিয়োগ দুর্নীতি” (recruitment scam)।

  • OMR শিট বিকৃতি: হাজার হাজার OMR শিট বা উত্তরপত্রে কারচুপি করা হয়েছিল।
  • র‍্যাঙ্ক জাম্পিং: কম নম্বর পাওয়া প্রার্থীদের র‍্যাঙ্ক বাড়িয়ে চাকরি দেওয়া হয়েছে।
  • প্যানেলের বাইরে নিয়োগ: অনেকেই প্যানেলে না থেকেও চাকরি পেয়েছেন।
  • তথ্য লোপাট: SSC কর্তৃপক্ষ নিজেরাই বহু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নষ্ট করেছে, যা দুর্নীতি প্রমাণে সহায়তা করত।

এই পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ অত্যন্ত স্পষ্ট: যখন দুর্নীতি সিস্টেমের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করে, তখন কে যোগ্য আর কে অযোগ্য, সেই তালিকা আলাদা করা অসম্ভব। তাই পুরো প্যানেল বাতিল করা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। এখানে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটিকেই একটি সংগঠিত অপরাধ হিসেবে দেখা হয়েছে।

প্রাইমারির ৩২,০০০ চাকরি বাতিলের বিতর্ক এবং হাইকোর্টের যুক্তি

অন্যদিকে, ৩২,০০০ প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিলের মামলাটির ভিত্তি কিন্তু SSC মামলার থেকে কিছুটা ভিন্ন। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের রায় এবং ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণে মূল যে বিষয়গুলো উঠে এসেছে, তা হলো নিয়োগ প্রক্রিয়ার পদ্ধতিগত ত্রুটি।

  • অ্যাপটিটিউড টেস্ট না হওয়া: শিক্ষক নিয়োগের নিয়ম অনুযায়ী, ইন্টারভিউয়ের পাশাপাশি প্রার্থীদের পড়ানোর দক্ষতা যাচাইয়ের জন্য একটি অ্যাপটিটিউড টেস্ট নেওয়া বাধ্যতামূলক। কিন্তু ৩২,০০০ নিয়োগের ক্ষেত্রে এই নিয়ম মানা হয়নি।
  • স্বচ্ছতার অভাব: ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ার কোনো ভিডিওগ্রাফি করা হয়নি, ফলে স্বচ্ছতা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠেছে। কাকে, কীসের ভিত্তিতে নম্বর দেওয়া হয়েছে, তার কোনো প্রমাণ নেই।

এখানেই বিতর্কটি দানা বেঁধেছে। চাকরিহারা শিক্ষকদের একাংশের যুক্তি, অ্যাপটিটিউড টেস্ট না হওয়াটা বোর্ডের একটি পদ্ধতিগত ভুল। এর জন্য সকল প্রার্থীকে “অযোগ্য” বলা যায় না। যারা TET পাশ করে এবং অ্যাকাডেমিক স্কোরে এগিয়ে থেকে চাকরি পেয়েছেন, তাদের দোষ কোথায়?

মূল পার্থক্য ও চলমান বিতর্ক

SSC এবং প্রাইমারি মামলার মূল পার্থক্যটা এখানেই।

বিষয়SSC ২৬,০০০ চাকরি বাতিল মামলাপ্রাইমারি ৩২,০০০ চাকরি বাতিল মামলা
অভিযোগের ধরণপ্রমাণিত দুর্নীতি এবং সংগঠিত অপরাধ (OMR Scam, Rank Jumping)গুরুতর পদ্ধতিগত ত্রুটি (No Aptitude Test, Lack of Transparency)
আদালতের দৃষ্টিভঙ্গিসম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটিকেই “Scam” হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।নিয়োগ প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
“যোগ্য-অযোগ্য” বিতর্কদুর্নীতির ব্যাপকতার কারণে এই বিতর্ককে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।এটাই মামলার সবচেয়ে বড় বিতর্কের বিষয় এবং এখনো বিচারাধীন।

প্রাইমারি মামলাটি এখনো চূড়ান্ত মীমাংসার অপেক্ষায়। আদালত খতিয়ে দেখছে যে, কেবল পদ্ধতিগত ভুলের কারণে এতগুলো চাকরি বাতিল করা যুক্তিসঙ্গত কি না এবং আদৌ যোগ্য ও অযোগ্যদের আলাদা করার কোনো রাস্তা আছে কি না।

সুতরাং, এককথায় বলা যায়, দুটি মামলার প্রেক্ষাপট এক নয়। SSC-র ক্ষেত্রে দুর্নীতির প্রমাণ এতটাই সুস্পষ্ট ছিল যে প্যানেল বাতিল করা ছাড়া উপায় ছিল না। কিন্তু প্রাইমারির ক্ষেত্রে লড়াইটা চলছে মূলত “পদ্ধতিগত ত্রুটি” বনাম “প্রকৃত যোগ্যতা”-র মধ্যে। এই আইনি লড়াইয়ের শেষেই পরিষ্কার হবে ৩২,০০০ শিক্ষকের ভবিষ্যৎ।

WBPAY

The site wbpay.in is a collaborative platform voluntarily monitored by a dedicated group of reporters of West Bengal. The site features insightful posts and articles authored by experts in various fields, ensuring high-quality content that informs and engages the community. With a focus on transparency and public service, wbpay.in aims to provide valuable resources and updated news relevant to the citizens and employees of West Bengal. For any query please mail us at [email protected]

Related Articles

Back to top button