Recruitment News

32000 Teacher Case: আজ ৩২ হাজার শিক্ষক মামলায় কী ঘটল? নিয়োগ দুর্নীতির গভীর সংকট

32000 Teacher Case: কলকাতা হাইকোর্টে ৩২,০০০ প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিলের মামলা নিয়ে আজ শুনানি অনুষ্ঠিত হল, যা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা ব্যবস্থায় এক নতুন সংকট তৈরি করেছে। এই মামলা শুধুমাত্র আইনি লড়াই নয়, বরং রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার গভীরে থাকা দুর্নীতি এবং অনিয়মের প্রতিচ্ছবিও বটে।

মামলার বর্তমান অবস্থা

কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি চলছে এবং পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে ১৮ই জুলাই। মামলাটি অত্যন্ত দীর্ঘ এবং জটিল আকার ধারণ করেছে, যেখানে বহু পিটিশন দাখিল হয়েছে এবং বিভিন্ন আইনজীবী তাদের যুক্তি উপস্থাপন করছেন। ৩২,০০০ শিক্ষকের আইনজীবীরা তাদের বক্তব্য জোরালোভাবে তুলে ধরেছেন, কিন্তু মামলার ভবিষ্যৎ এখনও অনিশ্চিত।

শুনানির মূল বিষয়

সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে, শিক্ষকদের পক্ষের সিনিয়র আইনজীবী প্রতীক ধর বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ যুক্তি উপস্থাপন করেছেন:

  • প্রশিক্ষিত ও অপ্রশিক্ষিত বিভাজন: আইনজীবী প্রতীক ধর “প্রশিক্ষিত” এবং “অপ্রশিক্ষিত” প্রার্থীদের মধ্যেকার বিভাজন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, ২০১৯ সালে যদি আবেদনকারীরা “প্রশিক্ষিত” হয়ে থাকেন, তবে “অপ্রশিক্ষিত” প্রার্থীদের চাকরি বাতিল করে “প্রশিক্ষিত” দের বহাল রাখার সিদ্ধান্তটি স্ববিরোধী।
  • অ্যাপটিটিউড টেস্ট এবং স্বাভাবিক ক্ষমতা: শুনানিতে বলা হয় যে, মূল্যায়নের দুটি অংশ ছিল – ভাইভা-ভোস (সাক্ষাৎকার) এবং অ্যাপটিটিউড, যা কার্যকরভাবে শিক্ষাদানের “স্বাভাবিক ক্ষমতা” বোঝায়। ৭০০ জন ইন্টারভিউয়ারের মধ্যে মাত্র কয়েকজনকে কেন ডাকা হয়েছিল এবং তাদের বয়ানে কেন অসঙ্গতি ছিল, সেই প্রশ্নও তোলা হয়েছে।
  • প্রমাণ আইনের লঙ্ঘন (ধারা ১৬৫বি): একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, শুধুমাত্র আবেদনকারীদের সাক্ষী হিসেবে ডাকা হয়েছে, কিন্তু শিক্ষকদের (বিবাদী পক্ষ) ডাকা হয়নি, যা প্রমাণ আইনের ১৬৫বি ধারার লঙ্ঘন বলে দাবি করা হয়েছে।
  • নম্বরের অসঙ্গতি: প্রায় ১২% প্রার্থী, যাদের অ্যাকাডেমিক রেকর্ড ভালো নয়, তারা ইন্টারভিউ এবং অ্যাপটিটিউড টেস্টে উচ্চ বা পূর্ণ নম্বর পেয়েছে। অন্যদিকে, ৮৮% অ্যাকাডেমিকভাবে ভালো প্রার্থীকে কেন বিবেচনা করা হয়নি, সেই প্রশ্নও উঠেছে।

দুর্নীতির অভিযোগ এবং বিচারপতির মন্তব্য

বিচারপতি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় “বিরাট দুর্নীতি, বিশাল কেলেঙ্কারি, বিপুল অর্থ লেনদেন” নিয়ে বারবার দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক এবং এসএসসি সহ বিভিন্ন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং এই কেলেঙ্কারি ও দুর্নীতি সম্পর্কে তথ্যের অভাব নিয়ে আক্ষেপ করেছেন।

বোর্ডের গোপনীয়তা

পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ২০১৬ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত সমস্ত নথি গোপন রাখার নির্দেশ দিয়েছে। পর্ষদের মতে, বিষয়টি “সাব-জুডিস” হওয়ায় প্রকাশ্যে আনা যাবে না। তবে বিরোধী দল এবং শিক্ষক সংগঠনগুলো এই গোপনীয়তার বিরোধিতা করে অভিযোগ করেছে যে, সরকার এবং পর্ষদ অযোগ্য ব্যক্তিদের রক্ষা করার চেষ্টা করছে।

এই মামলা পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়। ৩২,০০০ শিক্ষকের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা এখনও বলা কঠিন। তবে এই মামলার রায় রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

WBPAY

The site wbpay.in is a collaborative platform voluntarily monitored by a dedicated group of reporters of West Bengal. The site features insightful posts and articles authored by experts in various fields, ensuring high-quality content that informs and engages the community. With a focus on transparency and public service, wbpay.in aims to provide valuable resources and updated news relevant to the citizens and employees of West Bengal. For any query please mail us at [email protected]

Related Articles

Back to top button