Recruitment News

32000 Teacher Case: ৩২,০০০ প্রাথমিক শিক্ষক বাতিল মামলায় কী হল আজ, আইনজীবীর জোরালো সওয়ালে নতুন মোড়

32000 Teacher Case: কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে আজ ৩২,০০০ প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিল মামলার শুনানি হল। একক বেঞ্চের রায়ের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া এই মামলায় আপিলকারীদের পক্ষে জোরালো সওয়াল করছেন আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর যুক্তি এবং আইনি প্রশ্নগুলো মামলার ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে জল্পনা তৈরি করেছে। এই গুরুত্বপূর্ণ মামলাটি কেবল ৩২,০০০ পরিবারের জীবন-জীবিকার সঙ্গেই জড়িত নয়, বরং রাজ্যের বিচার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা এবং আইনি নীতির প্রয়োগের ক্ষেত্রেও একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চলেছে।

সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ে চাকরি হারানো শিক্ষকদের ভবিষ্যৎ এখন ডিভিশন বেঞ্চের রায়ের ওপর নির্ভরশীল। এই মামলার প্রতিটি শুনানি রাজ্যের হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থীর কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আইনজীবীর মূল যুক্তি এবং সওয়াল

ডিভিশন বেঞ্চে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় মূলত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আইনি প্রশ্ন তুলে ধরেছেন। তাঁর সওয়ালের মূল ভিত্তি ছিল Natural Justice নীতির লঙ্ঘন এবং বিচার প্রক্রিয়ার পদ্ধতিগত ত্রুটি। তাঁর উপস্থাপিত যুক্তিগুলি নিচে তুলে ধরা হলো:

  • শুনানি ছাড়াই চাকরি বাতিল: আইনজীবীর প্রধান যুক্তি হলো, যে ৩২,০০০ শিক্ষকের চাকরি বাতিল করা হয়েছে, তাঁদের কাউকেই মামলায় পক্ষভুক্ত করা হয়নি এবং তাঁদের বক্তব্য শোনার সুযোগ দেওয়া হয়নি। এটি স্বাভাবিক বিচারের পরিপন্থী। তাঁর মতে, “বিচার একতরফা ট্র্যাফিক হতে পারে না।”
  • আবেদনের বাইরে গিয়ে রায়: মূল আবেদনকারীরা তাঁদের আবেদনে সকলের চাকরি বাতিলের দাবি জানাননি। কিন্তু একক বেঞ্চের বিচারপতি সেই আবেদনের গণ্ডি পেরিয়ে একটি বৃহত্তর নির্দেশ দিয়েছেন, যা আইনিভাবে বৈধ নয় বলে আইনজীবী দাবি করেছেন।
  • প্রমাণের অভাব: আইনজীবী প্রশ্ন তুলেছেন যে, দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও, কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ বা সিবিআই রিপোর্ট আদালতে পেশ করা হয়নি যা থেকে প্রমাণ হয় যে এই ৩২,০০০ শিক্ষক দুর্নীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। শুধুমাত্র অনুমানের ভিত্তিতে এত বড় সংখ্যক চাকরি বাতিল করা যায় না।
  • দায়িত্ব কার: যদি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোনো ত্রুটি হয়েও থাকে, তার জন্য চাকরিপ্রার্থীরা দায়ী নন, বরং বোর্ড বা নিয়োগকারী সংস্থা দায়ী। আইনজীবী সুপ্রিম কোর্ট এবং বিভিন্ন হাইকোর্টের উদাহরণ টেনে এনে তাঁর যুক্তিকে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করেছেন।

বিচার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন

আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় একক বেঞ্চের বিচারপতির ভূমিকা এবং তাঁর নেওয়া পদ্ধতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, বিচারপতি আইনত অজানা একটি পদ্ধতি অনুসরণ করে এই রায় দিয়েছেন। তিনি বিভিন্ন আইনি উদাহরণ দিয়ে দেখান যে, যখনই কোনো নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে, সেখানে ক্ষতিগ্রস্তদের মামলায় পক্ষভুক্ত করা বাধ্যতামূলক। এক্ষেত্রে তা না হওয়ায় পুরো প্রক্রিয়াটিই ত্রুটিপূর্ণ বলে তিনি দাবি করেন।

শুনানির সময় ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি তব্রত চক্রবর্তী রাজনৈতিক মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে বলেন, যা থেকে বোঝা যায় যে আদালত শুধুমাত্র আইনি যুক্তির ওপরই মনোযোগ দিচ্ছে।

মামলার ভবিষ্যৎ এবং পরবর্তী পদক্ষেপ

এই মামলার শুনানি এখনো চলবে এবং পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে ১লা জুলাই। সেদিন বিরোধী পক্ষের আইনজীবীরা তাঁদের যুক্তি উপস্থাপন করবেন। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জোরালো সওয়ালের পর চাকরিহারা শিক্ষকদের মধ্যে নতুন করে আশার সঞ্চার হয়েছে। তাঁদের পক্ষের আইনজীবীদের মতে, ডিভিশন বেঞ্চ সমস্ত আইনি দিক খতিয়ে দেখছে এবং তাঁরা একটি ইতিবাচক রায়ের বিষয়ে আশাবাদী।

তবে চূড়ান্ত রায় না আসা পর্যন্ত ৩২,০০০ শিক্ষকের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। এই মামলা পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা ব্যবস্থা এবং নিয়োগ প্রক্রিয়ার ওপর একটি দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে। সকলের নজর এখন ডিভিশন বেঞ্চের চূড়ান্ত রায়ের দিকে।

WBPAY

The site wbpay.in is a collaborative platform voluntarily monitored by a dedicated group of reporters of West Bengal. The site features insightful posts and articles authored by experts in various fields, ensuring high-quality content that informs and engages the community. With a focus on transparency and public service, wbpay.in aims to provide valuable resources and updated news relevant to the citizens and employees of West Bengal. For any query please mail us at [email protected]

Related Articles

Back to top button