498A Supreme Court: ৪৯৮এ ধারার অপব্যবহার বন্ধ! স্বামীদের স্বস্তি দিয়ে কী জানাল সুপ্রিম কোর্ট?

498A Supreme Court: ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮এ ধারা, যা গার্হস্থ্য হিংসার বিরুদ্ধে মহিলাদের সুরক্ষা প্রদানের জন্য তৈরি, তার অপব্যবহার রোধে এক ঐতিহাসিক রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এই নতুন নির্দেশিকা স্বামীদের জন্য একটি বড় স্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, কারণ এটি আইনের অপব্যবহারের বিরুদ্ধে একপ্রকার সুরক্ষা কবচ হিসেবে কাজ করবে। আসুন, আমরা এই নতুন নির্দেশিকার খুঁটিনাটি বিষয়গুলি বিস্তারিতভাবে জেনে নিই।
সুপ্রিম কোর্টের নতুন নির্দেশিকা
সুপ্রিম কোর্টের এই যুগান্তকারী রায় ৪৯৮এ ধারার অপব্যবহার রোধে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। এখন থেকে, কোনো মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ আর তাৎক্ষণিকভাবে স্বামীকে গ্রেপ্তার করতে পারবে না। এই নির্দেশিকার প্রধান বিষয়গুলি হলো:
- তাৎক্ষণিক গ্রেপ্তার নয়: ৪৯৮এ ধারায় অভিযোগ দায়ের হলেই এখন আর পুলিশ স্বামীকে সঙ্গে সঙ্গে গ্রেপ্তার করতে পারবে না।
- দুই মাসের গ্রেস পিরিয়ড: এফআইআর দায়ের হওয়ার পর প্রথম দুই মাস পর্যন্ত পুলিশ কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে পারবে না।
- পারিবারিক কল্যাণ কমিটির ভূমিকা: প্রতিটি জেলায় একটি করে ‘পারিবারিক কল্যাণ কমিটি’ গঠন করতে হবে। ৪৯৮এ ধারার সমস্ত অভিযোগ প্রথমে এই কমিটির কাছে পাঠানো হবে।
- কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে তদন্ত: কমিটি অভিযোগ খতিয়ে দেখে একটি রিপোর্ট তৈরি করবে এবং সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই পুলিশ পরবর্তী তদন্ত ও পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবে।
এই নির্দেশিকা মূলত ২০২২ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্টের দেওয়া একটি গাইডলাইনকেই মান্যতা দিয়েছে। এই রায় বৈবাহিক সম্পর্কের জটিলতা এবং মিথ্যা অভিযোগের মতো সামাজিক সমস্যা মোকাবিলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
কোন মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এই রায়?
সুপ্রিম কোর্টের এই হস্তক্ষেপের পিছনে একটি নির্দিষ্ট মামলার ভূমিকা রয়েছে। এক মহিলা তার স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে ৪৯৮এ ধারায় ধর্ষণ ও খুনের চেষ্টার মতো ছ’টি গুরুতর ফৌজদারি মামলা দায়ের করেছিলেন। এই মামলার জেরে স্বামীকে ১০৯ দিন এবং শ্বশুরকে ১০৩ দিন জেল খাটতে হয়। পরবর্তীকালে, সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় সুপ্রিম কোর্ট সব মামলা খারিজ করে দেয়। শুধু তাই নয়, সংবিধানের ১৪২ নং অনুচ্ছেদ ব্যবহার করে আদালত সেই বিয়ে ভেঙে দেয় এবং জানায় যে স্বামী ও তার পরিবারের এই অপরিসীম দুর্ভোগের কোনো ক্ষতিপূরণ হতে পারে না।
ব্যতিক্রম
তবে, এই নির্দেশিকা সব ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। যদি অভিযোগ গুরুতর হয়, যেমন খুনের চেষ্টা, অথবা যেখানে সাজার মেয়াদ সাত বছরের বেশি, সেক্ষেত্রে এই নিয়ম কার্যকর হবে না। এর ফলে, প্রকৃত নির্যাতিতা মহিলারা আইনি সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত হবেন না।
এই নতুন নির্দেশিকা একদিকে যেমন মহিলাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করছে, তেমনই স্বামীদেরও মিথ্যা অভিযোগের হাত থেকে রক্ষা করবে, যা একটি সুস্থ সমাজ গঠনে সহায়ক হবে।