8th Pay Commission: ১ ডিসেম্বর বড় খবর? অষ্টম পে কমিশন ও ডিএ বেসিক পে-র সাথে মিশে যাওয়া নিয়ে সংসদে কী জানাবে কেন্দ্র?
8th Pay Commission: আগামী ১ ডিসেম্বর, ২০২৫, সোমবার লোকসভায় কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের সামনে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্থাপিত হতে চলেছে। অষ্টম কেন্দ্রীয় পে কমিশন গঠন এবং কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী ও পেনশনভোগীদের মহার্ঘ ভাতা (DA) বা ডিয়ারনেস রিলিফ (DR) মূল বেতনের (Basic Pay) সাথে মিশিয়ে দেওয়ার দীর্ঘদিনের দাবি নিয়ে সরকারের অবস্থান কী, তা স্পষ্ট করার জন্য এই দিনটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। সারা দেশের লক্ষ লক্ষ সরকারি কর্মচারী এবং অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা এই উত্তরের দিকে অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছেন।
লোকসভায় সাংসদ শ্রী আনন্দ ভাদৌরিয়া একটি লিখিত প্রশ্নের মাধ্যমে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের কাছে এই বিষয়গুলো জানতে চেয়েছেন। ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির চাপে জর্জরিত সরকারি কর্মীদের জন্য এই প্রশ্নগুলি অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।
সংসদে ঠিক কী জানতে চাওয়া হয়েছে?
সাংসদ আনন্দ ভাদৌরিয়া সরাসরি অর্থ মন্ত্রকের কাছে নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে স্পষ্টীকরণ চেয়েছেন। প্রশ্নগুলির মূল লক্ষ্য হলো পরবর্তী পে কমিশন গঠন এবং ডিএ মার্জারের মতো তাৎক্ষণিক স্বস্তির পদক্ষেপ সম্পর্কে সরকারের অফিসিয়াল পরিকল্পনা জানা। অর্থমন্ত্রীর কাছে যে নির্দিষ্ট বিষয়গুলির উত্তর চাওয়া হয়েছে সেগুলি হলো:
- (ক) অষ্টম পে কমিশনের বিজ্ঞপ্তি: সরকার সম্প্রতি অষ্টম কেন্দ্রীয় পে কমিশন গঠনের জন্য কোনো বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে কিনা।
- (খ) কমিশনের বিশদ বিবরণ: যদি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়ে থাকে, তবে প্রস্তাবিত কমিশনের গঠন এবং কার্যপরিধি (Terms of Reference) সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
- (গ) ডিএ মার্জারের প্রস্তাব: কর্মচারীদের বিদ্যমান মহার্ঘ ভাতা (DA) এবং পেনশনভোগীদের ডিয়ারনেস রিলিফ (DR) মূল বেতনের সাথে মিশিয়ে দেওয়ার কোনো প্রস্তাব সরকারের বিবেচনায় আছে কিনা। প্রশ্নে উল্লেখ করা হয়েছে যে, গত তিন দশকে বর্তমান ডিএ/ডিআর ব্যবস্থা “রিয়েল-টাইম রিটেল ইনফ্লেশন” বা খুচরা মুদ্রাস্ফীতির গতির সাথে তাল মেলাতে ব্যর্থ হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। তাই এটি একটি তাৎক্ষণিক স্বস্তির ব্যবস্থা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
- (ঘ) সময়সীমা: যদি ডিএ/ডিআর মার্জারের প্রস্তাব থাকে, তবে তা কার্যকর করার নির্দিষ্ট সময়সীমা এবং বিস্তারিত পরিকল্পনা কী।
- (ঙ) প্রত্যাখ্যানের কারণ: যদি সরকার এই ধরনের কোনো পদক্ষেপ নিতে না চায়, তবে তার কারণ কী।
পে কমিশন ও কর্মচারীদের দাবির প্রেক্ষাপট
এই সংসদীয় প্রশ্নটি এমন এক সময়ে এসেছে যখন কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী ইউনিয়নগুলো তাদের দাবি নিয়ে ক্রমশ সোচ্চার হচ্ছে। সপ্তম কেন্দ্রীয় পে কমিশনের সুপারিশগুলি ১ জানুয়ারি, ২০১৬ থেকে কার্যকর হয়েছিল। সাধারণত একটি পে কমিশনের মেয়াদ ১০ বছর হয়। সেই হিসেবে ২০২৬ সাল আসন্ন হওয়ায় পরবর্তী কমিশন গঠনের দাবি জোরালো হচ্ছে।
সবার আগে খবরের আপডেট পান!
টেলিগ্রামে যুক্ত হনএছাড়াও, কর্মচারী ইউনিয়নগুলির যুক্তি হলো যে, ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা যা মুদ্রাস্ফীতি মোকাবিলার জন্য পর্যায়ক্রমে সংশোধন করা হয়, তা একটি নির্দিষ্ট সীমা (সাধারণত ৫০%) অতিক্রম করেছে। ঐতিহাসিকভাবে, ২০০৪ সালে ষষ্ঠ পে কমিশন কার্যকর হওয়ার আগে শেষবার ডিএ মূল বেতনের সাথে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ইউনিয়নগুলির মতে, ৫০ শতাংশের গণ্ডি পার হলে ডিএ-কে বেসিক পে-র সাথে মার্জ করা উচিত।
এই মার্জার বা সংযুক্তিকরণ হলে কর্মচারীরা যে সুবিধাগুলি পাবেন:
- তাৎক্ষণিক বেতন বৃদ্ধি।
- উচ্চতর ইনক্রিমেন্ট বা বেতন বৃদ্ধি।
- অবসরকালীন সুবিধা বৃদ্ধি (কারণ এগুলি মূল বেতনের শতাংশ হিসেবে গণনা করা হয়)।
১ ডিসেম্বরের উত্তরের গুরুত্ব
আগামী ১ ডিসেম্বর অর্থ মন্ত্রকের এই উত্তরটি ১ কোটিরও বেশি কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী এবং পেনশনভোগীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সরকার এখনও পর্যন্ত এই দুটি বিষয়ে (পে কমিশন গঠন এবং ডিএ মার্জার) আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি বা নীরবতা পালন করেছে।
সংসদে দেওয়া এই লিখিত উত্তরটি ভবিষ্যতের আলোচনার পথ প্রশস্ত করতে পারে এবং কেন্দ্রীয় কোষাগারের ওপর এর প্রভাব কী হবে তা বোঝার জন্য এটি একটি নির্দেশক হিসেবে কাজ করবে। তাই ১ ডিসেম্বর অর্থমন্ত্রীর উত্তরের দিকেই এখন সবার নজর।