Primary Teacher: ৩২,০০০ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ মামলা, শুনানিতে যা ঘটল

Primary Teacher: কলকাতা হাইকোর্টে সম্প্রতি ৩২,০০০ প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিল সংক্রান্ত মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই মামলাটি ২০১৬ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত, যেখানে একাধিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। আসুন, এই মামলার মূল বিষয়গুলি এবং শুনানির গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
মামলার প্রেক্ষাপট ও অভিযোগ
এই মামলার সূত্রপাত হয় ১৪০ জন অপ্রশিক্ষিত প্রার্থীর একটি আবেদনের মাধ্যমে। তাঁদের অভিযোগ ছিল যে, ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতা ছিল, মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়নি এবং কম নম্বর পাওয়া প্রার্থীরা চাকরি পেয়েছেন। পরবর্তীকালে, এই মামলাটি বৃহত্তর দুর্নীতির তদন্তে মোড় নেয়।
প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের যুক্তি
শুনানিতে পর্ষদের আইনজীবী জানান যে, আবেদনকারীরা প্রথমে অপ্রশিক্ষিত প্রার্থী হিসেবে মামলা করলেও, পরে তাঁদের মামলাকে অন্যায্যভাবে দুর্নীতির অভিযোগের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। পর্ষদের আরও দাবি, একক বেঞ্চ সাক্ষ্য আইনের ১৬৫ ধারা প্রয়োগ করেছে, যা সাধারণত বিচারবিভাগীয় আদালতের কাজ। আদালত আবেদনকারীদের অভিযোগের উপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং পর্যাপ্ত প্রমাণের অভাব ছিল বলেও পর্ষদ মনে করে। এছাড়াও, একক বেঞ্চের পদ্ধতিগত ত্রুটি, যেমন সাক্ষীদের তলব করার প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে পর্ষদ।
আদালতের পর্যবেক্ষণ
বিচারপতি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আপাতভাবে দুর্নীতি হয়েছে বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন। পর্ষদ যখন পদ্ধতিগত বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলছে, তখন আদালত দুর্নীতির বিষয়টিকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। আদালত আরও উল্লেখ করেছে যে, বিশেষ পরিস্থিতিতে, প্রাথমিক আবেদনের বাইরে গিয়েও আদালত বিষয়গুলির বিচার করতে পারে।
মূল বিতর্কিত বিষয়
- অ্যাপটিটিউড পরীক্ষা সঠিকভাবে নেওয়া হয়েছিল কিনা।
- আবেদনকারীদের জমা দেওয়া একটি স্পাইরাল বাইন্ডিং করা নথির উপর নির্ভরতা।
- দুর্নীতি এবং সংরক্ষণ নীতি লঙ্ঘনের অভিযোগ।
- একক বেঞ্চের অনুসরণ করা পদ্ধতি, বিশেষত সাক্ষ্য আইনের ব্যবহার এবং ইন্টারভিউয়ারদের পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়।
বর্তমান পরিস্থিতি ও পরবর্তী পদক্ষেপ
পর্ষদের যুক্তি এখনও পেশ করা হচ্ছে এবং একক বেঞ্চের পদ্ধতিগত অনিয়মের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। আদালত আপীলকারী, আবেদনকারী এবং অন্যান্য আবেদন জমা দেওয়া ব্যক্তিদের বক্তব্য শোনার জন্য পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে। এই মামলায় পর্ষদের একটি এবং ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষকদের ৪৩টি মিলিয়ে মোট ৪৪টি আপীল জমা পড়েছে। এছাড়াও, অসফল প্রার্থীরাও একাধিক আবেদন জমা দিয়েছেন।
এই মামলার রায় রাজ্যের বহু প্রাথমিক শিক্ষকের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে এবং নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলেছে। পরবর্তী শুনানির দিকে সকলের নজর থাকবে।