SSC 2016 চাকরিহারাদের আন্দোলন, হাইকোর্টের নির্দেশে থানায় দুই শিক্ষক নেতার হাজিরা ঘিরে চাঞ্চল্য

কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে বৃহস্পতিবার বিধাননগর উত্তর থানায় হাজিরা দিলেন SSC 2016 চাকরিহারা দুই শিক্ষক নেতা, ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল এবং গ্রুপ ডি স্টাফ সুদীপ কোঙার। বিকাশ ভবনের সামনে ঘটে যাওয়া আগের সপ্তাহের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁদের এই হাজিরা। পুলিশ সূত্রে খবর, এই দুই নেতাকে বিধাননগর কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকরা জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।
গত বৃহস্পতিবার বিকাশ ভবনের সামনে চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভ চলাকালীন ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়। সরকারি কর্মীদের বাধা দেওয়া, মারধর এবং সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করার মতো একাধিক অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই ঘটনায় প্রায় ১৫টি ধারায় মামলা রুজু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের এবং কোনও উস্কানিদাতা ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখছে।
এদিন থানায় ঢোকার আগে ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল এবং সুদীপ কোঙারের পরিচয়পত্র এবং পুলিশের পাঠানো নোটিশ খতিয়ে দেখা হয়। তাঁদের সঙ্গে আইনজীবীরাও ছিলেন। আন্দোলনকারী এক সহকর্মী, যিনি নেতাদের সঙ্গে এসেছিলেন, তিনি অভিযোগ করেন যে সরকার ভুয়ো মামলা দিয়ে তাঁদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। তিনি আরও বলেন, ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল আগের দিনের ঘটনায় তাঁকে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যেতে এসেছিলেন এবং কোনও ভাঙচুর বা অবরোধে জড়িত ছিলেন না।
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন যে তাঁরা তাঁদের চাকরির দাবিতে দীর্ঘ দিন ধরে অনশন ও পথ অবরোধের মতো বিভিন্ন উপায়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। তাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন এবং প্রশ্ন তুলেছেন কেন ওএমআর শিটের কপি দেওয়া হচ্ছে না বা যোগ্য ও অযোগ্য প্রার্থীদের তালিকা পর্যালোচনা করে যোগ্যদের চাকরি বাঁচানোর চেষ্টা করা হচ্ছে না। তাঁদের মতে, এই সব পদক্ষেপ আসলে তাঁদের ভয় দেখানোর কৌশল।
পুলিশি তদন্ত এবং নোটিশ সত্ত্বেও আন্দোলনকারীরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে চাকরি ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত তাঁরা তাঁদের আন্দোলন থেকে পিছু হটবেন না। তাঁরা জানিয়েছেন, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়েই তাঁরা থানায় হাজিরা দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীকে অবিলম্বে ওএমআর কপি প্রকাশ করে এবং সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে যোগ্য প্রার্থীদের চাকরি বাঁচানোর জন্য ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা। দাবি পূরণ না হলে তাঁদের আন্দোলন নবান্নের দিকে চালিত হবে বলেও তাঁরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
অন্যদিকে, পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে গত বৃহস্পতিবার বিক্ষোভকারীরা তাঁদের উপর চড়াও হয়েছিল। যদিও আন্দোলনকারীদের পাল্টা অভিযোগ, পুলিশই তাঁদের মারধর করেছে এবং এই নোটিশ আসলে তাঁদের ভয় দেখানোর একটি কৌশল। তবে তাঁরা তাঁদের আন্দোলনে অবিচল থাকবেন বলে জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, এর আগের দিন সন্ধ্যায় আরও চারজন চাকরিপ্রার্থী, যাঁরা শিক্ষক, তাঁরাও থানায় হাজিরা দিয়েছিলেন। এই ঘটনায় রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে এবং চাকরিপ্রার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ আরও বাড়ছে।