হাইকোর্টে ফের SSC মামলা: ২০১০-এর নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতার অভিযোগ

SSC: কলকাতা হাইকোর্টে ২০১০ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। মামলাকারী, একজন পরীক্ষার্থী, তাঁর উত্তরপত্র (ওএমআর শিট) তথ্যের অধিকার আইনে (আরটিআই) পাওয়ার পর প্রায় ১০টি প্রশ্নের মূল্যায়নে অসঙ্গতি খুঁজে পেয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। এই মামলাটি কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে বিচারাধীন।
মামলার প্রধান বিচার্য বিষয় হলো, নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার এবং প্যানেলের মেয়াদ শেষ হওয়ার অনেক পরে এই অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্যানেল ২০১২ সালেই শেষ হয়ে গেছে বলে জানা গেছে। মামলাকারী দেরির কারণ হিসেবে মানসিক অবসাদকে উল্লেখ করেছেন।
আদালতে মামলাকারীর আইনজীবী জানান যে, যেহেতু মূল্যায়নে ত্রুটি বা জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে, Limitation Act, 1963 এর আওতায় এই বিলম্ব মার্জনীয় হওয়া উচিত। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, মোট ৭১ জন প্রার্থীকে পার্সোনালিটি টেস্টের জন্য ডাকা হয়েছিল এবং তাঁদের মূল্যায়নেও গরমিল থাকতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
অন্যদিকে, এসএসসি-র আইনজীবী সওয়াল করেন যে, আইন অনুযায়ী, একবার নিয়োগ প্যানেলের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেলে এবং সেই প্যানেল থেকে প্রার্থীরা নিযুক্ত হয়ে গেলে, সেই প্যানেলকে চ্যালেঞ্জ করা যায় না। কারণ, এর ফলে ইতিমধ্যে নিযুক্তদের স্থিতিশীলতা নষ্ট হতে পারে। তিনি সুপ্রিম কোর্টের একাধিক রায় উল্লেখ করে বলেন যে, মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যানেল চ্যালেঞ্জযোগ্য নয়। মামলাকারীকে প্যানেলের বৈধতা থাকাকালীন এই অভিযোগ নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হওয়া উচিত ছিল বলে তিনি মনে করেন।
আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনেছে। মামলাকারী নাগরিক হিসেবে ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকারী হলেও, তা আইনানুগ পথেই হওয়া উচিত বলে আদালত মন্তব্য করেছে। এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এখনও কোনও চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করা হয়নি। তবে, এই মামলাটি রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা এবং নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে অভিযোগ জানানোর গুরুত্বকে আরও একবার সামনে নিয়ে এসেছে। মূল্যায়নে ভুল বা জালিয়াতির অভিযোগ যদি সত্যি প্রমাণিত হয়, তাহলে বহু বছর পরেও তার বিচার পাওয়া সম্ভব কিনা, সেই প্রশ্নও এই মামলার মাধ্যমে উঠছে। পরবর্তী শুনানিতে আদালত এই বিষয়ে কী নির্দেশ দেয়, সেদিকেই সকলের নজর থাকবে।