চাকরি

SSC-র নতুন নিয়োগ বিধি নিয়ে আবার মামলা, দুর্নীতির অভিযোগে সরব চাকরিপ্রার্থীরা

SSC: পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) ২০২৫ সালের নতুন নিয়োগ নীতি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলা দায়ের হল। ২০১৬ সালের ওয়েটিং লিস্টে থাকা একদল চাকরিপ্রার্থী এই মামলা করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, নতুন এই নিয়ম সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকার পরিপন্থী এবং পুরনো দুর্নীতিগ্রস্ত প্রক্রিয়াকে আড়াল করার একটি প্রচেষ্টা মাত্র। আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য এই বিষয়ে জানিয়েছেন যে, রাজ্য সরকারের স্বচ্ছভাবে নিয়োগ করার কোনও সদিচ্ছা নেই এবং এই নতুন নিয়ম দুর্নীতির পথ প্রশস্ত করবে।

নতুন নিয়মের মূল বিতর্কিত বিষয়গুলি:

  • একাডেমিক স্কোরের গুরুত্ব হ্রাস: নতুন নিয়মে লিখিত পরীক্ষার নম্বর বাড়িয়ে (যেমন ৬০ নম্বর) এবং অ্যাকাডেমিক যোগ্যতার নম্বর কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে প্রার্থীদের মেধা মূল্যায়নে স্বচ্ছতার অভাব দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
  • শিক্ষাগত অভিজ্ঞতার জন্য নম্বর: শিক্ষাগত অভিজ্ঞতার জন্য ১০ নম্বর ধার্য করা হয়েছে, যা নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অনেকের মতে, এটি পুরনোদের বাড়তি সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার একটি কৌশল।
  • রেট্রোস্পেকটিভ প্রয়োগ: মামলাকারীদের আইনজীবী জানিয়েছেন যে, ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়া এমনিতেই দুর্নীতিগ্রস্ত ছিল। তাই সেই নিয়োগের ক্ষেত্রে নতুন নিয়ম কার্যকর না করে ২০১৬ সালের নিয়ম মেনেই প্যানেল পুনর্গঠন করা উচিত। নতুন নিয়মগুলির মাধ্যমে পুরনো অনিয়মকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।
  • মার্কস বিতরণে অসঙ্গতি: অ্যাকাডেমিক যোগ্যতার নম্বর কমানো, ইন্টারভিউয়ের নম্বর বাড়ানো এবং অভিজ্ঞতার জন্য নম্বর যুক্ত করার ফলে সম্পূর্ণ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতা ও ম্যানিপুলেশনের সুযোগ রয়েছে বলে মনে করছেন মামলাকারীরা।
  • বয়স ছাড়ের ক্ষেত্রে বঞ্চনা: নতুন নিয়মে একাধিক পরীক্ষার জন্য যোগ্য হলেও শুধুমাত্র একটি পরীক্ষার ক্ষেত্রেই বয়স ছাড়ের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে, যা চাকরিপ্রার্থীদের প্রতি অবিচার বলে মনে করা হচ্ছে।
  Teachers Job: সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর চাকরি ফিরছে শিক্ষকদের! যাচাই প্রক্রিয়া শুরু

এই মামলার শুনানি আগামী ৫ই জুন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। চাকরিপ্রার্থীরা আশা করছেন যে, আদালত তাঁদের বক্তব্য শুনবে এবং একটি স্বচ্ছ ও যুক্তিসঙ্গত নিয়োগ প্রক্রিয়ার নির্দেশ দেবে। ২০১৬ সালের দুর্নীতিতে যারা যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও চাকরি পাননি, তাঁদের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া এবং অযোগ্যদের সরিয়ে দেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন তাঁরা। এই নতুন নিয়োগ নীতি রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় আরও একবার বিতর্কের ঝড় তুলেছে এবং সকলের নজর এখন আদালতের রায়ের দিকে।

WBPAY Team

আমাদের প্রতিবেদন গুলি WBPAY Team এর দ্বারা যাচাই করে লেখা হয়। আমরা একটি স্বাধীন প্ল্যাটফর্ম যা পাঠকদের জন্য স্পষ্ট এবং সঠিক খবর পৌঁছে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের লক্ষ্য এবং সাংবাদিকতার মান সম্পর্কে জানতে, অনুগ্রহ করে আমাদের About us এবং Editorial Policy পৃষ্ঠাগুলি পড়ুন।
Back to top button