Arrear DA: ২৭ জুনের মধ্যে ডিএ না দিলে নবান্ন অভিযানের হুঁশিয়ারি সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের

Arrear DA: রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) নিয়ে আবারও উত্তপ্ত পশ্চিমবঙ্গ। সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তী নির্দেশের পরেও রাজ্য সরকারের মনোভাব নিয়ে সন্দিহান কর্মচারী সংগঠনগুলি। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ হুঁশিয়ারি দিয়েছে, শীর্ষ আদালতের নির্দেশ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মানা না হলে তারা আবারও বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটবে, যার মধ্যে নবান্ন অভিযানও রয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক নির্দেশ
সম্প্রতি, গত ১৬ই মে, ২০২৫, সুপ্রিম কোর্ট পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে একটি ঐতিহাসিক অন্তর্বর্তী নির্দেশ দেয়। বিচারপতি সঞ্জয় করোল এবং বিচারপতি সন্দীপ মেহতার বেঞ্চ রাজ্যকে তার কর্মচারীদের ২০০৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বকেয়া মহার্ঘ ভাতার ২৫ শতাংশ ৬ সপ্তাহের মধ্যে পরিশোধ করার নির্দেশ দিয়েছে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগস্ট মাসে ধার্য করা হয়েছে। এই নির্দেশে প্রায় ১০ লক্ষ কর্মচারী উপকৃত হবেন বলে মনে করা হচ্ছে এবং এর জন্য রাজ্যকে প্রায় ১১,০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করতে হবে।
উল্লেখ্য, কলকাতা হাইকোর্ট ২০২২ সালের মে মাসে ডিএ-কে সরকারি কর্মচারীদের “আইনত বলবৎযোগ্য অধিকার” হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছিল এবং কেন্দ্রীয় হারে বকেয়া মেটানোর নির্দেশ দিয়েছিল। রাজ্য সরকার সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে।
কেন এই আন্দোলন?
রাজ্য সরকারি কর্মচারী এবং কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে ডিএ-র ফারাক বর্তমানে ৩৭ শতাংশ। যেখানে কেন্দ্রীয় কর্মচারীরা ৫৫ শতাংশ হারে ডিএ পান, সেখানে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কর্মচারীরা সম্প্রতি ৪ শতাংশ বৃদ্ধির পরেও মাত্র ১৮ শতাংশ ডিএ পাচ্ছেন। এই বিপুল বৈষম্যই রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের ক্ষোভ ও আন্দোলনের মূল কারণ।
সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের কড়া অবস্থান
সুপ্রিম কোর্টের রায়কে স্বাগত জানালেও, রাজ্য সরকারের উপর পুরোপুরি ভরসা রাখতে পারছে না সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ, যেমনটি ভিডিও ফুটেজেও বলা হয়েছে, জানিয়েছেন যে তারা আদালতের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন। তাঁর কথায়, “যদি সরকার শীর্ষ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে, তাহলে আমরা আইনি পদক্ষেপের পাশাপাশি রাজপথে নেমে সরকারকে চাপে ফেলার চেষ্টা করব।” তিনি আরও বলেন, “যেহেতু সমস্ত সিদ্ধান্ত নবান্ন থেকে নেওয়া হয়, তাই আমাদের আন্দোলনও নবান্ন কেন্দ্রিক হবে।”
এর পাশাপাশি, সমস্ত সরকারি দপ্তরে একটি স্বচ্ছ বদলি নীতিরও দাবি জানিয়েছে মঞ্চ, যাতে আন্দোলনকারী কর্মচারীদের প্রতিহিংসামূলক বদলির শিকার হতে না হয়। সব মিলিয়ে, ডিএ নিয়ে রাজ্য-রাজ্য সরকারি কর্মচারী সংঘাত এক নতুন মোড়ে দাঁড়িয়ে, যার ভবিষ্যৎ আগস্ট মাসে সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী শুনানির ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল।