SSC Case News: ঘরে বসে টাকা? এবার হাইকোর্টে কড়া প্রশ্নের মুখে গ্রুপ সি ও ডি কর্মীদের ভাতা, শুনানির বিবরণ দেখুন

SSC Case News: কলকাতা হাইকোর্টে গ্রুপ সি ও ডি চাকরিহারা কর্মীদের বিশেষ ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে দায়ের হওয়া মামলার শুনানি শেষ হলেও রায়দান স্থগিত রাখা হয়েছে। বিচারপতি অমৃতা সিনহা রাজ্য সরকারের এই ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্তের স্বচ্ছতা নিয়ে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলেছেন, যার ফলে রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপ এখন আদালতের গভীর পর্যবেক্ষণে। এই ভাতা প্রকল্প, যার নাম “পশ্চিমবঙ্গ জীবিকা ও সামাজিক সুরক্ষা অন্তর্বর্তীকালীন প্রকল্প, ২০২৫” (West Bengal Livelihood and Social Security Interim Scheme, 2025), তা নিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন করে আইনি জটিলতা।
হাইকোর্টের শুনানি এবং বিচারপতির প্রশ্নমালা
সাম্প্রতিক শুনানিতে বিচারপতি সিনহা রাজ্য সরকারের আইনজীবীর কাছে একাধিক বিষয়ে স্পষ্ট উত্তর চেয়েছেন। আদালত মূলত জানতে চেয়েছে, কোন যুক্তিতে এবং কোন পদ্ধতিতে এই আর্থিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
আদালতের তোলা প্রধান প্রশ্নগুলি হলো:
- ভাতার পরিমাণ নির্ধারণ: গ্রুপ সি কর্মীদের জন্য মাসিক ₹২৫,০০০ এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের জন্য ₹২০,০০০ টাকা ভাতার পরিমাণ কিসের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হলো?
- সুবিধাভোগীর সংখ্যা: ঠিক কতজন চাকরিহারা কর্মী এই প্রকল্পের আওতায় আসতে চলেছেন?
- পূর্ববর্তী উদাহরণ: অতীতে এই ধরনের আর্থিক সহায়তা দেওয়ার কোনো নজির কি রয়েছে?
- বিকল্প কর্মসংস্থান: ভাতা প্রদানের পাশাপাশি রাজ্য কি এই কর্মীদের জন্য কোনো বিকল্প কাজের ব্যবস্থা করার কথা ভেবেছে? বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, “ওনারা কি বাড়িতে বসে টাকা পাবেন?”
- সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রভাব: সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন পর্যালোচনার রায় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে গেলে, এই ভাতা কি বন্ধ করা হবে, নাকি তা চলতেই থাকবে?
রাজ্য সরকারের ভাতা প্রকল্প: এক নজরে
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি হারানো গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীদের মানবিকতার খাতিরে এবং অন্তর্বর্তীকালীন সুরাহা হিসেবে এই প্রকল্প চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। প্রকল্পটি ১লা এপ্রিল, ২০২৫ থেকে কার্যকর করা হয়েছে।
- প্রকল্পের নাম: পশ্চিমবঙ্গ জীবিকা ও সামাজিক সুরক্ষা অন্তর্বর্তীকালীন প্রকল্প, ২০২৫।
- উদ্দেশ্য: আদালতের রায়ের কারণে চাকরিহারা নন-টিচিং স্টাফদের দুর্দশাগ্রস্ত পরিবারকে সাময়িক আর্থিক সহায়তা ও সামাজিক সুরক্ষা প্রদান করা।
- আর্থিক সহায়তা: যোগ্য গ্রুপ সি কর্মীর পরিবার প্রতি মাসে ₹২৫,০০০ এবং গ্রুপ ডি কর্মীর পরিবার প্রতি মাসে ₹২০,০০০ টাকা পাবে।
- যোগ্যতা: কেবল ২০১৬ সালের নির্বাচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিযুক্ত কর্মীরাই, যারা আদালতের রায়ের কারণে চাকরি হারিয়েছেন, তারা এই সুবিধার জন্য আবেদন করতে পারবেন। কোনো প্রকার শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে চাকরিচ্যুত কর্মীরা এর যোগ্য হবেন না।
আদালতে রাজ্যের জবাব
রাজ্যের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, অতীতেও বিভিন্ন সময়ে, যেমন দুর্গাপূজার সময়, এই ধরনের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। সরকারের মতে, এটি একটি বিশেষ তহবিল থেকে প্রদান করা হচ্ছে এবং এর উদ্দেশ্য সম্পূর্ণ মানবিক। তবে রাজ্য সরকারের এই যুক্তি বিচারপতিকে পুরোপুরি সন্তুষ্ট করতে পারেনি, যার ফলে মামলার রায় স্থগিত রাখা হয়েছে। এখন দেখার বিষয়, আদালত এই ভাতা প্রকল্প নিয়ে চূড়ান্তভাবে কী নির্দেশ দেয়।