New Form 16: বদলে গেল ফর্ম ১৬, আয়কর জমা দেওয়ার আগে জেনে নিন নতুন নিয়ম, নাহলে সমস্যায় পড়বেন

New Form 16: আয়কর জমা দেওয়ার সময় এসে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন অফিস ফর্ম ১৬ দেওয়া শুরু করেছে। এই ফর্ম ১৬ হাতে পাওয়ার পরেই আয়কর জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। প্রত্যেক বেতনভুক করদাতার জন্য ফর্ম ১৬ অত্যন্ত জরুরি একটি নথি। এর মাধ্যমে নিয়োগকারী সংস্থা কর্মীর বেতন থেকে উৎসে কর বা টিডিএস কেটে সরকারি কোষাগারে জমা করে। এই ফর্ম ১৬-তেই আপনার বেতন, বিভিন্ন ছাড় এবং কর কাঠামো সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য দেওয়া থাকে। চলতি আর্থিক বছরে ফর্ম ১৬-এ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে, যা প্রত্যেক করদাতার জেনে রাখা প্রয়োজন। আসুন, এই পরিবর্তনগুলি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
ফর্ম ১৬-এ নতুন কী পরিবর্তন এল?
আয়কর বিভাগ করদাতাদের সুবিধার জন্য ফর্ম ১৬-কে আরও তথ্যবহুল এবং বিস্তারিত করেছে। নতুন এই ফর্মটিতে বেশ কিছু নতুন তথ্য যুক্ত করা হয়েছে, যা আগে ছিল না। এর ফলে আয়কর রিটার্ন ফাইল করা আরও সহজ হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
১. অন্যান্য আয়ের বিস্তারিত বিবরণ
আগে কর্মচারীরা তাঁদের বেতন ছাড়া অন্যান্য আয়ের কথা নিয়োগকারীকে জানাতে পারতেন, কিন্তু সেই অতিরিক্ত আয়ের উপর টিডিএস কাটার কোনও ব্যবস্থা ছিল না। নতুন নিয়মে, আপনার যদি অন্য কোনও উৎস থেকে আয় থাকে, যেমন বাড়ি ভাড়া, ব্যাঙ্ক বা পোস্ট অফিসের সুদ, বা অন্য কিছু, তবে সেই তথ্য এখন ফর্ম ১৬-তে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ থাকবে। এর ফলে, আপনার মোট আয়ের উপর সঠিক কর গণনা করা সহজ হবে এবং কর ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা কমবে।
২. নতুন এবং পুরনো কর কাঠামোর স্পষ্ট বিভাজন
আয়কর জমা দেওয়ার জন্য বর্তমানে দুটি কর কাঠামো রয়েছে – নতুন এবং পুরনো। অনেক করদাতাই এই দুটি কাঠামোর মধ্যে কোনটি তাঁদের জন্য সুবিধাজনক, তা নিয়ে বিভ্রান্তিতে ভোগেন। এই বিভ্রান্তি দূর করার জন্য নতুন ফর্ম ১৬-তে দুটি কর কাঠামোর মধ্যে পার্থক্যগুলি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা থাকবে। কোন কাঠামোতে কী কী ছাড় পাওয়া যাবে এবং কোনটিতে কী কী সুবিধা নেই, তা পরিষ্কারভাবে বলা থাকবে। এর ফলে করদাতারা সহজেই নিজেদের জন্য সঠিক কর কাঠামো বেছে নিতে পারবেন।
৩. জাতীয় পেনশন প্রকল্পে (NPS) অবদানের বিবরণ
বেতনভুক কর্মচারীদের মধ্যে অনেকেই জাতীয় পেনশন প্রকল্পে (NPS) বিনিয়োগ করেন। নতুন ফর্ম ১৬-তে আপনার এনপিএস অ্যাকাউন্টে আপনার এবং আপনার নিয়োগকর্তার অবদানের বিস্তারিত বিবরণ থাকবে। এর ফলে আপনি সহজেই আয়কর আইনের ৮০সি এবং ৮০ডি ধারার অধীনে কর ছাড়ের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
৪. গৃহঋণের উপর কর ছাড়ের নতুন নিয়ম
আপনি যদি গৃহঋণ নিয়ে থাকেন, তবে তার উপর আয়কর ছাড় পেতে পারেন। নতুন নিয়মে, যদি আপনি পুরনো কর কাঠামো বেছে নেন, তবেই আপনি গৃহঋণের সুদের উপর ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ছাড় পাবেন। নতুন কর কাঠামোতে এই সুবিধা পাওয়া যাবে না। সুতরাং, আপনার যদি গৃহঋণ থাকে, তবে ভেবেচিন্তে কর কাঠামো বেছে নিন।
ফর্ম ১৬-এর দুটি অংশ
ফর্ম ১৬ মূলত দুটি অংশে বিভক্ত – পার্ট এ এবং পার্ট বি।
- পার্ট এ: এই অংশে আপনার এবং আপনার নিয়োগকর্তার প্যান নম্বর, টিডিএস জমার বিবরণ ইত্যাদি থাকে।
- পার্ট বি: এই অংশে আপনার বেতনের বিস্তারিত বিভাজন, বিভিন্ন ভাতা, এবং ৮০সি ও ৮০ডি ধারার অধীনে প্রাপ্ত ছাড়ের বিবরণ থাকে।
ফর্ম ১৬ হাতে পাওয়ার পরে সব তথ্য খুঁটিয়ে দেখে নিন। যদি কোনও গরমিল চোখে পড়ে, তবে অবিলম্বে আপনার নিয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করুন। সঠিক তথ্য-সহ ফর্ম ১৬ আপনার আয়কর রিটার্ন ফাইল করার প্রক্রিয়াকে অনেক সহজ করে তুলবে এবং আপনাকে অহেতুক আইনি ঝামেলা থেকে বাঁচাবে।