32000 Teacher Case: আজ ৩২,০০০ শিক্ষক নিয়োগ মামলার শুনানি, আজই কি চূড়ান্ত রায়?

32000 Teacher Case: ৩২,০০০ প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিল মামলাটি এক নতুন মোড় নিয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি চলছে এবং সকলের নজর এখন আদালতের রায়ের দিকে। ২০১৭ সালে নিযুক্ত এই শিক্ষকদের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা নিয়েই চলছে বিস্তারিত আলোচনা।
মামলার বর্তমান অবস্থা
MAT নম্বর ৮৭৩/২০২৩ হিসাবে পরিচিত এই মামলাটি বিচারপতি তপ্তব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রত কুমার মৈত্রীর ডিভিশন বেঞ্চে বিচারাধীন। পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ এই মামলার প্রধান আবেদনকারী এবং প্রিয়াঙ্কা নস্কর সহ অন্যান্যরা প্রতিপক্ষ। এই মামলার সাথে আরও ৭৮টি CAN ফাইল যুক্ত আছে, যা মামলার গুরুত্ব বাড়িয়ে তুলেছে।
আদালতে উপস্থাপিত যুক্তি
গত তিন দিন ধরে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের পক্ষে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত জোরালো সওয়াল করেছেন। তার প্রধান যুক্তিগুলি হলো:
- আবেদনের সাথে রায়ের অসামঞ্জস্য: অ্যাডভোকেট জেনারেলের মতে, চাকরিপ্রার্থীরা চাকরির জন্য আবেদন করেছিলেন, কিন্তু সিঙ্গল বেঞ্চ চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেয়, যা মূল আবেদনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
- দুর্নীতির প্রমাণের অভাব: নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও, তা প্রমাণিত হয়নি বলে তিনি দাবি করেন।
- সাক্ষ্য আইনের প্রয়োগ: ইন্টারভিউয়ারদের সাক্ষ্য গ্রহণ প্রক্রিয়া নিয়েও তিনি প্রশ্ন তুলেছেন এবং ভারতীয় সাক্ষ্য আইনের ১৬৫ নম্বর ধারার সঠিক প্রয়োগ হয়েছে কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
- প্যানেল প্রকাশ: পর্ষদের দাবি, নিয়ম মেনেই DPSC অফিসে প্যানেল প্রকাশিত হয়েছিল এবং আদালতের নির্দেশে ২০২২ সালে তা অনলাইনেও দেওয়া হয়।
শিক্ষকদের পক্ষের বক্তব্য
আজ, অর্থাৎ ২৩শে জুন, মামলায় নিযুক্ত শিক্ষকদের পক্ষের আইনজীবীরা তাদের বক্তব্য পেশ করছেন। প্রবীণ আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১৭ সালে নিযুক্ত শিক্ষকদের হয়ে সওয়াল করছেন। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়, কারণ এই প্রথমবার শিক্ষকরা তাদের বক্তব্য বিস্তারিতভাবে তুলে ধরার সুযোগ পাচ্ছেন। এর আগে সিঙ্গল বেঞ্চ বা ডিভিশন বেঞ্চের প্রাথমিক শুনানিতে তারা পক্ষভুক্ত ছিলেন না।
সম্ভাব্য রায় ও ভবিষ্যৎ
আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, আজই চূড়ান্ত রায় আসার সম্ভাবনা কম। শিক্ষকদের পক্ষের একাধিক আইনজীবী তাদের যুক্তি উপস্থাপন করবেন, যার জন্য আরও সময় লাগতে পারে। এরপর বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবীরা তাদের বক্তব্য পেশ করবেন।
আদালত একটি নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে রায় দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে মনে করা হচ্ছে। এমন একটি সমাধান খোঁজা হচ্ছে যেখানে যোগ্য ও বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীরা নিয়োগ পেতে পারেন এবং একই সাথে ৩২,০০০ শিক্ষকের চাকরিও সুরক্ষিত থাকে। সুপ্রিম কোর্ট আপাতত ইন্টারভিউ এবং অ্যাপটিটিউড টেস্ট প্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ দিয়েছে এবং বাকি শুনানির জন্য মামলাটি কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে ফেরত পাঠিয়েছে।
এই মামলার রায় পশ্চিমবঙ্গের হাজার হাজার শিক্ষক এবং চাকরিপ্রার্থীর ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে। সকলের আশা, আদালত একটি নিরপেক্ষ এবং মানবিক রায় দেবে যা সব পক্ষের জন্য মঙ্গলজনক হবে। পরবর্তী আপডেটের জন্য আমাদের সাথে থাকুন।