32000 Primary Teacher: ৩২০০০ শিক্ষক মামলায় ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ কী? অর্ডার কপির বিস্তারিত বিশ্লেষণ

32000 Primary Teacher: ৩২০০০ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশের দিকে তাকিয়ে ছিল পশ্চিমবঙ্গ। বিচারপতিদের সওয়াল-জবাব এবং আইনজীবীদের যুক্তির পর, আদালত এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে। এই অর্ডারে চূড়ান্ত রায় না থাকলেও, বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশ উঠে এসেছে, যা মামলার ভবিষ্যৎ গতিপথ নির্ধারণ করতে পারে। চলুন, এই নির্দেশের মূল বিষয়গুলি বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
আদালতের মূল নির্দেশাবলী
সিঙ্গেল বেঞ্চের চাকরি বাতিলের রায়ের উপর ডিভিশন বেঞ্চের স্থগিতাদেশ এখনো বহাল রয়েছে। সাম্প্রতিক শুনানি শেষে, আদালত কোনো চূড়ান্ত রায় দেয়নি, বরং কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের কাছে স্বচ্ছতা দাবি করেছে। অর্ডার কপির সারসংক্ষেপ এবং সওয়াল জবাব অনুযায়ী, আদালতের মূল নির্দেশ ও পর্যবেক্ষণগুলি নিম্নরূপ:
- অ্যাপটিটিউড টেস্টের প্রমাণ: আদালত জানতে চেয়েছে, ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অ্যাপটিটিউড টেস্ট ঠিক কীভাবে নেওয়া হয়েছিল। এই পরীক্ষার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিচারপতিরা পর্ষদের কাছে এর প্রমাণ দাখিল করার কথা বলেছেন।
- তৃতীয় পক্ষের ভূমিকা: OMR শিট মূল্যায়ন এবং ফলপ্রকাশের জন্য তৃতীয় একটি সংস্থাকে (থার্ড পার্টি) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। আদালত এই তৃতীয় পক্ষের ভূমিকা, তাদের যোগ্যতা এবং তথ্য সুরক্ষার বিষয়টি নিয়ে পর্ষদের কাছে স্পষ্ট ব্যাখ্যা চেয়েছে।
- দুর্নীতির প্রমাণ: পর্ষদের আইনজীবীরা দাবি করেছেন যে, টাকার বিনিময়ে চাকরি পাওয়ার কোনো প্রমাণ এখনো সামনে আসেনি। এর উত্তরে আদালত জানিয়েছে, দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণ করার দায়িত্ব আবেদনকারীদের। একইসাথে, CBI-কেও তাদের চার্জশিটে উল্লিখিত তথ্যের স্বপক্ষে নথি পেশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
- শুনানি চলবে: আদালত জানিয়েছে যে, এই মামলার শুনানি এখনো চলবে। কোনো পক্ষকে চূড়ান্ত রায় না দিয়ে, সব পক্ষের যুক্তি শোনার উপরই জোর দেওয়া হয়েছে।
কেন এই প্রশ্নগুলি গুরুত্বপূর্ণ?
আদালতের এই প্রশ্নগুলি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এর মাধ্যমে ডিভিশন বেঞ্চ নিয়োগ প্রক্রিয়ার একেবারে গোড়ায় গিয়ে স্বচ্ছতার অভাব এবং সম্ভাব্য অনিয়মগুলি খতিয়ে দেখতে চাইছে। অ্যাপটিটিউড টেস্ট এবং OMR মূল্যায়নের মতো বিষয়গুলি যদি নিয়ম মেনে না হয়ে থাকে, তবে পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়ার আইনি বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন উঠবে। পর্ষদ যদি এই বিষয়গুলিতে আদালতকে সন্তুষ্ট করতে না পারে, তবে চাকরিহারা শিক্ষকদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়তে পারে।
মামলার বর্তমান স্থিতি ও পরবর্তী পদক্ষেপ
আপাতত, ৩২,০০০ শিক্ষকের চাকরি বাতিলের উপর স্থগিতাদেশ বজায় থাকছে। অর্থাৎ, পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত তারা কর্মরত থাকবেন।
এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১লা জুলাই, ২০২৫ তারিখে ধার্য করা হয়েছে। সেদিন পর্ষদ এবং অন্যান্য পক্ষগুলি আদালতের তোলা প্রশ্নগুলির জবাব দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। সমগ্র রাজ্যের শিক্ষক ও চাকরিপ্রার্থীরা এখন তাকিয়ে আছেন সেই দিনের শুনানির দিকে, যার উপর ৩২,০০০ পরিবারের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে।