6th Pay Commission Report: ষষ্ঠ বেতন কমিশনের রিপোর্ট কি এডিটেড? জানুন আইনজীবীর চাঞ্চল্যকর দাবি

6th Pay Commission Report: কলকাতা হাইকোর্টের ঐতিহাসিক রায়ের পর প্রকাশ্যে এসেছে ষষ্ঠ বেতন কমিশনের বহু প্রতীক্ষিত সুপারিশ। আইনজীবী প্রবীর চ্যাটার্জীর মতে, এই সুপারিশের ফলে ডিএ (Dearness Allowance) মামলা এক নতুন মোড় নিতে চলেছে। আসুন, এই মামলার খুঁটিনাটি জেনে নেওয়া যাক।
মামলার প্রেক্ষাপট
এই মামলার শুরুটা হয় যখন ইউনিটি ফোরামের পক্ষ থেকে দেবপ্রসাদ বাবু তথ্য জানার অধিকার আইনের (RTI) অধীনে ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশের কপি চান, কিন্তু তাকে তা দেওয়া হয়নি। এরপর তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন এবং বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে এই মামলার শুনানি হয়। আদালত রাজ্য সরকারকে অবিলম্বে কমিশনের সুপারিশ তাদের ওয়েবসাইটে আপলোড করার নির্দেশ দেয়।
সরকারি গড়িমসি এবং আদালতের হস্তক্ষেপ
প্রথমদিকে, রাজ্য সরকার ওয়েবসাইটে যে নথি আপলোড করে, তাতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পৃষ্ঠা অনুপস্থিত ছিল। বিশেষভাবে, ১০১ এবং ১৪২ নম্বর পৃষ্ঠা দুটি পাওয়া যাচ্ছিল না। এছাড়াও, ১৩.৫ এবং ১৩.৬ পয়েন্ট, যেখানে বিভিন্ন ভাতার কথা উল্লেখ ছিল, সেগুলিও অনুপস্থিত ছিল। রাজ্য সরকার প্রথমে এই নথি জনসমক্ষে আনা যাবে না বলে দাবি করলেও, আদালতের নির্দেশের পর তা আপলোড করতে বাধ্য হয়, যা থেকে তাদের ভয় স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
বিচারপতি অমৃতা সিনহা অনুপস্থিত পৃষ্ঠাগুলি অবিলম্বে সরবরাহ করার নির্দেশ দেন। এরপর ১০১ নম্বর পৃষ্ঠাটি দেওয়া হলেও, ১৪২ নম্বর পৃষ্ঠাটি এখনও পাওয়া যায়নি। আদালত সরকারকে এক সপ্তাহের মধ্যে অনুপস্থিত পৃষ্ঠার প্রিন্টআউট দেওয়ার বা ওয়েবসাইটে আপলোড করার নির্দেশ দিয়েছে।
ডিএ মামলার উপর প্রভাব
আইনজীবী প্রবীর চ্যাটার্জীর মতে, ৮০০ পৃষ্ঠার এই সুপারিশ ডিএ মামলার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। তিনি মনে করেন যে এই নথিতে এমন কিছু ‘ভ্রান্তি’ থাকতে পারে যা রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ মামলার দাবিকে আরও শক্তিশালী করবে। সরকারের এই নথি প্রকাশে অনিচ্ছা থেকে অনুমান করা যায় যে এতে এমন কিছু তথ্য থাকতে পারে যা তাদের বিপক্ষে যেতে পারে।
নথির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন
অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন যে সরকার ওয়েবসাইটে আপলোড করার আগে নথিটি সম্পাদনা (edit) করে থাকতে পারে। বিচারপতি অমৃতা সিনহা জানিয়েছেন যে যদি এই ধরনের কোনো ‘ভ্রান্তি’ বা সম্পাদনার প্রমাণ পাওয়া যায়, তবে মামলাকারীরা নতুন করে রিট পিটিশন দাখিল করতে পারবেন। প্রবীর বাবু জানিয়েছেন যে নথিতে কোনো কারচুপির প্রমাণ পেলে তিনি তা সুপ্রিম কোর্টে পেশ করবেন।
ইউনিটি ফোরামের ভূমিকা
প্রবীর বাবু ইউনিটি ফোরামের, বিশেষ করে দেবপ্রসাদ হালদারের, ভূমিকার প্রশংসা করেছেন। তাদের আইনি লড়াইয়ের ফলেই এই সুপারিশ প্রকাশ্যে এসেছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে শুধুমাত্র তাদের আইনি প্রচেষ্টার ফলেই এই নথি প্রকাশ করা হয়েছে।
আইনি লড়াইয়ের গুরুত্ব
প্রবীর বাবু আবারও আইনি লড়াইয়ের গুরুত্বের কথা তুলে ধরেছেন। আদালতের নির্দেশেই সরকার এই নথি প্রকাশ করতে বাধ্য হয়েছে, যা আইনি লড়াইয়ের কার্যকারিতাকে প্রমাণ করে। তিনি শেষে বলেন যে আদালতের নির্দেশই সর্বোচ্চ এবং অন্য যেকোনো প্রতিবাদের চেয়ে অনেক বেশি ফলপ্রসূ হতে পারে।