WBHS: ছোট দোকান থেকে ওষুধ কিনলেও টাকা ফেরত পাবেন, হেল্থ স্কিমের নতুন নিয়ম

WBHS Reimbursement Rules: পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য প্রকল্পের (WBHS) অধীনে থাকা লক্ষ লক্ষ সরকারি কর্মচারী, পেনশনভোগী এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং স্বস্তিদায়ক খবর। রাজ্য সরকার ওষুধের বিল জমা দিয়ে টাকা ফেরত (Reimbursement) পাওয়ার নিয়মে একটি বড়সড় পরিবর্তন এনেছে। পশ্চিমবঙ্গ অর্থ দপ্তরের মেডিক্যাল সেল দ্বারা ৩০শে জুন, ২০২৫ তারিখে জারি করা একটি স্মারকলিপি অনুসারে, এখন থেকে ছোট বা স্থানীয় দোকান থেকে কেনা ওষুধের বিলও টাকা ফেরতের জন্য গ্রাহ্য হবে, যা আগে অনেক সময় বাতিল হয়ে যেত। এই নতুন নিয়ম রাজ্যের, বিশেষ করে গ্রামীণ ও আধা-শহুরে এলাকার মানুষের জন্য এক বিরাট স্বস্তি নিয়ে এসেছে।
আগের নিয়ম কী ছিল এবং সমস্যা কোথায়?
আগে, পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য প্রকল্পের অধীনে বহির্বিভাগের চিকিৎসার (OPD) জন্য কেনা ওষুধের খরচ ফেরত পেতে হলে, একটি নির্দিষ্ট ধরনের বিল জমা দিতে হতো। নিয়ম অনুযায়ী, সেই বিলটি অবশ্যই একটি জিএসটি-নথিভুক্ত দোকান থেকে নেওয়া ‘ট্যাক্স ইনভয়েস’ (Tax Invoice) হতে হতো এবং তাতে CGST ও SGST করের পরিমাণ আলাদাভাবে দেখানো বাধ্যতামূলক ছিল।
কিন্তু এখানেই সমস্যা দেখা দিচ্ছিল। বহু ছোট ও মাঝারি দোকানদার, বিশেষ করে যারা প্রত্যন্ত অঞ্চলে ব্যবসা করেন, তারা জিএসটি কম্পোজিশন স্কিমের (GST Composition Scheme) অধীনে নথিভুক্ত। এই স্কিমের নিয়ম অনুসারে, তারা ক্রেতাদের কাছ থেকে জিএসটি সংগ্রহ করতে পারে না এবং তাই তাদের পক্ষে CGST/SGST ভাগ করে দেখানো ট্যাক্স ইনভয়েস দেওয়া সম্ভব নয়। তারা এর পরিবর্তে একটি ‘বিল অফ সাপ্লাই’ (Bill of Supply) প্রদান করে। ফলস্বরূপ, স্বাস্থ্য প্রকল্পের বহু উপভোক্তা সঠিক উপায়ে ওষুধ কিনেও শুধুমাত্র এই ধরনের বিল জমা দেওয়ার কারণে টাকা ফেরত পাচ্ছিলেন না। তাদের জেনুইন আবেদনও বাতিল হয়ে যাচ্ছিল।
রাজ্য সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত কী?
এই সমস্যা সমাধানের জন্য এবং সাধারণ মানুষকে হয়রানির হাত থেকে বাঁচাতে রাজ্য সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নতুন বিজ্ঞপ্তি অনুসারে:
- সহজ হলো বিল জমার নিয়ম: যদি জিএসটি কম্পোজিশন স্কিমের অধীনে থাকা কোনও ফার্মেসি থেকে ওষুধ কেনা হয়, তাহলে সেই বিলে CGST এবং SGST-এর আলাদা উল্লেখ থাকার আর প্রয়োজন নেই।
- ‘বিল অফ সাপ্লাই’ এখন গ্রাহ্য: এই ধরনের দোকান থেকে পাওয়া ‘বিল অফ সাপ্লাই’ রিইমবার্সমেন্টের জন্য একটি বৈধ নথি হিসাবে গণ্য হবে।
- অবিলম্বে কার্যকর: এই নতুন নিয়ম ৩০শে জুন, ২০২৫ তারিখ থেকে অবিলম্বে কার্যকর হয়েছে।
আপনার কী করণীয়?
রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপে আপনার কাজ এখন অনেক সহজ হয়ে গেল।
- দুশ্চিন্তামুক্ত কেনাকাটা: এখন আপনি আপনার বাড়ির কাছের ছোট বা স্থানীয় ফার্মেসি, যারা জিএসটি কম্পোজিশন স্কিমে নথিভুক্ত, সেখান থেকে নিশ্চিন্তে ওষুধ কিনতে পারেন। বিল বাতিল হওয়ার ভয় থাকবে না।
- সঠিক বিল সংগ্রহ করুন: ওষুধ কেনার সময় দোকান থেকে অবশ্যই ‘বিল অফ সাপ্লাই’ সংগ্রহ করুন। বিলটি যেন জিএসটি-নথিভুক্ত (কম্পোজিশন স্কিম) বিক্রেতার হয়, তা নিশ্চিত করুন।
- সময়মতো আবেদন: সমস্ত বিল যত্ন করে গুছিয়ে রাখুন এবং সময়মতো আপনার রিইমবার্সমেন্টের আবেদন জমা দিন।
এই নতুন নিয়ম নিঃসন্দেহে পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য প্রকল্পের প্রক্রিয়াকে আরও সরল ও জনমুখী করে তুলল। এর ফলে রাজ্যের হাজার হাজার মানুষ, যারা এতদিন ছোট দোকান থেকে ওষুধ কেনার পর টাকা ফেরত পাওয়া নিয়ে চিন্তায় থাকতেন, তারা সরাসরি উপকৃত হবেন।