SSC Recruitment Case: “অযোগ্যদের” হয়ে সওয়াল কেন? এসএসসিকে তীব্র ভর্ৎসনা হাইকোর্টের

SSC Recruitment Case: স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে ফের একবার কড়া সমালোচনার ঝড় উঠল। বিচারপতি সৌমেন সেনের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ “চিহ্নিত অযোগ্য” প্রার্থীদের হয়ে সওয়াল করার জন্য কমিশনের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এই মামলাটি রাজ্যের শিক্ষা ক্ষেত্রে নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা এবং আইনি বৈধতা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।
আদালতের কড়া প্রশ্নবাণ
এদিন মামলার শুনানিতে বিচারপতি সেন বারংবার প্রশ্ন করেন যে, এসএসসি-র আদৌ কোনও আইনি অধিকার বা এক্তিয়ার আছে কিনা এই “অযোগ্য” হিসেবে চিহ্নিত প্রার্থীদের হয়ে কথা বলার। তিনি জানতে চান, এই প্রার্থীরা নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারলে বা না পারলে কমিশনের কী এসে যায়? আদালতের এই প্রশ্নবাণে কার্যত কোণঠাসা হয়ে পড়ে কমিশন। ডিভিশন বেঞ্চের এই কঠোর মনোভাব বুঝিয়ে দেয় যে, তারা এই বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখছে এবং কোনও রকম অস্বচ্ছতা বরদাস্ত করা হবে না।
এসএসসি-র যুক্তি ও পাল্টা সওয়াল
কমিশনের পক্ষ থেকে সওয়াল করা হয় যে, যদি চিহ্নিত অযোগ্য প্রার্থীরা নতুন নিয়োগে অংশ নিতে না পারে, তবে ২০১৬ সালের প্রক্রিয়ার অসফল প্রার্থীদেরও সেই সুযোগ দেওয়া উচিত নয়। তাদের দাবি, সুপ্রিম কোর্ট বা কলকাতা হাইকোর্ট কেউই এই অযোগ্য প্রার্থীদের নতুন নিয়োগে অংশগ্রহণে স্পষ্টভাবে বাধা দেয়নি।
তবে, হাইকোর্ট কমিশনের এই যুক্তি খারিজ করে পাল্টা প্রশ্ন তোলে। আদালত জানতে চায়, একটি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অসফল হওয়ার অর্থ কি এই যে, একজন প্রার্থী ভবিষ্যতে আর কোনও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন না? এই ধরনের যুক্তি কি স্বৈরাচারী নয়? আদালত আরও প্রশ্ন করে, কমিশনের এই যুক্তির অর্থ কি এই যে, সুপ্রিম কোর্ট দ্বারা চিহ্নিত দুর্নীতিগ্রস্ত এবং প্রতারক ব্যক্তিদেরও নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত?
কমিশনের আত্মপক্ষ সমর্থন ও মামলার ভবিষ্যৎ
কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, রাজ্য সরকার এবং কমিশন রাজ্যের মানুষের স্বার্থে এই ধরনের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রাখে। তবে, এই যুক্তি আদালতে কতটা গ্রহণযোগ্য হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এর আগেও একক বেঞ্চের কাছে কমিশনকে এই অযোগ্য প্রার্থীদের পক্ষ নেওয়ার জন্য সমালোচনার শিকার হতে হয়েছিল। এখন ডিভিশন বেঞ্চের কঠোর মনোভাব কমিশনের উপর চাপ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
এই মামলার রায়ের উপর রাজ্যের হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থীর ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। সকলের নজর এখন কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে। এই মামলাটি রাজ্যের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় একটি নতুন দিশা দেখাতে পারে এবং ভবিষ্যতে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।