32000 Teacher Case: ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের অর্ডার কপিতে কী লেখা আছে দেখুন, নতুন শুনানির দিন কবে?

32000 Teacher Case: কলকাতা হাইকোর্টে ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিলের মামলা এক নতুন মোড়ে এসে দাঁড়িয়েছে। বিচারপতি অমৃতা সিনহার রায়কে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের হওয়া এই মামলার শুনানি চলছে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে। ৭ই জুলাই, ২০২৫-এ মামলার শুনানি ছিল এবং পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে ১৪ই জুলাই, ২০২৫, দুপুর ২টোয়। আসুন, আমরা এই মামলার গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো বিস্তারিতভাবে জেনে নিই।
মামলার বর্তমান পরিস্থিতি
এই মামলাটি, যার ম্যাট নম্বর ৮৭৩/২০২৩, শুধুমাত্র একটি মামলা নয়, এর সাথে জড়িয়ে আছে ৮২টি ভিন্ন ভিন্ন আবেদন। চাকরি হারানো শিক্ষকদের পাশাপাশি প্যারা-টিচার এবং অন্যান্য সংরক্ষিত শ্রেণীর প্রার্থীরাও এই মামলায় পক্ষ নিয়েছেন। মূল মামলাটি হল পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ বনাম প্রিয়াঙ্কা নস্কর।
গত শুনানিতে, চাকরি হারানো প্রার্থীদের আইনজীবীরা তাদের বক্তব্য পেশ করেছেন। বিভিন্ন পক্ষের আইনজীবীরা নিজ নিজ যুক্তি তুলে ধরেছেন, যা এই মামলার জটিলতাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
বিভিন্ন পক্ষের যুক্তি
- প্যারা-শিক্ষকদের যুক্তি: প্যারা-শিক্ষকদের আইনজীবী, শ্রী জয়ন্ত মিত্র, বলেন যে ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়া অনুযায়ী তাদের জন্য অ্যাপটিটিউড টেস্ট বাধ্যতামূলক ছিল না। তিনি আরও বলেন যে, শূন্যপদের তুলনায় প্রার্থীর সংখ্যা কম হওয়ায়, অ্যাপটিটিউড টেস্টে শূন্য পেলেও তাদের নিয়োগ পাওয়ার কথা।
- মামলার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন: আইনজীবী শ্রী অশোক ব্যানার্জী মামলার বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন এবং আবেদনটি খারিজ করার আর্জি জানান।
- সংরক্ষিত শ্রেণীর যুক্তি: জমির বিনিময়ে চাকরি প্রার্থী বা ‘land loser’ ক্যাটাগরির আইনজীবী, শ্রী সপ্তাংশু বসু, বলেন যে তাদের ক্ষেত্রেও প্রার্থীর চেয়ে শূন্যপদ বেশি ছিল, তাই সকলেরই চাকরি পাওয়ার কথা।
- NIOS D.El.Ed ডিগ্রির বৈধতা: আইনজীবী শ্রী প্রতীক ধর NIOS D.El.Ed ডিগ্রিধারীদের পক্ষে সওয়াল করেন। তিনি বলেন যে, ২০১৯ সালের এপ্রিলের মধ্যে প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ায় প্রার্থীরা ‘প্রশিক্ষিত’ হিসেবে গণ্য হবেন। তাই ২০২৩ সালে তাদের ‘অপ্রশিক্ষিত’ বলাটা অযৌক্তিক।
বিচারপতির পর্যবেক্ষণ এবং পরবর্তী পদক্ষেপ
শুনানি চলাকালীন বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী সব পক্ষের বক্তব্য শোনেন এবং পরবর্তী শুনানির জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দেন।
- আবেদনকারীদের প্রস্তুতির নির্দেশ: সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো, বিচারপতি মূল মামলাকারী, অর্থাৎ চাকরিপ্রার্থী আবেদনকারীদের, পরবর্তী শুনানির দিন তাদের যুক্তি উপস্থাপনের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছেন। এই প্রথমবার ডিভিশন বেঞ্চে তাদের বক্তব্য শোনা হবে।
- ভারসাম্যপূর্ণ শুনানি: বিচারপতি একটি ভারসাম্যপূর্ণ শুনানির উপর জোর দিয়েছেন, যেখানে আবেদনকারীদের বক্তব্য শোনার পরেই চাকরি হারানো পক্ষ তাদের জবাব দেওয়ার সুযোগ পাবে।
এই মামলার পরবর্তী শুনানি, ১৪ই জুলাই, ২০২৫, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। ওই দিনই হয়তো ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের ভাগ্য নির্ধারণের পথে একটি দিশা পাওয়া যাবে। সকলের নজর এখন কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দিকে।