WB Health Scheme: শিক্ষকরাও কি আসবেন হেল্থ স্কিমের আওতায়? ৫ লক্ষ টাকার ক্যাশলেস চিকিৎসার দাবি রাজ্য সরকারি কর্মীদের

WB Health Scheme: কনফেডারেশন অফ স্টেট গভঃ এমপ্লয়িজ়, পশ্চিমবঙ্গ-এর পক্ষ থেকে রাজ্যের অর্থ সচিবকে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে, যেখানে রাজ্য সরকারি কর্মীদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দাবিদাওয়া তুলে ধরা হয়েছে। এই চিঠিটি শুধুমাত্র বকেয়া মহার্ঘ ভাতা (DA)-এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই, বরং রাজ্য সরকারি কর্মী এবং শিক্ষকদের জন্য স্বাস্থ্য প্রকল্পের উন্নতির দিকেও বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। আসুন, এই চিঠির মূল বিষয়বস্তু এবং দাবিদাওয়াগুলো বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
স্বাস্থ্যসাথীর আদলে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ক্যাশলেস চিকিৎসা
কনফেডারেশনের অন্যতম প্রধান দাবি হলো, পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য প্রকল্প বা West Bengal Health Scheme (WBHS)-এর অধীনে ক্যাশলেস চিকিৎসার সীমা ২ লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ লক্ষ টাকা করা। বর্তমানে রাজ্য সরকারি কর্মীরা ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ক্যাশলেস চিকিৎসার সুযোগ পান, যা আজকের দিনে দাঁড়িয়ে যথেষ্ট নয় বলে মনে করা হচ্ছে। এই দাবিটি মূলত স্বাস্থ্যসাথী এবং আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের আদলে করা হয়েছে, যেখানে উপভোক্তারা ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসার সুযোগ পান। এই পরিবর্তন হলে রাজ্য সরকারি কর্মীরা আরও উন্নত এবং সুনিশ্চিত চিকিৎসা করাতে পারবেন।
অনলাইন সেটেলমেন্ট এবং দ্রুত পরিষেবা
চিঠিতে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে, তা হলো অনলাইন সেটেলমেন্ট প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা। কর্মীদের দাবি, অনলাইন সেটেলমেন্ট প্রক্রিয়া আরও দ্রুত এবং স্বচ্ছ করতে হবে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে, চিকিৎসার বিল ফেরত পাওয়ার জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়, যা রোগী এবং তাঁর পরিবারের জন্য একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। এই প্রক্রিয়াটি দ্রুত হলে কর্মীরা হয়রানি থেকে মুক্তি পাবেন এবং সঠিক সময়ে তাঁদের প্রাপ্য টাকা ফেরত পাবেন।
শিক্ষক এবং অ-শিক্ষক কর্মীদের অন্তর্ভুক্তির দাবি
কনফেডারেশনের পক্ষ থেকে আরও একটি জোরালো দাবি জানানো হয়েছে, সেটি হলো শিক্ষক এবং অ-শিক্ষক কর্মীদের পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য প্রকল্পের আওতায় আনা। কেরালা, তামিলনাড়ু, পাঞ্জাব, মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং দিল্লির মতো রাজ্যগুলিতে ইতিমধ্যেই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই উদাহরণ তুলে ধরে কনফেডারেশন জানিয়েছে যে, এই পদক্ষেপ নিলে সরকারের উপর কোনো অতিরিক্ত আর্থিক বোঝা চাপবে না। এর ফলে রাজ্যের সমস্ত সরকারি কর্মী একই ছাতার তলায় এসে সমান সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দাবি
- নতুন রেট লিস্ট: চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, স্বাস্থ্য প্রকল্পের বর্তমান রেট লিস্টটি ২০০৯ সালে তৈরি করা হয়েছিল। বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী এই তালিকাটি প্রাসঙ্গিক নয়। তাই অবিলম্বে নতুন করে রেট লিস্ট তৈরি করার দাবি জানানো হয়েছে।
- হাসপাতাল ও নার্সিংহোম: এমপ্যানেলড হাসপাতাল, নার্সিংহোম এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলির ৭০% বা তার বেশি কলকাতা এবং সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত। স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের মতো রাজ্যের সর্বত্র নার্সিংহোম ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানানো হয়েছে।
- বেসিক বেতন ও পেনশনের ভিত্তিতে অন্তর্ভুক্তি: অর্থ দপ্তরের ১২৮-এফ(এমইভি) তাং ১৯.১০.২০২১ অনুসারে এই প্রকল্পে বেসিক বেতন ও পেনশনের অর্থের ভিত্তিতে ৪ ধরনের পৃথক পৃথক পরিবারের সংস্থান রাখা হয়েছে।
এই চিঠিটি রাজ্য সরকারি কর্মীদের দীর্ঘদিনের দাবিদাওয়া এবং বঞ্চনার একটি প্রতিফলন। এখন দেখার বিষয়, রাজ্য সরকার এই দাবিগুলি কতটা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করে এবং কবে নাগাদ এই বিষয়ে কোনো ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করে।