Bank Cheque Writing: চেক লেখার সময় এই ১০টি বিষয় মাথায় না রাখলে পড়তে পারেন বড়সড় বিপদে!

Bank Cheque Writing: আজকাল ডিজিটাল পেমেন্টের যুগেও চেকের গুরুত্ব কিন্তু এতটুকুও কমেনি। ব্যবসা হোক বা ব্যক্তিগত লেনদেন, এখনও অনেকেই চেকের উপরই ভরসা রাখেন। কিন্তু জানেন কি, চেক লেখার সময় সামান্য একটি ভুলও আপনার জন্য বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে? আপনার অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও হয়ে যেতে পারে সব টাকা। তাই আজকের এই প্রতিবেদনে আমরা আলোচনা করব চেক লেখার সময় কোন ১০টি জরুরি বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখা উচিত, যাতে আপনি কোনোভাবে আর্থিক প্রতারণার শিকার না হন।
চেক লেখার সময় যে ১০টি বিষয় অবশ্যই মনে রাখবেন:
১. তারিখ লেখার ক্ষেত্রে সতর্ক হন
চেকের উপরের ডানদিকে তারিখ লেখার একটি নির্দিষ্ট জায়গা থাকে। সবসময় সঠিক তারিখ লিখুন। মনে রাখবেন, একটি চেকের বৈধতা সাধারণত ইস্যু করার তারিখ থেকে তিন মাস পর্যন্ত থাকে। তিন মাস পর সেই চেকটি ‘Stale Cheque’ হয়ে যায় এবং ব্যাংক সেই চেকটি গ্রহণ করে না। তাই তারিখ লেখার সময় মাস এবং সাল অবশ্যই ভালোভাবে দেখে নিন।
২. প্রাপকের নাম সঠিকভাবে লিখুন
আপনি যাকে চেক দিচ্ছেন, তার পুরো নাম সঠিকভাবে ‘Pay’ বা ‘Pay to’ লেখা লাইনে লিখুন। নামের বানানে যেন কোনও ভুল না থাকে। যদি কোনও সংস্থাকে চেক দেন, তবে তাদের পুরো এবং সঠিক নাম লিখুন। নামের আগে বা পরে অতিরিক্ত জায়গা ছাড়বেন না, কারণ অসাধু ব্যক্তিরা সেই ফাঁকা জায়গার অপব্যবহার করতে পারে।
৩. টাকার পরিমাণ কথায় ও সংখ্যায় নির্ভুলভাবে লিখুন
চেকের দুটি জায়গায় টাকার পরিমাণ লিখতে হয় – একবার সংখ্যায় (in figures) এবং একবার কথায় (in words)। উভয় স্থানেই টাকার পরিমাণ যেন হুবহু এক থাকে। যদি কথায় এবং সংখ্যায় লেখা পরিমাণে কোনও গরমিল থাকে, তবে ব্যাংক আপনার চেকটি বাতিল করে দেবে। কথায় টাকার পরিমাণ লেখার পর ‘Only’ শব্দটি অবশ্যই লিখুন। যেমন – ‘Ten Thousand Only’।
৪. স্বাক্ষর করার আগে সব কিছু যাচাই করুন
চেকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো আপনার স্বাক্ষর। স্বাক্ষর করার আগে দেখে নিন চেকের সমস্ত তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করা হয়েছে কিনা। ব্যাংকে আপনার যে স্বাক্ষরটি নথিভুক্ত করা আছে, ঠিক সেই স্বাক্ষরই করুন। স্বাক্ষরে কোনও অমিল থাকলে ব্যাংক চেক প্রত্যাখ্যান করতে পারে। কখনওই ফাঁকা চেকে স্বাক্ষর করবেন না।
৫. ‘A/C Payee’ চেক ব্যবহার করুন (Use ‘A/C Payee’ Cheque)
চেকের উপরের বাম কোণে দুটি সমান্তরাল লাইন টেনে তার মাঝে ‘A/C Payee’ লিখে দিলে, সেই চেকের টাকা শুধুমাত্র প্রাপকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হবে। এর ফলে নগদ টাকা তোলা যায় না এবং চেকটি অনেক বেশি সুরক্ষিত থাকে। চেষ্টা করুন সবসময় ‘A/C Payee’ চেক ব্যবহার করার।
৬. চেকে কাটাকাটি বা ওভাররাইটিং এড়িয়ে চলুন
যদি চেক লেখার সময় কোনও ভুল হয়ে যায়, তবে সেই চেকের উপর কাটাকাটি বা ওভাররাইটিং করবেন না। এই ধরনের চেক ব্যাংক সাধারণত গ্রহণ করে না। যদি ভুল হয়েই যায়, তবে চেকটি বাতিল করে নতুন একটি চেক লিখুন। বাতিল করা চেকের উপর বড় করে ‘VOID’ বা ‘CANCELLED’ লিখে দিন।
৭. স্থায়ী কালি ব্যবহার করুন
চেক লেখার জন্য সবসময় নীল বা কালো কালির বলপয়েন্ট পেন ব্যবহার করুন। অন্য কোনও রঙের কালি বা পেনসিল ব্যবহার করবেন না, কারণ সেগুলি সহজেই মুছে ফেলা বা পরিবর্তন করা যায়।
৮. চেকের রেকর্ড রাখুন
আপনার চেক বইয়ের শুরুতে একটি রেকর্ড স্লিপ থাকে। সেখানে প্রতিটি চেকের নম্বর, তারিখ, প্রাপকের নাম এবং টাকার পরিমাণ লিখে রাখুন। এর ফলে ভবিষ্যতে কোনও সমস্যা হলে আপনি সহজেই চেকের তথ্য খুঁজে বের করতে পারবেন।
৯. পোস্ট-ডেটেড চেক সম্পর্কে সচেতন থাকুন
ভবিষ্যতের কোনও তারিখ দিয়ে চেক ইস্যু করাকে পোস্ট-ডেটেড চেক বলে। যদি কাউকে পোস্ট-ডেটেড চেক দেন, তবে নিশ্চিত করুন যে ওই তারিখে আপনার অ্যাকাউন্টে পর্যাপ্ত ব্যালেন্স থাকবে। নির্দিষ্ট তারিখের আগে ব্যাংক ওই চেক গ্রহণ করবে না।
১০. চেক বই সুরক্ষিত রাখুন
আপনার চেক বই একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নথি। এটি সবসময় সুরক্ষিত জায়গায় রাখুন। চেক বই হারিয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে আপনার ব্যাংককে জানান এবং প্রয়োজনে ‘Stop Payment’ নির্দেশ দিন।
ডিজিটাল লেনদেনের যুগেও চেকের ব্যবহার অনস্বীকার্য। উপরের এই নিয়মগুলি মেনে চললে আপনি যেমন আর্থিক ক্ষতির হাত থেকে বাঁচবেন, তেমনই আপনার লেনদেনও হবে সুরক্ষিত এবং মসৃণ।