Teacher’s Death: চাকরি হারিয়ে মৃত্যু: সুবল সোরেনের মর্মান্তিক পরিণতি কাঁদাল রাজ্যকে

Teacher’s Death: সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে ৩৭ বছর বয়সী শিক্ষক, সুবল সোরেনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। চাকরি হারানোর ফলে সৃষ্ট মানসিক চাপ এবং উদ্বেগের কারণে তার এই অকাল মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। এই ঘটনাটি রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় চলমান সংকট এবং এর ফলে সৃষ্ট মানবিক বিপর্যয়ের একটি করুণ চিত্র তুলে ধরেছে।
ঘটনার বিবরণ
সুবল সোরেন ২০১৬ সালের এসএসসি প্যানেলের একজন শিক্ষক ছিলেন। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে প্রায় ২৬,০০০ শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল হয়ে যায়, এবং সুবল সোরেনও তাদের মধ্যে একজন ছিলেন। চাকরি হারানোর পর থেকেই তিনি তীব্র মানসিক চাপের মধ্যে ছিলেন। তার স্ত্রী জানিয়েছেন যে, তিনি তার পরিবার এবং ভবিষ্যতের কথা ভেবে ক্রমাগত উদ্বিগ্ন থাকতেন।
চিকিৎসকদের মতে, সুবল সোরেন উচ্চ রক্তচাপে ভুগছিলেন এবং অনিয়মিতভাবে ঔষধ সেবন করতেন। মানসিক চাপের কারণে তার রক্তচাপ আরও বেড়ে যায়, যার ফলে তার মস্তিষ্কে মারাত্মক রক্তক্ষরণ (severe brain hemorrhage) হয়। তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও, চিকিৎসকদের সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
মৃত্যুর পেছনের কারণ
- চাকরি হারানো এবং মানসিক চাপ: চাকরি হারানোই ছিল সুবল সোরেনের মানসিক চাপের প্রধান কারণ। কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে চাকরি বাতিলের পর থেকেই তিনি এবং তার সহকর্মীরা অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছিলেন।
- আর্থিক সংকট: চাকরি হারানোর ফলে সৃষ্ট আর্থিক সংকট তার মানসিক উদ্বেগকে আরও বাড়িয়ে তুলেছিল। পরিবারের ভরণপোষণ এবং ভবিষ্যতের চিন্তা তাকে ক্রমাগত তাড়িয়ে বেড়াচ্ছিল।
- স্বাস্থ্য সমস্যা: মানসিক চাপের কারণে তার উচ্চ রক্তচাপ অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়ে, যা শেষ পর্যন্ত তার মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
সুবল সোরেনের সংগ্রাম
সুবল সোরেন কেবল একজন শিক্ষকই ছিলেন না, তিনি যোগ্য শিক্ষকদের চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে চলমান আন্দোলনের একজন সক্রিয় সদস্যও ছিলেন। তার সহকর্মীরা জানিয়েছেন যে, তিনি প্রায়শই তাদের কাছে তার মানসিক কষ্টের কথা বলতেন এবং পরিবারের ভবিষ্যৎ নিয়ে তার উদ্বেগের কথা জানাতেন।
সুবল সোরেনের মৃত্যু একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং এটি রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় চলমান সংকটের একটি মর্মান্তিক পরিণতি। এই ঘটনাটি আবারও প্রমাণ করে যে, সরকারি সিদ্ধান্তের ফলে সাধারণ মানুষের জীবনে কতটা গভীর প্রভাব পড়তে পারে। যোগ্য শিক্ষকদের প্রতি ন্যায়বিচার এবং তাদের চাকরিতে পুনর্বহালের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি।