Primary TET OMR Case: হাইকোর্টে উঠল টেট OMR মামলা, CBI তদন্তের পর এবার কোন পথে এগোবে চাকরিপ্রার্থীদের ভবিষ্যৎ?

Primary TET OMR Case: কলকাতা হাইকোর্টে আবার উঠল ২০১৪ সালের প্রাইমারি টেট OMR কেলেঙ্কারি মামলা। বিচারপতি রাজশ্রী ভরদ্বাজের বেঞ্চে ১৮ই আগস্ট, ২০২৫-এ এই মামলার শুনানি হতে চলেছে, যা পশ্চিমবঙ্গের হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় আনতে পারে। এই মামলা, যা রবিউল হক বনাম পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য নামে পরিচিত, দীর্ঘদিন ধরে আইনি লড়াইয়ের সাক্ষী থেকেছে এবং এর প্রতিটি শুনানি চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে নতুন করে আশা ও উদ্বেগের সঞ্চার করেছে।
মামলার প্রেক্ষাপট ও ইতিহাস
২০১৪ সালের প্রাইমারি টেট পরীক্ষা এবং তার OMR শিট সংক্রান্ত অস্বচ্ছতার অভিযোগকে কেন্দ্র করে এই মামলার সূত্রপাত। মামলাকারীদের প্রধান দাবি, বারবার আরটিআই আবেদন এবং নির্দিষ্ট অর্থ জমা দেওয়া সত্ত্বেও তাঁরা তাঁদের মূল OMR শিট দেখতে পাননি। এই মামলাটি প্রথমে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে ছিল এবং তাঁর রায়ে বহুবার আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছিল। সর্বশেষ, বিচারপতি রাজশ্রী ভরদ্বাজের বেঞ্চে ৫ই জুলাই, ২০২৪-এ এর শুনানি হয় এবং বর্তমানে এটি ১৮ই আগস্ট শুনানির জন্য ৭১ নম্বরে তালিকাভুক্ত হয়েছে।
আদালতের পূর্ববর্তী নির্দেশ
গত শুনানিতে বিচারপতি রাজশ্রী ভরদ্বাজ সিবিআই-কে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই নির্দেশগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:
- সমস্ত মূল OMR শিট, নষ্ট হয়ে যাওয়া OMR শিট এবং সার্ভার কপি খুঁজে বের করে আদালতে পেশ করতে হবে।
- প্রয়োজনে সফ্টওয়্যার ও আইটি বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নিতে হবে।
- এনআইসি, উইপ্রো, টিসিএস বা ইনফোসিসের মতো সংস্থার প্রযুক্তিগত সহায়তা নিয়ে OMR শিটগুলির অবস্থান চিহ্নিত করতে হবে।
এই নির্দেশগুলি প্রমাণ করে যে, আদালত এই কেলেঙ্কারির গভীরে গিয়ে সত্য উদঘাটন করতে বদ্ধপরিকর।
মামলার বর্তমান অবস্থা ও জটিলতা
এই মামলার মূল মামলা, অর্থাৎ শান্তনু শীট মামলাটি, প্রাইমারি শিক্ষা পর্ষদ ডিভিশন বেঞ্চে চ্যালেঞ্জ করায় তার শুনানি আপাতত স্থগিত রয়েছে। ডিভিশন বেঞ্চ থেকে কোনো নির্দিষ্ট নির্দেশ না আসায় সিঙ্গল বেঞ্চের পক্ষে এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা সম্ভব হচ্ছে না, যা মামলাটিকে আরও দীর্ঘায়িত করছে। এই আইনি জটিলতার কারণে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে OMR মামলার কোনো অগ্রগতি হয়নি।
৩২,০০০ চাকরি বাতিল মামলার উপর প্রভাব
অনেকের মনেই প্রশ্ন জেগেছে যে, এই OMR মামলার শুনানি কি বর্তমানে চলতে থাকা ৩২,০০০ চাকরি বাতিল মামলাকে প্রভাবিত করবে? আইনজীবীদের মতে, ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষা এবং ২০১৭ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়া দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়। চাকরি বাতিল মামলায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষকরাও এই একই টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। তাই, তাঁদের আইনজীবীরা আদালতে সওয়াল করেছেন যে, ২০১৪ সালের টেট-এর অস্বচ্ছতার দায় ২০১৭ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ার ওপর চাপানো উচিত নয়। সুতরাং, এই OMR মামলার রায় ৩২,০০০ চাকরি বাতিল মামলাকে সরাসরি প্রভাবিত করার সম্ভাবনা কম।
সামগ্রিকভাবে, ১৮ই আগস্টের শুনানি পশ্চিমবঙ্গের চাকরিপ্রার্থীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। আদালতের পরবর্তী নির্দেশই বলে দেবে এই দীর্ঘ প্রতীক্ষিত মামলার ভবিষ্যৎ কোন পথে এগোবে এবং হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থীর ভাগ্যে কী লেখা আছে।