2022 TET Data Leak: ২০২২ সালের প্রাথমিক টেট উত্তীর্ণদের তথ্য ফাঁসের অভিযোগ, পিছনে বড় চক্র? কী বলছে পর্ষদ?

2022 TET Data Leak: সম্প্রতি ২০২২ সালের প্রাথমিক শিক্ষক যোগ্যতা পরীক্ষার (Primary TET 2022) ফলাফল নিয়ে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। অভিযোগ উঠেছে যে, প্রায় দেড় লক্ষ টেট উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর সার্টিফিকেট এবং ব্যক্তিগত তথ্য একটি তৃতীয় পক্ষের ওয়েবসাইটে ফাঁস হয়ে গেছে। এই ঘটনায় রাজ্যজুড়ে চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
তথ্যের সুরক্ষা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন
ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন দেখা যায় যে, পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট নয়, বরং একটি বেসরকারি ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের টেট উত্তীর্ণদের সার্টিফিকেট পাওয়া যাচ্ছে। এই ওয়েবসাইটটি মূলত জমি এবং ভোটার কার্ড সংক্রান্ত তথ্য পরিষেবা প্রদান করে থাকে। এমন একটি ওয়েবসাইটে কিভাবে টেট-এর মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার ফলাফল ও সার্টিফিকেট চলে এলো, তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন।
এই ঘটনায় নিম্নলিখিত বিষয়গুলি বিশেষভাবে উদ্বেগজনক:
- দেড় লক্ষ পরীক্ষার্থীর তথ্য ফাঁস: ফাঁস হওয়া তথ্যের মধ্যে পরীক্ষার্থীদের নাম, রোল নম্বর এবং অন্যান্য সংবেদনশীল ব্যক্তিগত তথ্য থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
- তৃতীয় পক্ষের ওয়েবসাইটের ভূমিকা: যে ওয়েবসাইটটিতে এই তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, তার বৈধতা এবং উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ দানা বেঁধেছে।
- চাকরিপ্রার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কা: এই তথ্য ফাঁসের ফলে চাকরিপ্রার্থীদের ভবিষ্যৎ এবং তথ্যের সুরক্ষা প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
পর্ষদের প্রতিক্রিয়া এবং রাজনৈতিক চাপানউতোর
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল জানিয়েছেন যে, তাঁরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন এবং অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাঁর মতে, পর্ষদের সরকারি ওয়েবসাইট থেকে তথ্য ফাঁস হওয়া সম্ভব নয়। যদি কোনো প্রতারক চক্র এর পিছনে থাকে, তবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
অন্যদিকে, এই ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনেও শুরু হয়েছে তৎপরতা। বিজেপি নেতা এবং আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি এই ঘটনায় ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার ক্ষেত্রেও একই ধরনের জাল ওয়েবসাইটের সমস্যা দেখা গিয়েছিল। তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, ফাঁস হওয়া তালিকায় এমন কিছু ব্যক্তির নাম রয়েছে যাদের বয়স টেট পরীক্ষায় বসার জন্য নির্ধারিত বয়সের চেয়ে বেশি। এর ফলে পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।
অতীতের পুনরাবৃত্তি এবং চাকরিপ্রার্থীদের উদ্বেগ
পশ্চিমবঙ্গে টেট পরীক্ষা নিয়ে বিতর্ক নতুন কিছু নয়। এর আগেও একাধিকবার ডিজিটাল জালিয়াতি এবং ভুয়ো ওয়েবসাইটের অভিযোগ উঠেছে। বারবার এই ধরনের ঘটনা ঘটায় চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে অবিশ্বাস এবং হতাশা বাড়ছে। তাদের আশঙ্কা, এই তথ্য ফাঁসের ঘটনা নতুন কোনো প্রতারণার জাল বিছানোর জন্য করা হয়েছে কিনা। এই পরিস্থিতিতে, পর্ষদের পক্ষ থেকে দ্রুত এবং স্বচ্ছ পদক্ষেপের দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা।
এই ঘটনাটি রাজ্যের শিক্ষা এবং নিয়োগ ব্যবস্থার ডিজিটাল সুরক্ষার দুর্বলতাকেও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। আগামী দিনে এই ধরনের ঘটনা আটকাতে আরও কঠোর এবং সুরক্ষিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।