TET for Teachers: সকল কর্মরত শিক্ষকদের ২ বছরের মধ্যে TET পাশ করতে হবে, নইলে ছাঁটাই, সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায়

TET for Teachers: সম্প্রতি, ভারতের সুপ্রিম কোর্ট কর্মরত শিক্ষকদের TET (Teacher Eligibility Test) যোগ্যতা নিয়ে একটি যুগান্তকারী রায় দিয়েছে। এই রায়টি বিশেষ করে সেই সমস্ত শিক্ষকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ যারা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতা করছেন কিন্তু TET উত্তীর্ণ নন। মহারাষ্ট্রের একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এই রায় আসলেও, এর প্রভাব সারা দেশের শিক্ষা মহলে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। আসুন, এই রায়ের মূল বিষয়গুলি এবং এর সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ের মূল বিষয়বস্তু
সুপ্রিম কোর্টের এই রায়টি মূলত দুটি ভাগে শিক্ষকদের জন্য নির্দেশিকা দিয়েছে। এই নির্দেশিকা চাকরির মেয়াদকালের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে।
- যাদের চাকরির মেয়াদ ৫ বছরের কম বাকি: যে সমস্ত কর্মরত শিক্ষক-শিক্ষিকার অবসরের সময়সীমা ৫ বছরের কম, তাদের জন্য বড় স্বস্তি দিয়েছে আদালত। রায় অনুযায়ী, এই শিক্ষকদের আর নতুন করে TET পরীক্ষায় বসার প্রয়োজন নেই। তারা তাদের চাকরির মেয়াদকাল সম্পূর্ণ করতে পারবেন এবং স্বাভাবিক নিয়মেই অবসর গ্রহণ করবেন। এটি নিঃসন্দেহে প্রবীণ শিক্ষকদের জন্য একটি স্বস্তিদায়ক খবর।
- যাদের চাকরির মেয়াদ ৫ বছরের বেশি বাকি: অন্যদিকে, যে সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরির মেয়াদ এখনও ৫ বছরের বেশি রয়েছে এবং তারা RTE (Right to Education) আইন কার্যকর হওয়ার আগে নিযুক্ত হয়েছিলেন, তাদের জন্য আদালত একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে। এই শিক্ষকদের আগামী দুই বছরের মধ্যে TET পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। এই সময়ের মধ্যে যোগ্যতা অর্জন করতে না পারলে তাদের চাকরি নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হতে পারে।
TET যোগ্যতা অর্জনে ব্যর্থ হলে কী হবে?
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, যে শিক্ষকদের TET পাশ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, তারা যদি নির্দিষ্ট দুই বছরের মধ্যে এই যোগ্যতা অর্জন করতে না পারেন, তবে তাদের চাকরি থেকে ইস্তফা দিতে হতে পারে অথবা তাদের বাধ্যতামূলক অবসর গ্রহণ করতে হতে পারে। তবে, এক্ষেত্রে তারা আইন অনুযায়ী প্রাপ্য সমস্ত টার্মিনাল বেনিফিট, যেমন গ্র্যাচুইটি, পেনশন ইত্যাদি পাবেন, যদি তারা প্রয়োজনীয় সময়কাল চাকরি করে থাকেন। যদি চাকরির যোগ্যতার সময়কালে কোনো ঘাটতি থাকে, তবে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে একটি আবেদনপত্রের মাধ্যমে বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ করা যেতে পারে।
মামলার উৎস এবং পশ্চিমবঙ্গের প্রেক্ষাপট
এই মামলাটির সূত্রপাত হয়েছিল মহারাষ্ট্রের “অঞ্জুমান ইসাত ই তালিম ট্রাস্ট বনাম মহারাষ্ট্র সরকার” নামক একটি মামলা থেকে। সুতরাং, এই রায়টি প্রাথমিকভাবে মহারাষ্ট্রের জন্য প্রযোজ্য। পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষকদের এখনই এই রায় নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। যদি এই নিয়ম পশ্চিমবঙ্গে কার্যকর করতে হয়, তবে রাজ্য সরকারকে প্রথমে বিভিন্ন নিয়মাবলী এবং বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হবে। তাই, পশ্চিমবঙ্গের কর্মরত শিক্ষকদের জন্য পরামর্শ হল, তারা যেন এই বিষয়ে অযথা দুশ্চিন্তা না করে সরকারি বিজ্ঞপ্তির জন্য অপেক্ষা করেন।
সবশেষে বলা যায়, সুপ্রিম কোর্টের এই রায় শিক্ষা ব্যবস্থায় যোগ্যতার মান বজায় রাখার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি যেমন কিছু প্রবীণ শিক্ষককে স্বস্তি দিয়েছে, তেমনই অন্য শিক্ষকদের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করার সুযোগ করে দিয়েছে।