New SSC Case: এসএসসি নিয়ে আরো একটি নতুন মামলা দায়ের হলো কলকাতা হাইকোর্টে, ফ্রেশাররা কেন করল এই মামলা

New SSC Case: পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে বিতর্ক যেন শেষই হচ্ছে না। প্যানেলের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও নিয়োগ এবং অভিজ্ঞতার জন্য অতিরিক্ত ১০ নম্বর দেওয়ার নিয়মকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে একটি নতুন মামলা দায়ের হয়েছে। ফ্রেশার চাকরিপ্রার্থীরা এই মামলাটি করেছেন, যা রাজ্যের হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থীর ভবিষ্যতের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
মামলার প্রধান বিষয়বস্তু
এই মামলার মূল ভিত্তি হলো দুটি প্রধান বিষয়:
- প্যানেলের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নিয়োগ: মামলাকারীদের অভিযোগ, ২০১৬ সালের প্রথম এসএলএসটি (SLST) পরীক্ষার প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও অনেককে নিয়োগ করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট এবং কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায় অনুযায়ী, এই ধরনের নিয়োগপ্রাপ্তদের ‘টেন্ডেড’ বা অযোগ্য প্রার্থী হিসেবে গণ্য করা উচিত। তা সত্ত্বেও, তাদের নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়েছে, যা আইনবিরুদ্ধ।
- অভিজ্ঞতার জন্য ১০ নম্বরের সুবিধা: নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায়, পূর্ব অভিজ্ঞতাসম্পন্ন শিক্ষকদের অতিরিক্ত ১০ নম্বর দেওয়ার একটি নিয়ম রাখা হয়েছে। মামলাকারীদের মতে, এটি সংবিধানের ১৪ নম্বর ধারার (সমতার অধিকার) লঙ্ঘন। তাদের যুক্তি, এর ফলে ফ্রেশার প্রার্থীরা লিখিত পরীক্ষায় বেশি নম্বর পেয়েও পিছিয়ে পড়বেন। এই নিয়মটি একটি অন্যায্য সুবিধা তৈরি করছে এবং যোগ্য প্রার্থীদের বঞ্চিত করছে।
আইনি প্রেক্ষাপট ও পূর্ববর্তী রায়
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, সুপ্রিম কোর্ট এবং কলকাতা হাইকোর্ট প্যানেলের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে নিয়োগকে অবৈধ বলে ঘোষণা করেছে। ২০২২ সালের একটি রায়ে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছিল যে, এই ধরনের প্রার্থীরা ভবিষ্যতের কোনো নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন না। তা সত্ত্বেও, কমিশন প্রায় ১৮০৬ জন ‘টেন্ডেড’ প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করেছে এবং তাদের নতুন পরীক্ষায় বসার সুযোগ দিয়েছে, যা আদালতের আদেশের সরাসরি লঙ্ঘন।
মামলাকারীরা আরও উল্লেখ করেছেন যে, ২০১৯ সালের ১২ মার্চ এবং ২৭ জানুয়ারী নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল। এরপরও যারা চাকরিতে যোগ দিয়েছেন, তাদের নিয়োগের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
চাকরিপ্রার্থীদের উদ্বেগ ও ভবিষ্যৎ
এই মামলাটি রাজ্যের চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ তৈরি করেছে। ফ্রেশার প্রার্থীদের দাবি, যদি এই নিয়মগুলি বহাল থাকে, তবে তাদের জন্য সরকারি স্কুলে চাকরি পাওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। লিখিত পরীক্ষায় ভালো ফল করেও তারা অভিজ্ঞ প্রার্থীদের থেকে পিছিয়ে পড়বেন।
মামলার শুনানি ২২শে সেপ্টেম্বর হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও, মামলার ক্রমিক নম্বর অনেক পিছনে থাকায় নির্দিষ্ট দিনে শুনানি শুরু হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। তবে এই মামলার রায় পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশনের ভবিষ্যতের নিয়োগ প্রক্রিয়ার ওপর একটি বড়সড় প্রভাব ফেলবে, তা নিশ্চিত। এখন দেখার বিষয়, আদালত এই বিষয়ে কী নির্দেশ দেয় এবং রাজ্য সরকার ও কমিশন কী পদক্ষেপ গ্রহণ করে।