ডিএ

ডিএ বঞ্চনার কারণে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের সপ্তম বেতন কমিশন কি পিছিয়ে যাবে? জেনেনিন কি বললেন মলয় মুখোপাধ্যায়

সপ্তম বেতন কমিশন: কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের সাধারণ সম্পাদক শ্রী মলয় মুখোপাধ্যায়ের সাম্প্রতিক এক ভিডিও বার্তায় রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) এবং নতুন বেতন কমিশনের দাবি আরও একবার জোরালোভাবে উঠে এসেছে। তার বক্তব্যে কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে ডিএ-এর বিশাল বৈষম্যের চিত্রটি স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে, যা পশ্চিমবঙ্গের লক্ষ লক্ষ সরকারি কর্মীর মনে ক্ষোভের সঞ্চার করেছে। এই প্রতিবেদনে আমরা তার বক্তব্যের মূল বিষয়গুলো তুলে ধরব এবং এর থেকে উদ্ভূত কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক বিশ্লেষণ করব।

ডিএ-এর বিস্তর ফারাক

শ্রী মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা সপ্তম বেতন কমিশনের অধীনে মোট ৫৮ শতাংশ ডিএ পাচ্ছেন, যেখানে পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীরা ষষ্ঠ বেতন কমিশনের অধীনে মাত্র ১৮ শতাংশ ডিএ পাচ্ছেন। এই পার্থক্যের পরিমাণ ৪০ শতাংশ, যা এক কথায় বিশাল। তিনি উল্লেখ করেন যে, কেন্দ্রীয় সরকার সম্প্রতি আরও ৩ শতাংশ ডিএ ঘোষণা করার মাধ্যমে তাদের সপ্তম বেতন কমিশনের ২০ কিস্তির ডিএ সম্পূর্ণ করেছে। এর ফলে কেন্দ্রীয় কর্মীদের মোট ডিএ ৫৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ৫৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে, রাজ্য সরকারি কর্মীরা এখনও ৪০ শতাংশ ডিএ থেকে বঞ্চিত, যা তাদের জীবনযাত্রার ওপর ঘোরতর প্রভাব ফেলছে।

নতুন বেতন কমিশনের দাবি

শ্রী মুখোপাধ্যায় দ্ব্যর্থহীনভাবে জানিয়েছেন যে, এই বকেয়া ৪০ শতাংশ ডিএ না মেটানো পর্যন্ত রাজ্যে নতুন বেতন কমিশন চালু করা সম্ভব নয়। তার মতে, যেখানে কেন্দ্রীয় সরকার ১লা জানুয়ারী, ২০২৬ থেকে তাদের নতুন বেতন কমিশন কার্যকর করার পথে এগোচ্ছে, সেখানে পশ্চিমবঙ্গের কর্মীরা তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এই বঞ্চনার প্রতিকার চেয়েই তারা পঞ্চম বেতন কমিশনের ডিএ নিয়ে আদালতে মামলা করেছিলেন এবং সেই মামলার রায় অক্টোবর মাসেই প্রকাশিত হতে চলেছে বলে তিনি আশাবাদী।

আইনি লড়াই এবং ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ

কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন যে, যদি আদালতের রায় কর্মচারীদের পক্ষে আসে, তাহলে সেই বকেয়া ডিএ কীভাবে আদায় করতে হয়, তা কর্মচারী সমাজ ভালোভাবেই জানে। তার এই বক্তব্যে স্পষ্ট যে, তারা তাদের দাবি আদায়ে বদ্ধপরিকর এবং প্রয়োজনে বৃহত্তর আন্দোলনে নামতেও প্রস্তুত। এই আইনি লড়াইয়ের ফলাফল পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

সবার আগে খবরের আপডেট পান!

টেলিগ্রামে যুক্ত হন

সামগ্রিকভাবে, শ্রী মলয় মুখোপাধ্যায়ের এই বার্তা রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের দাবি এবং বঞ্চনার এক জ্বলন্ত প্রতিচ্ছবি। একদিকে কেন্দ্রীয় কর্মীদের সাথে ক্রমবর্ধমান বৈষম্য এবং অন্যদিকে রাজ্য সরকারের উদাসীনতা তাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে দিয়েছে। এখন দেখার বিষয়, আসন্ন রায়ে তাদের ভাগ্যের চাকা ঘোরে কিনা এবং রাজ্য সরকারই বা এই বিষয়ে কী পদক্ষেপ গ্রহণ করে। তবে একটা বিষয় স্পষ্ট, রাজ্য সরকারি কর্মীরা তাদের অধিকার আদায়ে আর কোনো আপোষ করতে রাজি নন।

WBPAY Team

আমাদের প্রতিবেদন গুলি WBPAY Team এর দ্বারা যাচাই করে লেখা হয়। আমরা একটি স্বাধীন প্ল্যাটফর্ম যা পাঠকদের জন্য স্পষ্ট এবং সঠিক খবর পৌঁছে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের লক্ষ্য এবং সাংবাদিকতার মান সম্পর্কে জানতে, অনুগ্রহ করে আমাদের About us এবং Editorial Policy পৃষ্ঠাগুলি পড়ুন।
Back to top button