TET Mandate: কর্মরত শিক্ষকদের TET সংকট মুক্ত করতে কেন্দ্রের আশ্বাস, স্বস্তিতে রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকরা

TET Mandate: অবশেষে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে চলেছেন পশ্চিমবঙ্গের কয়েক হাজার সিনিয়র প্রাথমিক শিক্ষক। সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক এক রায়ে কর্মরত সমস্ত শিক্ষকদের জন্য টিচার এলিজিবিলিটি টেস্ট (TET) বাধ্যতামূলক করায় যে গভীর সংকট তৈরি হয়েছিল, তা নিরসনে এবার সরাসরি হস্তক্ষেপ করল কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মাধ্যমে বার্তা পাঠিয়েছেন যে, সিনিয়র শিক্ষকদের অসুবিধার মধ্যে পড়তে হবে না। সরকার এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কী ছিল সেই সংকট?
সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট এক ঐতিহাসিক রায়ে জানায়, চাকরিরত সমস্ত প্রাথমিক শিক্ষকদেরই TET পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। যে সমস্ত শিক্ষকের চাকরির মেয়াদ পাঁচ বছরের বেশি বাকি আছে, তাঁদের আগামী দুই বছরের মধ্যে এই পরীক্ষায় পাশ করা বাধ্যতামূলক। এই রায় ঘোষণার পরেই রাজ্যের হাজার হাজার সিনিয়র শিক্ষক, যাঁরা বহু বছর ধরে শিক্ষকতা করছেন এবং TET ছাড়াই চাকরিতে নিযুক্ত হয়েছিলেন, তাঁরা গভীর উদ্বেগের মধ্যে পড়েন। তাঁদের চাকরি হারানোর আশঙ্কাও তৈরি হয়েছিল। এই পরিস্থিতিতেই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান এবং শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে আলোচনায় বসেন।
কেন্দ্রের আশ্বাস এবং পদক্ষেপ
দীর্ঘ আলোচনার পর কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান শুভেন্দু অধিকারীকে আশ্বস্ত করে বলেন, “ভারত সরকার সিনিয়র শিক্ষকদের পাশে আছে।” তিনি জানান, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রেক্ষিতে গোটা ভারতে সিনিয়র শিক্ষক-শিক্ষিকারা যাতে কোনওরকম অসুবিধায় না পড়েন, তার জন্য প্রয়োজনীয় আইনি পথ খোঁজা হচ্ছে এবং দ্রুত এই বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। এই বার্তা পেয়ে রাজ্যের শিক্ষক মহল অনেকটাই স্বস্তিতে। শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন, কেন্দ্র শুধুমাত্র মৌখিক আশ্বাস দেয়নি, বরং এই সমস্যা সমাধানের জন্য একটি নির্দিষ্ট আইনি কাঠামো তৈরির কাজও শুরু করে দিয়েছে।
শিক্ষক মহলে প্রতিক্রিয়া
কেন্দ্রের এই আশ্বাসে রাজ্যের শিক্ষক সংগঠনগুলির মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে। একাংশ এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং তাঁরা আশা করছেন যে দ্রুত এর সমাধান হবে। তাঁদের মতে, বহু বছর ধরে নিষ্ঠার সঙ্গে শিক্ষকতা করার পর এই বয়সে এসে TET পরীক্ষার সম্মুখীন হওয়াটা শুধু কঠিনই নয়, অপমানজনকও বটে। অন্যদিকে, অপর একাংশ মনে করছেন যে, যতদিন পর্যন্ত না নির্দিষ্ট নির্দেশিকা জারি হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত সম্পূর্ণ নিশ্চিন্ত হওয়া যাচ্ছে না। তবে সব মিলিয়ে, কেন্দ্রের এই পদক্ষেপে আপাতত স্বস্তির আবহ তৈরি হয়েছে রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষা মহলে। এখন দেখার বিষয়, কবে এই আইনি প্রক্রিয়ার বাস্তবায়ন হয় এবং সিনিয়র শিক্ষকরা পুরোপুরি সংকটমুক্ত হন।