Supreme Court Arattai: “হোয়াটসঅ্যাপ কি মৌলিক অধিকার?” বিকল্প হিসাবে দেশীয় অ্যাপ ‘আরাটতাই’ ব্যবহারের পরামর্শ সুপ্রিম কোর্টের

Supreme Court Arattai: হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট ব্লক হয়ে যাওয়ায় এক আবেদনকারী সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু সর্বোচ্চ আদালত আবেদনকারীর আর্জি শুনতে অস্বীকার করে এবং হোয়াটসঅ্যাপের পরিবর্তে অন্য মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহারের পরামর্শ দেয়। বিচারপতি সন্দীপ মেহতা বিশেষভাবে দেশীয় অ্যাপ আরাট্টাই (Arattai) ব্যবহারের কথা বলেন। এই ঘটনা ডিজিটাল ভারতে দেশীয় প্রযুক্তির ব্যবহার এবং সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলির দায়বদ্ধতা নিয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
মামলার প্রেক্ষাপট
আবেদনকারী, যিনি একটি পলি-ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কর্মরত, প্রায় ১০-১২ বছর ধরে পেশাগত কারণে ক্লায়েন্টদের সাথে যোগাযোগের জন্য হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করছিলেন। কোনো নির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই তার অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দেওয়া হয়, যার ফলে তার পেশাগত যোগাযোগে বড় বাধা সৃষ্টি হয়। এই সমস্যার সমাধান চেয়ে তিনি সিনিয়র আইনজীবী মহালক্ষ্মী পাভানির মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন।
সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ
মামলার শুনানিতে বিচারপতি বিক্রম নাথ এবং বিচারপতি সন্দীপ মেহতার বেঞ্চ আবেদনকারীর আর্জির যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। বেঞ্চের পক্ষ থেকে বলা হয়, “হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করা কি আপনার মৌলিক অধিকার?” বিচারপতি মেহতা আরও বলেন, “যোগাযোগের জন্য আরও অনেক অ্যাপ্লিকেশন রয়েছে। আপনি সেগুলি ব্যবহার করতে পারেন। সম্প্রতি, আরাট্টাই নামে একটি দেশীয় অ্যাপ এসেছে…সেটি ব্যবহার করুন। মেক ইন ইন্ডিয়া!”
আদালত সংবিধানের ৩২ নম্বর অনুচ্ছেদের অধীনে এই ধরনের পিটিশনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তোলে এবং আবেদনকারীকে দেওয়ানী মামলা দায়ের করার বা হাইকোর্টে যাওয়ার পরামর্শ দেয়।
সবার আগে খবরের আপডেট পান!
টেলিগ্রামে যুক্ত হন‘আরাট্টাই’ অ্যাপ কী?
‘আরাট্টাই’ একটি ভারতীয় ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং অ্যাপ, যা তৈরি করেছে চেন্নাই-ভিত্তিক সংস্থা জোহো কর্পোরেশন (Zoho Corporation)। তামিল ভাষায় ‘আরাট্টাই’ শব্দের অর্থ হলো আড্ডা বা খোশগল্প। এই অ্যাপটি ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তাকে অগ্রাধিকার দেয় এবং এটি সম্পূর্ণ বিজ্ঞাপন-মুক্ত। ব্যবহারকারীদের ডেটা ভারতেই হোস্ট করা হয়, যা ডিজিটাল সুরক্ষার ক্ষেত্রে একটি বড় বিষয়। ‘আরাট্টাই’ এর মাধ্যমে মেসেজিং, ভয়েস ও ভিডিও কল এবং অনলাইন মিটিং-এর মতো সুবিধা পাওয়া যায়।
এই রায়ের তাৎপর্য
সুপ্রিম কোর্টের এই পর্যবেক্ষণ বিভিন্ন দিক থেকে তাৎপর্যপূর্ণ:
- প্ল্যাটফর্মের দায়বদ্ধতা: সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি কোনো কারণ ছাড়াই ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্ট ব্লক করতে পারে কিনা, সেই বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উঠেছে।
- দেশীয় প্রযুক্তির প্রচার: ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়ে আদালতের এই ধরনের মন্তব্য দেশীয় প্রযুক্তির প্রসারে সহায়ক হবে।
- ডিজিটাল অধিকার: ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা কি ব্যবহারকারীর মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে, এই বিতর্ককে উস্কে দিয়েছে এই মামলা।
এই ঘটনা প্রমাণ করে যে, ডিজিটাল বিশ্বে ব্যবহারকারীদের অধিকার এবং প্ল্যাটফর্মগুলির ক্ষমতার মধ্যে একটি ভারসাম্য থাকা প্রয়োজন। আগামী দিনে এই বিষয়ে আরও সুস্পষ্ট নির্দেশিকা তৈরি হবে বলে আশা করা যায়।