NCTE TET Reply: TET নিয়ে শিক্ষকদের আবেদন খারিজ! NCTE জানালো কেস “ক্লোজড”, এখন কি হবে?
NCTE TET Reply: পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ এবং টেট (TET) যোগ্যতা সংক্রান্ত বিষয়ে সম্প্রতি এক গুরুত্বপূর্ণ মোড় এসেছে। সুপ্রিম কোর্টের ১লা সেপ্টেম্বর ২০২৫-এর রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন (NCTE)-এর কাছে একটি আবেদন করা হয়েছিল, কিন্তু সেই আবেদনের উত্তরে NCTE তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছে, যা নিয়ে শিক্ষক মহলে ব্যাপক উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রেক্ষাপট
বিষয়টির সূত্রপাত হয় সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়কে কেন্দ্র করে। শীর্ষ আদালতের ১লা সেপ্টেম্বর, ২০২৫-এর রায় অনুযায়ী, যে সমস্ত শিক্ষকের চাকরির মেয়াদ পাঁচ বছরের বেশি, তাঁদের আগামী দুই বছরের মধ্যে আবশ্যিকভাবে টেট (TET) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। এই রায়ের মূল ভিত্তি হলো ৯ই আগস্ট, ২০১৭-এ সংসদে গৃহীত একটি সিদ্ধান্ত, যার ফলে NCTE-এর নিয়মাবলীতে সংশোধন আনা হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ সেই ধারাবাহিকতারই একটি অংশ, যা দেশের লক্ষ লক্ষ শিক্ষকের কর্মজীবনের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলছে।
এই রায়ের সম্ভাব্য প্রভাব
এই রায় কার্যকর হলে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় এক গভীর সংকট তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল। আবেদনে উল্লেখ করা হয় যে, দেশের লক্ষ লক্ষ শিক্ষক আগামী দুই বছর ক্লাসরুমে পাঠদানের পরিবর্তে নিজেদের চাকরি বাঁচানোর জন্য টেট পরীক্ষার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত হয়ে পড়বেন। এর ফলস্বরূপ:
- শিক্ষার মানের অবনতি: ক্লাসরুমে শিক্ষকদের মনোযোগ কমলে ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার মান মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
- শিক্ষকদের উপর মানসিক চাপ: চাকরি হারানোর আশঙ্কায় শিক্ষকরা চরম মানসিক চাপের মধ্যে পড়বেন।
- শিক্ষা ব্যবস্থার ক্ষতি: সামগ্রিকভাবে, দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার মেরুদণ্ড ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে, যা ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে ঠেলে দেবে।
কি সমাধান প্রস্তাব করা হয়েছিল?
এই সংকটময় পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আবেদনে একটি সুনির্দিষ্ট সমাধানের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। প্রস্তাবে বলা হয়, ২০১৭ সালে সংসদ যেমন একটি আইন সংশোধন করে শিক্ষকদের সুরাহা দিয়েছিল, ঠিক তেমনই ২০২৫ সালেও দেশের শিক্ষক সমাজকে রক্ষা করার জন্য একটি অনুরূপ সংশোধনের প্রয়োজন। মূল প্রস্তাবটি ছিল, যে সমস্ত শিক্ষক ২০১৭ সালের আগে নিযুক্ত হয়েছেন, তাঁদের যেন সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের আওতার বাইরে রাখা হয়। এর মাধ্যমে অভিজ্ঞ শিক্ষকদের সম্মান জানানো এবং শিক্ষা ব্যবস্থার স্থিতিশীলতা বজায় রাখা সম্ভব হবে বলে মনে করা হয়েছিল।
সবার আগে খবরের আপডেট পান!
টেলিগ্রামে যুক্ত হনNCTE-এর চূড়ান্ত উত্তর
তবে, এই আবেদনের জবাবে NCTE যা জানিয়েছে, তা শিক্ষক মহলের উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। NCTE-এর রেগুলেশন ডিভিশন থেকে ১৪ই অক্টোবর প্রেরিত উত্তরে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, এই কেসটি “বন্ধ” করা হয়েছে।
NCTE-এর যুক্তি হলো, “বিষয়টি ইতিমধ্যেই মাননীয় সুপ্রিম কোর্ট অফ ইন্ডিয়া দ্বারা নির্ধারিত হয়েছে।” এর সহজ অর্থ হলো, যেহেতু দেশের সর্বোচ্চ আদালত এই বিষয়ে রায় দিয়ে দিয়েছে, তাই NCTE এই মুহূর্তে তাদের নিয়ম ও প্রবিধানে কোনো রকম পরিবর্তন আনার কথা ভাবছে না। অর্থাৎ, শিক্ষকদের টেট পাশের জন্য যে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে, তা আপাতত বহাল থাকছে এবং NCTE এই বিষয়ে নতুন করে কোনো পদক্ষেপ নেবে না।