Savings Account Tax Rule: আপনার Savings Account-এর উপর তীক্ষ্ণ নজর রাখছে আয়কর দপ্তর! এই ১০টি লেনদেনে আসতে পারে নোটিশ
Savings Account Tax Rule: আমরা প্রতিদিন সেভিংস অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা জমা বা তোলা, অনলাইন পেমেন্ট এবং অর্থ স্থানান্তর করে থাকি। কিন্তু আপনি কি জানেন যে আপনার এই সাধারণ লেনদেনগুলোও আয়কর দপ্তরের নজরে আসতে পারে? যদি ভাবেন সেভিংস অ্যাকাউন্ট শুধুমাত্র টাকা জমানো বা খরচ করার একটি মাধ্যম, তাহলে জেনে রাখুন, আয়কর দপ্তর এখন প্রতিটি বড় লেনদেনের উপর কড়া নজর রাখে। বিশেষ করে যখন আপনার অ্যাকাউন্টে ঘন ঘন বড় অঙ্কের টাকা আসছে বা যাচ্ছে, অথবা আপনার আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের কোনো মিল থাকছে না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যাঙ্ক এবং আয়কর দপ্তর কিছু নির্দিষ্ট ধরনের লেনদেন বিশেষভাবে ট্র্যাক করে। যদি এই লেনদেনগুলি আপনার আয়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হয়, তবে আপনি আয়কর দপ্তরের কাছ থেকে নোটিশ পেতে পারেন। চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট অভিষেক সোনি এবং তরুণ কুমার মদনের মতে, আপাতদৃষ্টিতে সাধারণ লেনদেনও অনেক সময় আয়কর তদন্তের কারণ হতে পারে।
আসুন জেনে নেওয়া যাক এমন ১০টি কারণ, যা আপনার সেভিংস অ্যাকাউন্টকে আয়কর দপ্তরের র্যাডারে নিয়ে আসতে পারে।
সেভিংস অ্যাকাউন্টের যে ১০টি লেনদেনের উপর নজর রাখা হয়
১. বড় অঙ্কের নগদ জমা: যদি আপনি একটি আর্থিক বছরে আপনার অ্যাকাউন্টে ১০ লক্ষ টাকা বা তার বেশি নগদ জমা করেন, তাহলে ব্যাঙ্ক সেই তথ্য আয়কর দপ্তরকে জানায়। এটি বেআইনি না হলেও, আপনাকে এর উৎস সম্পর্কে জানাতে হতে পারে। তাই উপহার, সম্পত্তি বিক্রয় বা ব্যবসায়িক আয় সম্পর্কিত সমস্ত প্রমাণপত্র সাবধানে রাখুন।
সবার আগে খবরের আপডেট পান!
টেলিগ্রামে যুক্ত হন২. ক্রেডিট কার্ডের বড় পেমেন্ট: যদি আপনি এক বছরে ক্রেডিট কার্ডের বিল বাবদ নগদে ১ লক্ষ টাকার বেশি বা মোট ১০ লক্ষ টাকার বেশি পেমেন্ট করেন, তবে সেই তথ্যও রিপোর্ট করা হয়। আয়কর দপ্তর খতিয়ে দেখে যে আপনার জীবনযাত্রা আপনার আয়কর রিটার্নে দেখানো আয়ের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ কিনা।
৩. ঘন ঘন বা বড় অঙ্কের নগদ তোলা: আপনার অ্যাকাউন্ট থেকে বারবার বড় অঙ্কের টাকা তোলা বা হঠাৎ করে নগদের প্রবাহ বেড়ে যাওয়াও প্রশ্ন তুলতে পারে। এটি আপনার আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হলে সমস্যা হতে পারে।
৪. ৩০ লক্ষ বা তার বেশি মূল্যের সম্পত্তি কেনাবেচা: যদি আপনি ৩০ লক্ষ বা তার বেশি মূল্যের কোনো সম্পত্তি কেনা-বেচা করেন, তাহলে রেজিস্টার অফিস থেকে সেই তথ্য আয়কর দপ্তরের কাছে চলে যায়। দপ্তর তখন আপনার অর্থের উৎস খতিয়ে দেখে।
৫. নিষ্ক্রিয় অ্যাকাউন্টে হঠাৎ লেনদেন: যদি একটি দীর্ঘ সময় ধরে নিষ্ক্রিয় থাকা অ্যাকাউন্টে হঠাৎ করে বড় অঙ্কের লেনদেন শুরু হয়, তাহলে ব্যাঙ্ক সেটিকে ফ্ল্যাগ করতে পারে। এই পরিস্থিতিতে ব্যবসা, উত্তরাধিকার বা অন্য কোনো বৈধ কারণ সম্পর্কিত নথি সাবধানে রাখুন।
৬. বিদেশে বড় অঙ্কের লেনদেন: যদি আপনি এক বছরে ১০ লক্ষ টাকা বা তার বেশি মূল্যের বিদেশী লেনদেন করেন, যেমন আন্তর্জাতিক কার্ড পেমেন্ট বা ফরেন এক্সচেঞ্জ, তাহলে আয়কর নোটিশ আসতে পারে, বিশেষ করে যদি আপনার আয় তার তুলনায় কম দেখানো হয়।
৭. ব্যাঙ্ক সুদ এবং ITR-এর মধ্যে পার্থক্য: যদি আপনার ব্যাঙ্ক দ্বারা রিপোর্ট করা সুদের পরিমাণ এবং আপনার আয়কর রিটার্নে দেখানো সুদের মধ্যে কোনো গরমিল থাকে, তবে আপনি নোটিশ পেতে পারেন। সর্বদা Form 26AS এবং AIS (Annual Information Statement) এর সাথে আপনার সুদের পরিমাণ মিলিয়ে নিন।
৮. সেভিংস অ্যাকাউন্টের সুদ কম হলেও দেখানো: আপনার অ্যাকাউন্টের সুদ ১০,০০০ টাকার কম হলেও তা AIS-এ দেখানো হয়। যদি আপনি রিটার্নে এটি উল্লেখ না করেন, তবে ডেটা গরমিলের কারণে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নোটিশ আসতে পারে।
৯. একাধিক অ্যাকাউন্টের সুদ যোগ না করা: একাধিক সেভিংস অ্যাকাউন্ট থাকা কোনো সমস্যা নয়, কিন্তু সব অ্যাকাউন্টের সুদ যোগ করে ITR-এ দেখানো বাধ্যতামূলক। সিস্টেমটি খুব সংবেদনশীল এবং ছোটখাটো ভুলও ধরে ফেলতে পারে।
১০. অন্যের জন্য পেমেন্ট করা: যদি আপনি উৎসবের মরসুমে অন্যের কেনাকাটার জন্য আপনার কার্ড থেকে পেমেন্ট করেন এবং সেই ব্যক্তি আপনাকে নগদে টাকা ফেরত দেয়, তাহলে সেই লেনদেন ট্র্যাক হতে পারে। এই টাকা আপনার অ্যাকাউন্টে জমা হলে রিপোর্টিং সীমা অতিক্রম করতে পারে এবং আপনার কাছে ট্যাক্স নোটিশ আসতে পারে।
কীভাবে আয়কর দপ্তরের নজর এড়াবেন?
আয়কর দপ্তর প্যান-ভিত্তিক অটো-রিপোর্টিং সিস্টেমের মাধ্যমে সমস্ত বড় লেনদেন পর্যবেক্ষণ করে। তাই, ITR ফাইল করার আগে আপনার AIS এবং Form 26AS ভালোভাবে পরীক্ষা করুন। প্রতিটি বড় লেনদেনের জন্য সঠিক প্রমাণপত্র রাখুন এবং অন্যের জন্য লেনদেন করার সময় স্বচ্ছতা বজায় রাখুন।