Primary Recruitment: প্রাথমিকে ‘Unabsorbed’ বিতর্ক, নিয়োগ হবে শুধু মেধার ভিত্তিতেই! ডিভিশন বেঞ্চের কড়া নির্দেশে নতুন মোড়
Primary Recruitment: কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে ২০২২ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে হওয়া একটি মামলার শুনানি ঘিরে তৈরি হয়েছে তীব্র চাঞ্চল্য। ‘Unabsorbed’ বা অসংরক্ষিত তকমা পাওয়া চাকরিপ্রার্থীদের করা মামলায় ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশ নিয়োগ বিতর্কে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। মামলাকারীদের আইনজীবী আলি আহসান আলমগীরের বক্তব্য অনুযায়ী, আদালত স্পষ্ট করে দিয়েছে যে পাবলিক এমপ্লয়মেন্ট বা সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে একমাত্র মাপকাঠি হওয়া উচিত মেধা।
কী এই ‘Unabsorbed’ বিতর্ক?
ওয়েস্ট বেঙ্গল বোর্ড অফ প্রাইমারি এডুকেশন (WBBPE) ২০২২ সালে ১১,৭৬৫টি শূন্যপদের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি করে। পরবর্তীকালে, ২০-২২ ডি.এল.এড সংক্রান্ত একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্টে বোর্ড হলফনামা দিয়ে জানায় যে তারা মাত্র ৯,৫৩৩ জন যোগ্য প্রার্থী পেয়েছে। বাকিদের একটি নতুন ক্যাটাগরি, ‘Unabsorbed’-এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
আইনজীবী আলমগীরের মতে, এই ‘Unabsorbed’ শব্দটি নিয়োগের ইতিহাসে সম্ভবত প্রথম। এর মাধ্যমে প্রার্থীদের একেবারে বাতিল করে দেওয়া হয়নি। এমপ্যানেলড হওয়া শেষ প্রার্থীর নম্বরের সাথে এই প্রার্থীদের নম্বরের পার্থক্য খুবই সামান্য, প্রায় ভগ্নাংশের সমান। আবেদনকারীদের অভিযোগ, বোর্ড ইচ্ছাকৃতভাবে ১১,৭৬৫ শূন্যপদের মধ্যে থেকে ৯,৫৩৩ জনকে বেছে নিয়ে বাকি পদগুলিতে যোগ্য প্রার্থী নেই বলে দাবি করছে।
আবেদনকারীদের মূল দাবি কী?
আবেদনকারীদের মূল বক্তব্য অত্যন্ত স্পষ্ট। তাদের দাবি, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মেধার বাইরে অন্য কোনো বিষয় বিচার্য হতে পারে না। এই মামলার মূল ভিত্তি কয়েকটি বিষয়ের উপর দাঁড়িয়ে আছে:
সবার আগে খবরের আপডেট পান!
টেলিগ্রামে যুক্ত হন- মেধার প্রাধান্য: আবেদনকারীদের মতে, যদি তাদের থেকে কম নম্বর পেয়ে অন্য কোনো প্রার্থী, এমনকি ২০-২২ ডি.এল.এড ব্যাচের প্রার্থীও চাকরি পান, তবে তা হবে মেধার অবমাননা।
- সুপ্রিম কোর্টের আদেশের ভুল ব্যাখ্যা: বোর্ডের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা সুপ্রিম কোর্টের একটি নির্দেশকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। সুপ্রিম কোর্ট ২০-২২ ব্যাচের প্রার্থীদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের যোগ্যতা দিয়েছে, কিন্তু অবশিষ্ট শূন্যপদগুলি শুধুমাত্র তাদের জন্য সংরক্ষিত করতে বলেনি।
- বোর্ডের একপেশে মনোভাব: আবেদনকারীদের আশঙ্কা, বোর্ড শুধুমাত্র একটি বিশেষ শ্রেণীর প্রার্থীদের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে, যা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং খেয়ালখুশি মতো আচরণের সামিল।
ডিভিশন বেঞ্চের কড়া নির্দেশ
প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চলা শুনানির পর ডিভিশন বেঞ্চ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিয়েছে। বোর্ডকে একটি হলফনামা দিয়ে লিখিত আকারে জানাতে বলা হয়েছে যে, অবশিষ্ট শূন্যপদে নিয়োগ শুধুমাত্র মেধার ভিত্তিতেই হবে। এর পাশাপাশি, আদালত এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছে যে আবেদনকারীদের (পিটিশনার) থেকে কম নম্বর পাওয়া কোনো প্রার্থীকে নিয়োগ করা যাবে না।
আইনজীবীর মতে, এই নির্দেশের ফলে বোর্ড একটি কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন। কারণ, যদি কম নম্বর প্রাপ্তদের নিয়োগ না করা হয়, তবে শূন্যপদ পূরণের জন্য বোর্ডের কাছে ‘Unabsorbed’ প্রার্থীদের বিবেচনা করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না। আবেদনকারীরা আরও জানিয়েছেন, বোর্ড যদি যোগ্য প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও ইচ্ছাকৃতভাবে পদ খালি রাখে, তবে তারা আবার আদালতের দ্বারস্থ হবেন। আগামী ১৩ তারিখে এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে এবং আবেদনকারীরা একটি সুষ্ঠু সমাধানের আশায় তাকিয়ে আছেন।