শিক্ষা

32000 Case Update: ৩২ হাজার শিক্ষক নিয়োগ মামলায় পর্ষদের মেগা উত্তর! এস বসু রায় এন্ড কোম্পানি ও র‍্যাঙ্ক জাম্পিং নিয়ে আদালতে ঝড়

32000 Case Update: পশ্চিমবঙ্গের বহুচর্চিত ৩২,০০০ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ মামলার শুনানি চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। আজকের শুনানিতে রাজ্যের পক্ষে অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পর্ষদের অবস্থান স্পষ্ট করেন। বিচারপতি মূলত দুটি প্রধান বিষয়ের উপর আলোকপাত করার নির্দেশ দেন: নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এস বসু রায় এন্ড কোম্পানির ভূমিকা এবং বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের জমা দেওয়া চার্জশিটের জবাব।

এস বসু রায় এন্ড কোম্পানির ভূমিকা কী ছিল?

অ্যাডভোকেট জেনারেল আদালতে জানান যে, ৪ অক্টোবর ২০১৬ সালের একটি বোর্ড রেজল্যুশনের মাধ্যমে এস বসু রায় এন্ড কোম্পানিকে কিছু প্রশাসনিক দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। এই প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত গোপনীয় ছিল এবং এর মধ্যে প্রায় ১ লক্ষ ২৫ হাজার প্রার্থীর আবেদনপত্র বাছাই, জেলাভিত্তিক তালিকা প্রস্তুত করা, এবং ইন্টারভিউয়ের জন্য তালিকা ও অ্যাটেন্ডেন্স শিট তৈরির মতো কাজ অন্তর্ভুক্ত ছিল। এজি জোর দিয়ে বলেন যে, এই কোম্পানিকে প্রার্থীদের মূল্যায়ন বা অ্যাসেসমেন্টের কোনো দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। তাদের কাজ ছিল সম্পূর্ণ প্রশাসনিক এবং সহায়তামূলক।

সিবিআই চার্জশিট এবং স্কুটিনির দায়িত্ব

সিবিআই চার্জশিটের জবাবে এজি জানান, এস বসু রায় এন্ড কোম্পানিকে শুধুমাত্র প্রিন্টিং এবং ফরম্যাট তৈরির জন্য টেন্ডার দেওয়া হয়েছিল। শুনানিতে বিচারপতি রুল ৭-এর প্রসঙ্গ তুললে এজি প্রথমে কিছুটা বিভ্রান্ত হলেও পরে তথ্যপ্রমাণ দাখিল করে বলেন যে, আবেদনপত্র স্কুটিনির জন্য ডিআই (DI), এসআই (SI), এবং এআই (AI) আধিকারিকদের নিয়ে সাব-কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এস বসু রায় এন্ড কোম্পানির উপর এই দায়িত্ব ছিল না। এই তথ্যের ভিত্তিতে বিচারপতি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, সংস্থাটি শুধুমাত্র প্রস্তুতির কাজ করেছিল, মূল্যায়নের নয়।

এজি বালুরঘাটের উদাহরণ দিয়ে ব্যাখ্যা করেন যে, ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া সাব-কমিটিগুলিই পরিচালনা করত। এর জন্য স্থানীয় স্কুল কর্তৃপক্ষ, পুলিশ এবং ডিএম/ডিআই-কে নোটিশ দেওয়া হয়েছিল, যা প্রমাণ করে যে মূল্যায়নের সঙ্গে এস বসু রায় এন্ড কোম্পানি যুক্ত ছিল না।

সবার আগে খবরের আপডেট পান!

টেলিগ্রামে যুক্ত হন

বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের তথ্যের পাল্টা জবাব

বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের দাখিল করা বিভিন্ন তথ্যকে “ভুল সাবমিশন” বলে আখ্যা দেন এজি। তিনি কয়েকটি উদাহরণ তুলে ধরেন:

  • প্যারা ১০: যে চারজন প্রার্থীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তাঁরা প্রশিক্ষিত এবং ২০১৮ সালের আদালতের নির্দেশেই চাকরি পেয়েছিলেন।
  • প্যারা ১১: কিছু প্রার্থী যাদের বোর্ড টার্মিনেট করেছিল, তাঁরাও পরবর্তীকালে আদালতের নির্দেশে চাকরি ফিরে পান।
  • অন্যান্য প্রার্থী: এজি আরও জানান, ৯৪ জন প্রার্থী (যারা অন্য রাজ্য থেকে বা টেট পাস না) এবং ৮৪ জন প্রার্থীর (প্যারা ১৭) অধিকাংশই আদালতের নির্দেশেই চাকরিতে বহাল আছেন।

র‍্যাঙ্ক জাম্পিং এবং প্যানেল বিতর্ক

র‍্যাঙ্ক জাম্পিং-এর প্রসঙ্গে আইনজীবী জানান যে, এটি মূলত জেলা কোড নম্বরের কারণে ঘটেছে। যেমন, পুরুলিয়ার কোড ১৭। সাবির আহমেদ নামে এক প্রার্থী বেশি শূন্যপদের জন্য অন্য জেলায় (আলিপুরদুয়ার) আবেদন করেন। তাঁদের টেট রোল নম্বর এক হওয়ায় এটিকে র‍্যাঙ্ক জাম্পিং বলে মনে হলেও, এটি আসলে ভিন্ন জেলার ভিন্ন কাট-অফের ফল।

প্যানেল প্রকাশ নিয়ে বিতর্কের জবাবে এজি বলেন, মামলাকারীরাই তাঁদের রিট আবেদনে প্যানেল জমা দিয়েছিলেন। যদিও আবেদনকারীদের আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি দাবি করেন, সেটি মেরিট লিস্ট ছিল, রাজ্যভিত্তিক প্যানেল নয়। এজি পাল্টা দাবি করেন যে, বোর্ড ডিপিএসসি-র মাধ্যমে প্যানেল প্রকাশ করে তা দেওয়ালে টাঙিয়ে দিয়েছিল। শুনানির শেষে মাননীয় বিচারপতি ঋতব্রত কুমার মিত্রর একটি মন্তব্য এবং তরুণজ্যোতি তিওয়ারির ৫০০০+ প্রার্থীর জন্য চাকরির আবেদন মামলাটিতে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। মামলার পরবর্তী শুনানির দিকেই এখন সকলের নজর।

WBPAY Team

আমাদের প্রতিবেদন গুলি WBPAY Team এর দ্বারা যাচাই করে লেখা হয়। আমরা একটি স্বাধীন প্ল্যাটফর্ম যা পাঠকদের জন্য স্পষ্ট এবং সঠিক খবর পৌঁছে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের লক্ষ্য এবং সাংবাদিকতার মান সম্পর্কে জানতে, অনুগ্রহ করে আমাদের About us এবং Editorial Policy পৃষ্ঠাগুলি পড়ুন।
Back to top button