WB DA Case: সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলার রায় কবে? কর্মচারী সংগঠনের বার্তায় উঠে এল আসল সত্য ও বর্তমান পরিস্থিতি
WB DA Case: পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মীদের দীর্ঘদিনের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা বা ডিএ (DA) মামলার রায় নিয়ে বর্তমানে কর্মীদের মনে চরম উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। রাজ্য সরকারি কর্মীদের এই দীর্ঘ প্রতীক্ষিত মামলার ভবিষ্যৎ এবং বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সম্প্রতি এক বিশেষ বার্তা দিয়েছেন কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ-এর সভাপতি শ্যামল কুমার মিত্র। কর্মীদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান হতাশার প্রেক্ষাপটে তিনি মামলার খুঁটিনাটি এবং বিচার ব্যবস্থার বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছেন।
কর্মীদের উদ্বেগ ও আইনি লড়াইয়ের বাস্তবতা
দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর ধরে চলা এই মামলা নিয়ে সরকারি কর্মীদের একাংশের মধ্যে হতাশা দানা বেঁধেছে। ২০১৬ সালে শুরু হওয়া এই আইনি লড়াই এখনও সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। কর্মরত এবং অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের অনেকেই সংগঠনের কাছে জানতে চাইছেন, আদৌ সুপ্রিম কোর্ট থেকে এই মামলার রায় বেরোবে কিনা, এবং যদি রায় বের হয় তবে রাজ্য সরকার তা কার্যকর করবে কিনা। শ্যামল কুমার মিত্র এই উদ্বেগকে স্বাভাবিক বলে মেনে নিয়েও বিচার ব্যবস্থার ওপর আস্থা রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।
বিচার ব্যবস্থার বর্তমান চ্যালেঞ্জ ও পরিসংখ্যান
শ্যামলবাবু ভারতের বিচার ব্যবস্থার বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে ল কমিশনের ১২০তম রিপোর্টের তথ্য তুলে ধরেন। তিনি জানান, বিচারপতির অভাব এবং বিপুল মামলার চাপে আদালতগুলি ধুঁকছে। ‘দামিনী’ সিনেমার বিখ্যাত সংলাপ “তারিখ পে তারিখ”-এর প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, এটি এখন কেবল সিনেমার সংলাপ নয়, বাস্তবেও সত্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী বিচার ব্যবস্থার চিত্রটি নিম্নরূপ:
সবার আগে খবরের আপডেট পান!
টেলিগ্রামে যুক্ত হন| বিবরণ | পরিসংখ্যান |
|---|---|
| প্রয়োজনীয় বিচারক (প্রতি ১ লক্ষে) | ৫০ জন |
| বর্তমান বিচারক (প্রতি ১ লক্ষে) | মাত্র ২১ জন |
| সারা দেশে মোট বকেয়া মামলা | প্রায় ৪.৫ কোটি |
| হাইকোর্টগুলোতে বকেয়া মামলা | ৬৫ লক্ষ |
| সুপ্রিম কোর্টে বকেয়া মামলা | প্রায় ৮৮ হাজার |
মামলার অতীত সাফল্য: লড়াই বিফলে যায়নি
কর্মীদের অনেকেই মনে করছেন এই দীর্ঘ আন্দোলনে কোনো ফল মেলেনি। কিন্তু শ্যামল কুমার মিত্র মনে করিয়ে দেন যে, এই আইনি লড়াইয়ের ফলেই অতীতে উল্লেখযোগ্য সাফল্য এসেছে। কলকাতা হাইকোর্টের চাপে এবং নির্দেশে কর্মীরা ধাপে ধাপে বকেয়া ডিএ পেয়েছেন:
- প্রথম ধাপ: বিচারপতি নিশিতা মাত্রে এবং বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশে ১/১/২০১৮ থেকে অতিরিক্ত ১৫ শতাংশ ডিএ পাওয়া গিয়েছিল।
- দ্বিতীয় ধাপ: পরবর্তীতে ১/১/২০১৯ থেকে আরও ২৫ শতাংশ ডিএ আদায় করা সম্ভব হয়েছে।
- মোট প্রাপ্তি: সব মিলিয়ে পুরনো বেতনক্রমের ওপর মোট ৪০ শতাংশ ডিএ এই মামলার ফলেই আদায় করা গেছে। ২০২২ সালে এই মামলাটি কলকাতা হাইকোর্টে ‘সর্বসেরা মামলা’ হিসেবে স্বীকৃতিও পেয়েছিল।
কবে মিলবে চূড়ান্ত রায়?
সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো, মামলার চূড়ান্ত রায় কবে আসবে? এই প্রসঙ্গে শ্যামলবাবু স্পষ্ট জানিয়েছেন যে, রায় ঘোষণার কোনো নির্দিষ্ট দিনক্ষণ বা ভবিষ্যদ্বাণী করা সম্ভব নয়। একমাত্র যেদিন সংশ্লিষ্ট দুই বিচারপতির বেঞ্চ বসবে এবং আদালতের ‘কজ লিস্ট’ (Cause List) বা ‘সাপ্লিমেন্টারি কজ লিস্ট’-এ “কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ অ্যান্ড আদার্স বনাম স্টেট অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল অ্যান্ড আদার্স” মামলার নাম তালিকাভুক্ত হবে, সেদিনই রায় ঘোষণা হতে পারে। এর বাইরে কোনো নির্দিষ্ট তারিখ অনুমান করা ভিত্তিহীন।
আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় না হলে বিচার ব্যবস্থার ওপর আস্থা রাখা ছাড়া কর্মীদের সামনে অন্য কোনো পথ খোলা নেই বলেই তিনি মত প্রকাশ করেন।