SSC Supreme Court Case: এসএসসি ১০ নম্বর মামলায় সুপ্রিম কোর্টে জোর সওয়াল, কবে হবে চূড়ান্ত ফয়সালা? জানুন আজকের আপডেট
SSC Supreme Court Case: পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ ও আইনি জটিলতার মাঝেই আজ সুপ্রিম কোর্টে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। বিশেষ করে এসএসসির ১০ নম্বর বা টিচিং এক্সপেরিয়েন্স (Teaching Experience) সংক্রান্ত মামলাটি, যা ‘বিজয় বিশ্বাস মামলা’ নামেও পরিচিত, আজ আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। হাজার হাজার যোগ্য চাকরিপ্রার্থী এই শুনানির দিকে তাকিয়ে ছিলেন। যদিও সময়ের অভাবে আজ দীর্ঘ শুনানি সম্ভব হয়নি, তবুও আইনজীবীদের যুক্তিতর্কে বেশ কিছু তাৎপর্যপূর্ণ দিক উঠে এসেছে।
আজকের এই প্রতিবেদনে সুপ্রিম কোর্টের শুনানির খুঁটিনাটি এবং আগামী ২৬ তারিখে কী হতে চলেছে, তা বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
শুনানির সময় ও প্রেক্ষাপট
আজ সুপ্রিম কোর্টে নতুন প্রধান বিচারপতির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান থাকার কারণে আদালতের স্বাভাবিক কাজকর্ম কিছুটা দেরিতে শুরু হয়। দুপুর ১২টা নাগাদ আদালতের কার্যক্রম শুরু হওয়ার ফলে, কার্যত তালিকার শেষের দিকের মামলাগুলির শুনানির সময় কমে আসে। ৫২ নম্বর সিরিয়ালে থাকা এসএসসি সংক্রান্ত এই মামলাটির শুনানি শুরু হয় আনুমানিক বিকেল ৩:২০ বা ৩:২৫ মিনিট নাগাদ। শুনানি চলে মাত্র ৪ থেকে ৫ মিনিট। এই স্বল্প সময়ের মধ্যেই আইনজীবীরা তাদের মোক্ষম যুক্তিগুলি বিচারপতির সামনে তুলে ধরেন।
শুনানিতে উপস্থিত বিশিষ্ট আইনজীবীবৃন্দ
আজকের শুনানিতে উভয় পক্ষের হয়ে দেশের স্বনামধন্য আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। এক নজরে দেখে নিন কারা ছিলেন আজকের শুনানিতে:
সবার আগে খবরের আপডেট পান!
টেলিগ্রামে যুক্ত হন| আইনজীবীর নাম | পক্ষ/ভূমিকা |
|---|---|
| কপিল সিবাল | সিনিয়র অ্যাডভোকেট |
| মেনকা গুরুস্বামী | পিটিশনারদের পক্ষে (যোগ্য প্রার্থীরা) |
| পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি পাটুয়ালিয়া | সিনিয়র অ্যাডভোকেট |
| কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় | রাজ্য/এসএসসির পক্ষে সওয়াল করেন |
| বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য | কলকাতা হাইকোর্ট থেকে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন |
আইনজীবীদের সওয়াল ও পাল্টা যুক্তি
যদিও শুনানি স্বল্পস্থায়ী ছিল, তবুও আইনজীবীদের বক্তব্যে মামলার মূল সুরটি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। মূলত তিনটি প্রধান যুক্তি আজ আদালতে পেশ করা হয়:
১. মেনকা গুরুস্বামীর যুক্তি (লেজিসলেটিভ বিষয়):
যোগ্য বা ‘আন-টেইন্টেড’ (Untainted) শিক্ষকদের পক্ষ থেকে মেনকা গুরুস্বামী জোরালো যুক্তি পেশ করেন। তিনি আদালতকে জানান, এই মামলাটি মূলত যোগ্য এবং অযোগ্যদের পৃথক করার উদ্দেশ্যে শুরু হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে বিষয়টি ‘টিচিং এক্সপেরিয়েন্স’ বা অভিজ্ঞতার ১০ নম্বর যোগ করার আইনি জটিলতায় আটকে গেছে। তাঁর মতে, ইন্টারভিউর আগে এই ১০ নম্বর যোগ হবে নাকি পরে, তা সম্পূর্ণভাবে একটি বিধিবদ্ধ বা লেজিসলেটিভ বিষয়, যা গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে নির্ধারিত। তাই হাইকোর্টের এই প্রশাসনিক বা নীতিগত বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়।
২. কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্বেগ:
প্রবীণ আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন যে, ইতিপূর্বে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে এই ১০ নম্বরের বিষয়টি নিয়ে একটি মামলা হয়েছিল এবং তা খারিজ (Dismiss) করে দেওয়া হয়েছিল। তিনি কিছুটা ক্ষোভের সুরেই জানান, বর্তমানে সুপ্রিম কোর্ট যেসব বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে, হাইকোর্টও সেই একই পথে হাঁটছে। তিনি পরোক্ষভাবে পূর্ণিমা পালের মামলার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, যেহেতু নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে এবং প্রক্রিয়াটি শেষের পথে, তাই আদালতের দ্রুত হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
৩. বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের বিরোধিতা:
অনলাইনে উপস্থিত হয়ে বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য এর বিরোধিতা করেন। তিনি স্পষ্ট জানান, কলকাতা হাইকোর্ট কোনো এখতিয়ার বহির্ভূত কাজ করছে না, বরং ‘সাংবিধানিক বৈধতা’ (Constitutional Validity) ক্ষুণ্ণ হচ্ছে কিনা, তা যাচাই করতেই হস্তক্ষেপ করেছে। আদালত তার নিজস্ব নিয়ম মেনেই এগোচ্ছে।
আগামী ২৬ তারিখ: আশার আলো নাকি ফের অপেক্ষা?
সময়ের অভাবে বিচারপতি আজ বিস্তারিত শুনানি শোনেননি, তবে তিনি উভয় পক্ষের বক্তব্য নোট করেছেন এবং হাইকোর্টের হস্তক্ষেপের বিষয়টি আমলে নিয়েছেন।
- পরবর্তী তারিখ: মামলাটি আগামী ২৬ তারিখের জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
- সম্ভাব্য ফলাফল: আশা করা হচ্ছে, ২৬ তারিখে বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চে ১০ নম্বর সংক্রান্ত জটিলতা (নম্বর আগে না পরে যোগ হবে) নিয়ে একটি স্পষ্ট নির্দেশিকা বা চূড়ান্ত রায় (Final Clarification) আসতে পারে।
চাকরিপ্রার্থীদের জন্য আগামী ২৬ তারিখ অত্যন্ত ভাইটাল। ১০ নম্বরের এই আইনি জট খুললে নিয়োগ প্রক্রিয়াটি আরও দ্রুত গতিতে এগোবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সকলের নজর এখন সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী আদেশের দিকে।