SSC Case Update: এসএসসির চালে জল ঢালল সুপ্রিম কোর্ট! ‘অযোগ্য’দের নিয়ে চূড়ান্ত নির্দেশ, চাকরিপ্রার্থীদের জন্য বিরাট খবর
SSC Case Update: পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আজ, ২৬শে নভেম্বর ২০২৫, সুপ্রিম কোর্টে এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শুনানি সম্পন্ন হয়েছে। বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চে চলা এই মামলায় স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি (SSC)-র ভূমিকা নিয়ে কড়া পর্যবেক্ষণ দিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। আজকের শুনানিতে এসএসসি একাধিকবার ভর্ৎসনার মুখে পড়েছে এবং তাদের কিছু বিতর্কিত দাবি সরাসরি খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে ‘টেন্টেড’ বা দুর্নীতিগ্রস্ত প্রার্থীদের নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে এসএসসির আর্জি মেনে নেয়নি আদালত, যা যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের জন্য এক বড় জয় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
দাগি প্রার্থীদের নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের কড়া অবস্থান
আজকের শুনানির মূল কেন্দ্রবিন্দু ছিল এসএসসির একটি বিশেষ এসএলপি (SLP)। কমিশন আদালতে দাবি জানিয়েছিল যে, আদালতের পূর্ববর্তী রায় অনুযায়ী ‘টেন্টেড’ বা দাগি তালিকার অন্তর্ভুক্ত বিশেষভাবে সক্ষম (PH) প্রার্থীদের নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সুযোগ দেওয়া উচিত। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট এই দাবি সরাসরি নাকচ করে দিয়েছে।
বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, কোনো অবস্থাতেই দুর্নীতিগ্রস্ত বা ‘টেন্টেড’ ক্যান্ডিডেটদের—তা সে সাধারণ ক্যাটাগরির হোক বা প্রতিবন্ধী—নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে দেওয়া যাবে না। অর্থাৎ, যারা অনৈতিক উপায়ে প্যানেলে জায়গা করে নিয়েছিল, তাদের চাকরির কোনো সুযোগ আর অবশিষ্ট রইল না। আদালতের এই নির্দেশ স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়ার পক্ষে একটি বড় পদক্ষেপ।
এসএসসি ও রাজ্য সরকারের ভূমিকায় আদালতের অসন্তোষ
মামলা চলাকালীন আদালত এসএসসির কার্যপদ্ধতি নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে। সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়া সেই সময়ের নিয়ম এবং প্রার্থীদের নিয়েই সম্পন্ন হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু কমিশন নতুন শূন্যপদ (Vacancy) যোগ করে এবং নতুন নিয়ম প্রবর্তন করে পুরো প্রক্রিয়াটিকে জটিল করে তুলেছে। আদালত পরিষ্কার ভাষায় জানিয়েছে, আজকের এই আইনি জটিলতার জন্য এসএসসি এবং রাজ্য সরকারই দায়ী। তাদের অযৌক্তিক পদক্ষেপের ফলেই যোগ্য প্রার্থীরা দীর্ঘ সময় ধরে বঞ্চিত হয়ে রয়েছেন।
সবার আগে খবরের আপডেট পান!
টেলিগ্রামে যুক্ত হনমামলা ফিরল কলকাতা হাইকোর্টে
সুপ্রিম কোর্ট আজকের শুনানিতে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিষ্পত্তির জন্য কলকাতা হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চে ফেরত পাঠিয়েছে। সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, নিচের বিষয়গুলি এখন হাইকোর্টেই বিচার্য হবে:
- ১০ নম্বরের সাংবিধানিক বৈধতা: নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ১০ নম্বরের বিভাজন বা নিয়ম নিয়ে যে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে, তার শুনানি আগামী ২৮ তারিখ কলকাতা হাইকোর্টে হবে।
- টেন্টেড তালিকা যাচাই: প্রকাশিত টেন্টেড প্রার্থীদের তালিকার বাইরে আরও কোনো অযোগ্য প্রার্থী লুকিয়ে আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখবে কলকাতা হাইকোর্ট।
- ভ্যাকেন্সি ও রুল চ্যালেঞ্জ: নতুন শূন্যপদ এবং নিয়োগের নিয়ম সংক্রান্ত সমস্ত অমীমাংসিত বিষয় হাইকোর্টেই নিষ্পত্তি হবে।
শুনানির সারসংক্ষেপ
নিচে আজকের শুনানির মূল নির্দেশিকাগুলি একটি ছকের মাধ্যমে তুলে ধরা হলো:
| বিষয় | আদালতের নির্দেশ/পর্যবেক্ষণ |
|---|---|
| টেন্টেড ক্যান্ডিডেট | কোনো দাগি প্রার্থী (সাধারণ বা PH) নতুন নিয়োগে অংশ নিতে পারবে না। |
| এসএসসির ভূমিকা | জটিলতা সৃষ্টির জন্য কমিশন ও রাজ্যকে দায়ী করেছে আদালত। |
| পরবর্তী পদক্ষেপ | সমস্ত মূল বিচার্য বিষয় কলকাতা হাইকোর্টে ফেরত পাঠানো হয়েছে। |
পরিশেষে বলা যায়, আজকের শুনানিতে যোগ্য এবং স্বচ্ছ (Freshers) প্রার্থীদের জয়ের পথ আরও প্রশস্ত হয়েছে। যারা ১০০ শতাংশ নম্বর পেয়েও ইন্টারভিউয়ের ডাক পাননি বা নিয়োগ পাননি, আদালতের এই অবস্থানে তাদের ন্যায়বিচার পাওয়ার আশা আরও প্রবল হলো।