SSC Case Update: SSC মামলায় জোর ধাক্কা! মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যানেলে চাকরি নিয়ে বিচারপতির কড়া নির্দেশ, ফের দুর্নীতির আশঙ্কা?
SSC Case Update: কলকাতা হাইকোর্টে স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি (SSC) মামলা এক নাটকীয় মোড় নিয়েছে। বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে চলা শুনানিতে উঠে এসেছে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য, যা রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়াকে আবারও প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে। আদালতের কড়া পর্যবেক্ষণ এবং নির্দেশ হাজার হাজার প্রার্থীর ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে সংশয় তৈরি করেছে। বিশেষ করে ‘টেন্টেড’ বা অযোগ্য প্রার্থীদের সুবিধা পাইয়ে দেওয়া এবং মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যানেলে নিয়োগ নিয়ে বিচারপতির ভর্ৎসনা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
দুর্নীতির আশঙ্কা ও বিচারপতির পর্যবেক্ষণ
শুনানির শুরুতেই বিচারপতি অমৃতা সিনহা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তাঁর আশঙ্কা, আদালতের কঠোর হস্তক্ষেপ ছাড়া নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আবারও কোনো বড়সড় দুর্নীতি বা ‘স্ক্যাম’ হতে পারে। বিচারপতি স্পষ্ট মন্তব্য করেন, “কেউ সঠিকভাবে কিছু প্রকাশ করতে চাইছে না, আমার মনে হচ্ছে আবারও কিছু স্ক্যাম হতে পারে।” এসএসসি কর্তৃপক্ষ বারবার অযোগ্যদের সুযোগ করে দেওয়ার চেষ্টা করছে কিনা, সেই প্রশ্নও তিনি তুলেছেন।
‘টেন্টেড’ প্রার্থীদের নিয়ে বিতর্ক ও অভিযোগ
মামলাকারীদের আইনজীবীদের দাবি, ২০২৫ সালের সিলেকশন প্রসেসে কোনোভাবেই ‘টেন্টেড’ বা কালিমালিপ্ত প্রার্থীদের সুযোগ পাওয়া উচিত নয়। অভিযোগ উঠেছে যে, এসএসসি কর্তৃপক্ষের একাংশ এখনও স্বচ্ছতার পথে হাঁটছে না।
শুনানিতে উঠে আসা প্রধান অভিযোগগুলি হল:
সবার আগে খবরের আপডেট পান!
টেলিগ্রামে যুক্ত হন- ওএমআর (OMR) বিকৃতি: ওএমআর শিট বা উত্তরপত্রে গরমিল থাকা সত্ত্বেও প্রার্থীদের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।
- র্যাঙ্ক জাম্পিং: মেধা তালিকার নিয়ম ভেঙে নিচের দিকের প্রার্থীদের চাকরি দেওয়া হয়েছে।
- তালিকায় অস্পষ্টতা: এসএসসি ১৮০০-র বেশি প্রার্থীর যে তালিকা প্রকাশ করেছে (যারা ইন্টারভিউতে ডাক পাবে না), সেখানে কাদের ওএমআর মিসম্যাচ বা কারা র্যাঙ্ক জাম্পিং করেছে, তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি।
মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যানেল বা ‘এক্সপায়ারি প্যানেল’ ইস্যু
এই মামলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও নিয়োগ চালিয়ে যাওয়া। বিচারপতি সিনহা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যানেলে যেকোনো নিয়োগ সম্পূর্ণ অবৈধ (Illegal)। এসএসসি-র আইনজীবী যুক্তি দেন যে তাঁরা দীর্ঘ নিয়োগ প্রক্রিয়া এবং আইনি জটের কারণে আদালতের নির্দেশ মেনেই কাজ করেছেন, কিন্তু বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, প্যানেল এক্সপায়ার হওয়ার পরেও কেন কাউন্সেলিং করা হলো?
আদালতের নির্দেশ ও পরবর্তী শুনানি
শুনানি শেষে বিচারপতি অমৃতা সিনহা এসএসসি-কে কড়া নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী দিনের শুনানির আগে কমিশনকে দুটি সুনির্দিষ্ট তালিকা আদালতে পেশ করতে হবে:
১. প্যানেলের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর কাদের নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে তার পূর্ণাঙ্গ তথ্য।
২. কাদের ওএমআর-এ সমস্যা রয়েছে এবং কারা র্যাঙ্ক জাম্পিং-এর মাধ্যমে চাকরি পেয়েছেন।
মামলাটির পরবর্তী শুনানি আগামী ১০ ডিসেম্বর ধার্য করা হয়েছে। বিচারপতির লিখিত অর্ডারে বলা হয়েছে, এই রিট পিটিশনের ফলাফলের ওপরই প্রার্থীদের ভাগ্য নির্ভর করছে। বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে কিছু প্রার্থী “নট স্পেশালি ফাউন্ড টু বি টেন্টেড” ক্যাটাগরিতে চাকরি করলেও, আগামী দিনে আদালতের রায়ে পরিস্থিতির পরিবর্তন হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।