Income Tax Notice: ইনকাম ট্যাক্সের নোটিশ পেয়েছেন? ভয়ের কিছু নেই! জেনে নিন ৮টি গুরুত্বপূর্ণ নোটিশের আসল মানে ও বাঁচার উপায়
Income Tax Notice: আয়কর রিটার্ন বা ITR ফাইল করার পর বা না করার কারণে অনেকেই ইনকাম ট্যাক্স ডিপার্টমেন্ট থেকে নোটিশ পেয়ে থাকেন। মোবাইলে বা ইমেলে আয়কর দপ্তরের বার্তা দেখলেই সাধারণ করদাতাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে যায়। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নোটিশ আসা মানেই বড় কোনও বিপদ নয়। অনেক সময় সামান্য তথ্য যাচাই বা ভুল সংশোধনের জন্যও দপ্তর যোগাযোগ করে থাকে।
সঠিক সময়ে রিটার্ন জমা না দেওয়া, আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের অসামঞ্জস্য কিংবা ভুল তথ্য পেশ করার মতো কারণে নোটিশ আসতে পারে। অযথা আতঙ্কিত না হয়ে, নোটিশের ভাষা এবং ধারা (Section) বুঝে সঠিক পদক্ষেপ নিলে খুব সহজেই সমস্যার সমাধান সম্ভব। আজ আমরা আলোচনা করব আয়কর দপ্তরের পাঠানো ৮টি ভিন্ন ধরণের নোটিশ এবং তাদের অর্থ নিয়ে।
কেন আসে আয়কর নোটিশ?
সাধারণত, আয়কর দপ্তরের কাছে থাকা তথ্যের সঙ্গে আপনার দেওয়া তথ্যের মিল না থাকলে নোটিশ পাঠানো হয়। এছাড়াও ব্যাঙ্কে বড় অঙ্কের লেনদেন, শেয়ার বাজারে প্রচুর বিনিয়োগ, বা ক্রেডিট কার্ডে আয়ের তুলনায় বেশি খরচ করলে দপ্তরের নজরে আসতে পারেন। মূলত ৮টি ধারায় এই নোটিশগুলি পাঠানো হয়।
নিচে একটি তালিকার মাধ্যমে সংক্ষেপে নোটিশের ধারা ও কারণগুলি তুলে ধরা হলো:
সবার আগে খবরের আপডেট পান!
টেলিগ্রামে যুক্ত হন| নোটিশের ধারা (Section) | মূল উদ্দেশ্য |
|---|---|
| সেকশন ১৪২(১) | অতিরিক্ত তথ্য বা নথিপত্র তলব করা। |
| সেকশন ১৪৩(১) | রিটার্ন প্রসেসিংয়ের পর প্রাথমিক তথ্য (Intimation)। |
| সেকশন ১৪৮ | আয় গোপন করার সন্দেহ হলে। |
| সেকশন ২৪৫ | পুরানো বকেয়া কর রিফান্ড থেকে কেটে নেওয়া। |
| সেকশন ১৫৬ | বকেয়া কর, সুদ বা জরিমানা দাবি করা (Demand Notice)। |
| সেকশন ১৩৯(৯) | ত্রুটিপূর্ণ রিটার্ন বা Defective Return। |
| সেকশন ১৪৩(২) | স্ক্রুটিনি বা বিস্তারিত তদন্তের জন্য। |
| সেকশন ১৩৩(৬) | আয় বেশি কিন্তু রিটার্ন ফাইল না করলে। |
নোটিশের বিস্তারিত বিবরণ
১. সেকশন ১৪২(১) নোটিশ: যখন আয়কর আধিকারিক আপনার রিটার্ন সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য বা প্রমাণাদি চান, তখন এই নোটিশ পাঠানো হয়। এছাড়াও যারা রিটার্ন ফাইল করেননি, তাঁদেরকেও এই ধারায় নোটিশ পাঠিয়ে জবাব চাওয়া হতে পারে।
২. সেকশন ১৪৩(১) ইনটিমেশন: এটি আসলে কোনও ভয়ের নোটিশ নয়। সেন্ট্রাল প্রসেসিং সেন্টার (CPC) থেকে আপনার রিটার্ন প্রসেস হওয়ার পর এটি পাঠানো হয়। এতে জানানো হয় যে আপনার দেওয়া হিসেব এবং দপ্তরের হিসেব মিলেছে কি না।
৩. সেকশন ১৪৮ নোটিশ: যদি আয়কর দপ্তর মনে করে যে আপনি আপনার আয়ের কোনও অংশ গোপন করেছেন বা সঠিক তথ্য দেননি, তখন এই কড়া নোটিশটি পাঠানো হয়। একে ‘ইনকাম এস্কেপিং অ্যাসেসমেন্ট’ও বলা হয়।
৪. সেকশন ২৪৫ নোটিশ: ধরুন এ বছর আপনি রিফান্ড পাবেন, কিন্তু আগের কোনও বছরের কর বকেয়া আছে। সেক্ষেত্রে দপ্তর আপনার রিফান্ড থেকে বকেয়া টাকা কেটে নেওয়ার আগে এই নোটিশ দিয়ে আপনাকে জানাবে।
৫. সেকশন ১৫৬ ডিমান্ড নোটিশ: অ্যাসেসমেন্ট ইয়ার শেষ হওয়ার পর যদি দেখা যায় আপনার কোনও কর, সুদ বা জরিমানা দেওয়া বাকি আছে, তবে এই ডিমান্ড নোটিশ পাঠানো হয়। এখানে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশ থাকে।
৬. সেকশন ১৩৯(৯) নোটিশ: রিটার্ন ফাইল করার সময় কোনও ভুল হলে বা অসম্পূর্ণ তথ্য দিলে সেটিকে ‘ডিফেক্টিভ রিটার্ন’ বলা হয়। এই ভুলের সুযোগ দিতেই এই নোটিশ পাঠানো হয়।
৭. সেকশন ১৪৩(২) স্ক্রুটিনি নোটিশ: যদি ১৪৩(১) নোটিশের জবাবে দপ্তর সন্তুষ্ট না হয় বা আপনার ফাইলে বড়সড় গরমিল পাওয়া যায়, তবে বিস্তারিত তদন্ত বা স্ক্রুটিনির জন্য এই নোটিশ দেওয়া হয়।
৮. সেকশন ১৩৩(৬) নোটিশ: আপনার আয় করযোগ্য সীমার উপরে হওয়া সত্ত্বেও যদি রিটার্ন ফাইল না করেন, অথবা আয়ের তুলনায় খরচ অত্যধিক বেশি হয়, তবে দপ্তর তথ্য চেয়ে এই নোটিশ পাঠাতে পারে।
নোটিশ পেলে কী করবেন?
নোটিশ পাওয়া মানেই আপনি দোষী নন। প্রথমে শান্ত হয়ে নোটিশটি ভালো করে পড়ুন। এরপর আয়কর দপ্তরের অফিসিয়াল পোর্টালে লগ-ইন করে নোটিশটির সত্যতা যাচাই করুন (DIN নম্বর দিয়ে)। প্রয়োজনীয় নথিপত্র যেমন— ফর্ম ১৬, ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট, AIS এবং 26AS রিপোর্ট হাতের কাছে রাখুন এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উত্তর দিন। প্রয়োজনে একজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের পরামর্শ নিন।