দেশ

Sanchar Saathi App: ফোনে ‘সঞ্চার সাথী’ অ্যাপ থাকা কি বাধ্যতামূলক? নজরদারির অভিযোগে কী বললেন মন্ত্রী?

Sanchar Saathi App: কেন্দ্রীয় সরকার সম্প্রতি মোবাইল ফোন প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলিকে ২০২৬ সালের মার্চ মাস থেকে সমস্ত নতুন স্মার্টফোনে ‘সঞ্চার সাথী’ (Sanchar Saathi) অ্যাপ প্রি-ইনস্টল করার নির্দেশ দিয়েছে। টেলিকম বিভাগের (DoT) এই নির্দেশিকা প্রকাশ্যে আসার পরেই বিভিন্ন মহল থেকে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা বা প্রাইভেসি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। বিরোধীদের একাংশ এই পদক্ষেপকে ‘নজরদারি’ বা স্নুপিং-এর প্রচেষ্টা বলে অভিহিত করেছেন। তবে মঙ্গলবার সংসদ ভবনের বাইরে দাঁড়িয়ে এই সমস্ত অভিযোগ নস্যাৎ করে দিলেন কেন্দ্রীয় যোগাযোগ মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া।

নজরদারির অভিযোগ ও মন্ত্রীর স্পষ্ট বার্তা

যোগাযোগ মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়েছেন যে, এই অ্যাপের মাধ্যমে কোনোভাবেই নাগরিকদের ফোনে আড়িপাতা বা কল মনিটরিং করা হবে না। বিরোধীদের অভিযোগ খণ্ডন করে তিনি বলেন, “এখানে স্নুপিং বা কল মনিটরিংয়ের কোনো প্রশ্নই নেই। সরকার নাগরিকদের সুরক্ষার স্বার্থেই এই পদক্ষেপ নিয়েছে।”

মন্ত্রী আরও ব্যাখ্যা করেন যে, সরকার কেবল গ্রাহকদের সুবিধার্থে এবং সাইবার প্রতারণা রুখতে এই অ্যাপটি ফোনে দিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করছে। এটি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণভাবে গ্রাহকের নিজের হাতে থাকবে।

অ্যাপটি কি ডিলিট করা যাবে?

অনেকের মনেই প্রশ্ন ছিল যে, নতুন ফোনে এই অ্যাপটি আগে থেকেই থাকলে তা কি ডিলিট করা সম্ভব হবে? এই প্রসঙ্গে মন্ত্রী একটি সহজ উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি বুঝিয়ে দেন। তিনি বলেন, “আপনার ফোনে যেমন গুগল ম্যাপস (Google Maps) আগে থেকেই থাকে, এবং আপনি চাইলে তা ডিলিট করে দিতে পারেন, ঠিক তেমনই সঞ্চার সাথী অ্যাপটিও ডিলিট করা যাবে।”

সবার আগে খবরের আপডেট পান!

টেলিগ্রামে যুক্ত হন

মন্ত্রীর বক্তব্যের প্রধান দিকগুলো নিচে দেওয়া হলো:

বিষয়মন্ত্রীর বক্তব্য
বাধ্যবাধকতাঅ্যাপটি ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক নয়।
ডিলিট করার সুবিধাব্যবহারকারী চাইলে অ্যাপটি ডিলিট করতে পারেন।
রেজিস্ট্রেশনরেজিস্ট্রেশন না করলে অ্যাপটি নিষ্ক্রিয় (Dormant) হয়ে থাকবে।

কেন এই অ্যাপ প্রয়োজন?

সাইবার জালিয়াতি এবং ফোন চুরির ঘটনা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। মন্ত্রী সিন্ধিয়া পরিসংখ্যান তুলে ধরে জানান যে, শুধুমাত্র ২০২৪ সালেই দেশে প্রায় ২২,৮০০ কোটি টাকার প্রতারণা হয়েছে। এই বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি এবং সাইবার অপরাধ থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষা করতেই সরকার এই উদ্যোগ নিয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, “হারিয়ে যাওয়া বা চুরি হওয়া ফোন ব্লক করতে এবং প্রতারকদের হাত থেকে বাঁচতে এই অ্যাপটি একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। এটি সরকারের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে যে নাগরিকদের হাতে সুরক্ষার সরঞ্জাম পৌঁছে দেওয়া।”

বিরোধীদের ‘পেগাসাস’ খোঁচা

বিরোধীরা এই অ্যাপ বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্তকে ইজরায়েলি স্পাইওয়্যার ‘পেগাসাস’-এর সাথে তুলনা করেছেন। তাদের দাবি, এর মাধ্যমে সরকার নাগরিকদের ওপর নজরদারি চালাতে চাইছে। এই অভিযোগের কড়া জবাব দিয়েছেন সিন্ধিয়া। তিনি বলেন, “একদিকে বিরোধীরা দেশে বাড়তে থাকা ফ্রড বা প্রতারণা নিয়ে অভিযোগ করেন, আবার যখন আমরা সাধারণ মানুষের হাতে সুরক্ষার জন্য সঞ্চার সাথী তুলে দিচ্ছি, তখন তারা ‘পেগাসাস’ বলে চিৎকার করছেন।”

তিনি আরও সংযোজন করেন যে, যারা সত্য দেখতে চান না, তাদের জোর করে সত্য দেখানো সম্ভব নয়। সরকারের মূল লক্ষ্য হলো গ্রাহক সুরক্ষা এবং চুরি যাওয়া ডিভাইসের অপব্যবহার রোধ করা, কোনোভাবেই ব্যক্তিগত পরিসরে হস্তক্ষেপ করা নয়।

WBPAY Team

আমাদের প্রতিবেদন গুলি WBPAY Team এর দ্বারা যাচাই করে লেখা হয়। আমরা একটি স্বাধীন প্ল্যাটফর্ম যা পাঠকদের জন্য স্পষ্ট এবং সঠিক খবর পৌঁছে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের লক্ষ্য এবং সাংবাদিকতার মান সম্পর্কে জানতে, অনুগ্রহ করে আমাদের About us এবং Editorial Policy পৃষ্ঠাগুলি পড়ুন।
Back to top button