SSC Supreme Court Order: এসএসসি: ‘আন-টেন্টেড’ শিক্ষকদের জন্য সুপ্রিম কোর্টের বড় অর্ডার! জানুন আদালতের শর্ত

SSC Supreme Court Order: রাজ্যের শিক্ষা নিয়োগ দুর্নীতি মামলার দীর্ঘ আইনি জটিলতার মাঝেই যোগ্য শিক্ষকদের জন্য অবশেষে কিছুটা স্বস্তির খবর মিলল। সুপ্রিম কোর্ট ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যুক্ত নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির ‘আন-টেন্টেড’ (Untainted) বা যোগ্য শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ সংক্রান্ত এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশিকা জারি করেছে। স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC) এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদের করা মিসলেনিয়াস অ্যাপ্লিকেশনের ভিত্তিতে দেশের সর্বোচ্চ আদালত এই রায় প্রদান করেছে, যা হাজার হাজার শিক্ষকের কাছে এই মুহূর্তে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
চাকরির মেয়াদ বৃদ্ধিতে বড় সিদ্ধান্ত
সুপ্রিম কোর্টের মাননীয় বিচারপতিরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে, ২০১৬ সালের প্যানেলে থাকা যে সমস্ত সহকারী শিক্ষক বৈধভাবে এবং স্বচ্ছতার সাথে চাকরি পেয়েছিলেন, তাদের এখনই চাকরি হারাতে হচ্ছে না। আদালতের পূর্ববর্তী নির্দেশ অনুযায়ী, এই শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ ৩১শে ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে এবং নতুন নির্দেশের মাধ্যমে সেই সময়সীমা এক ধাক্কায় অনেকটা বাড়িয়ে ৩১শে আগস্ট ২০২৬ সাল পর্যন্ত করা হয়েছে। অর্থাৎ, যোগ্য শিক্ষকরা আরও প্রায় আট মাস অতিরিক্ত সময় পেলেন।
মেয়াদ বৃদ্ধির শর্তাবলী ও সময়সীমা
আদালত চাকরির মেয়াদ বাড়ালেও, এর সাথে একটি বিশেষ শর্ত বা ‘ক্লজ’ জুড়ে দিয়েছে। এই সময়সীমা অনির্দিষ্টকালের জন্য নয়। বিচারপতিদের নির্দেশ অনুযায়ী, নিচের দুটি ঘটনার মধ্যে যেটি আগে ঘটবে (Whichever is Earlier), ততদিন পর্যন্তই পুরনো চাকরি বহাল থাকবে:
- ৩১শে আগস্ট ২০২৬: যদি এর মধ্যে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হয়, তবে এই তারিখ পর্যন্ত শিক্ষকরা চাকরিতে বহাল থাকবেন।
- নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া: যদি ৩১শে আগস্ট ২০২৬-এর আগেই (ধরা যাক আগামী জুন বা জুলাই মাসে) নতুন এসএলএসটি (SLST) নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যায় এবং নতুন শিক্ষকদের হাতে অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার তুলে দেওয়া হয়, তবে সেই দিনই পুরনোদের চাকরির মেয়াদ শেষ হবে। এরপর তাদের নতুন প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই চাকরিতে আসতে হবে।
‘আন-টেন্টেড’ (Untainted) শব্দের আইনি স্বীকৃতি
এই রায়ের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হলো সুপ্রিম কোর্টের শব্দচয়ন। এই প্রথমবার দেশের শীর্ষ আদালত তাদের লিখিত অর্ডারে স্পষ্টভাবে “Untainted Teachers” শব্দটি ব্যবহার করল। এর অর্থ হলো, আদালত স্বীকার করে নিল যে, যারা ৩১শে ডিসেম্বর পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন এবং যাদের নিয়োগে কোনো দুর্নীতির দাগ নেই, তারা আইনত বৈধ এবং যোগ্য। এতদিন ধরে চলা আইনি লড়াইয়ে যোগ্য প্রার্থীদের জন্য এটি একটি বিরাট নৈতিক এবং আইনি জয় হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।
সবার আগে খবরের আপডেট পান!
টেলিগ্রামে যুক্ত হনসাময়িক স্বস্তি নাকি স্থায়ী সমাধান?
শিক্ষক মহলে এই রায় খুশির হাওয়া আনলেও, বাস্তব চিত্রটি কিছুটা ভিন্ন। আইনজ্ঞদের মতে, এটি একটি সাময়িক স্বস্তি (Temporary Relief) মাত্র, কোনো স্থায়ী সমাধান নয়।
- শিক্ষকদের ভবিষ্যতে চাকরি বজায় রাখতে হলে নতুন সিলেকশন প্রসেস বা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতেই হবে।
- সেখানে তাদের যোগ্যতা প্রমাণ করে, কাট-অফ নাম্বারের ভিত্তিতে মেধা তালিকায় স্থান পেতে হবে।
- যদি কেউ নতুন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে না পারেন, তবে ৩১শে আগস্ট ২০২৬ বা তার আগে নিয়োগ শেষ হওয়ার দিনই তাদের চাকরি জীবনের ইতি ঘটতে পারে।
পাশাপাশি, শুনানিকালে জমা পড়া বেশ কিছু মিসলেনিয়াস অ্যাপ্লিকেশনকে (MA) ‘ত্রুটিপূর্ণ’ বা ডিফেক্টিভ আখ্যা দিয়ে খারিজ করে দিয়েছেন বিচারপতিরা। সব মিলিয়ে, সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ যোগ্য শিক্ষকদের লড়াই করার জন্য বাড়তি সময় দিলেও, তাদের ভবিষ্যতের চাবিকাঠি সেই নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার ফলাফলের ওপরেই ঝুলে রইল।