SSC Recruitment: এসএসসি নিয়োগে বড় সিদ্ধান্ত! সকলের জন্য একটাই পরীক্ষা, সরকারের আয়ের উৎস? জানুন বিস্তারিত

SSC Recruitment: পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) এবং রাজ্য সরকার নতুন নিয়োগের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ২০১৬ সালের এবং নতুন চাকরিপ্রার্থীদের জন্য দুটি পৃথক নিয়োগ প্রক্রিয়ার পরিবর্তে একটিমাত্র পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এই সিদ্ধান্তটি কলকাতা হাইকোর্টকে জানানো হয়েছে এবং এর ফলে রাজ্যের হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থীর ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।
হাইকোর্টের রায় এবং রাজ্যের অবস্থান
কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ ( বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য) এবং ডিভিশন বেঞ্চ (বিচারপতি সৌমেন সেন) দ্বিতীয় এসএলএসটি চ্যালেঞ্জ মামলায় রাজ্য সরকার এবং এসএসসির পক্ষে রায় দিয়েছে। শুনানির সময়, রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত যুক্তি দিয়েছিলেন যে দুটি পৃথক নিয়োগ প্রক্রিয়া পরিচালনা করলে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেবে। এই সমস্যাগুলি এড়াতেই রাজ্য একটি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট ২০১৬ সালের জন্য একটি নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার নির্দেশ দিয়েছিল, কিন্তু কোন নিয়ম অনুসরণ করতে হবে সে সম্পর্কে নির্দিষ্ট কোনো নির্দেশিকা দেয়নি। কলকাতা হাইকোর্টের বেঞ্চগুলি জানিয়েছে যে রাজ্য সরকার নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার জন্য নিয়ম নির্ধারণ করতে পারে।
একক পরীক্ষার মূল কারণ
রাজ্য সরকার এবং এসএসসি মূলত দুটি কারণে একটি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে:
- খরচ কমানো: সরকারের মতে, দুটি পৃথক পরীক্ষা আয়োজন করা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। তাই ২০১৬ সালের শূন্যপদ এবং নতুন শূন্যপদগুলিকে একত্রিত করে একটি নিয়োগ প্রক্রিয়া চালালে খরচ বাঁচানো সম্ভব হবে।
- আইনি জটিলতা এড়ানো: যদি শুধুমাত্র পুরোনোদের জন্য পরীক্ষা নেওয়া হতো, তাহলে নতুন প্রার্থীরা বঞ্চিত হতেন এবং তারা আদালতে মামলা করতে পারতেন। এই ধরনের সম্ভাব্য আইনি চ্যালেঞ্জ এবং বিতর্ক এড়ানোর জন্য একটি সম্মিলিত পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
চাকরিপ্রার্থীদের উপর প্রভাব
এই নতুন নিয়মের ফলে চাকরিপ্রার্থীদের উপর মিশ্র প্রভাব পড়বে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, শিক্ষকতার অভিজ্ঞতার জন্য ১০ নম্বর বরাদ্দ করা হয়েছে। এই নম্বরটি লিখিত পরীক্ষার নম্বরের সাথে যোগ করে সাক্ষাৎকারের জন্য যোগ্যতা নির্ধারণ করা হবে। এর ফলে অভিজ্ঞ শিক্ষকরা কিছুটা সুবিধা পাবেন। অন্যদিকে, নতুন চাকরিপ্রার্থী এবং ২০১৬ সালের যারা ভেরিফিকেশনের জন্য ডাক পাননি, তারা এই ১০ নম্বর ছাড়াই পরীক্ষায় অংশ নেবেন। এর ফলে ২০১৬ সালের ওয়েটিং লিস্টে থাকা কিছু প্রার্থী মনে করছেন যে তারা বঞ্চিত হচ্ছেন এবং তারা এই নিয়োগের নিয়ম এবং গেজেটকে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করার কথা ভাবছেন।
খরচ নিয়ে বিতর্ক
রাজ্যের খরচ কমানোর যুক্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে প্রশ্ন উঠছে যে, সরকার প্রতিটি প্রার্থীর কাছ থেকে পরীক্ষার জন্য ৫০০ টাকা করে ফি সংগ্রহ করে। যদি বিপুল সংখ্যক প্রার্থী আবেদন করেন, তাহলে সেই সংগৃহীত অর্থ দিয়ে একাধিক পরীক্ষা আয়োজন করা সম্ভব। তাই খরচ কমানোর যুক্তিটি কতটা গ্রহণযোগ্য, তা নিয়ে অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। একাংশের মতে, সরকার এই ফি-কে পরীক্ষার খরচ মেটানোর পরিবর্তে আয়ের উৎস হিসেবে দেখছে।
সব মিলিয়ে, এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার ভবিষ্যৎ কী হবে, বিশেষ করে সুপ্রিম কোর্টে সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জের পর, তা সময়ই বলবে। চাকরিপ্রার্থীরা এখন তাকিয়ে আছেন পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে।