DA Case: ডিএ মামলায় বড় মোড়! চেন্নাইয়ের কর্মীদের ডিএ তামিলনাড়ু নয়, কেন্দ্রের সাথেই সম্পর্কিত। এই তথ্যই কি পারে খেলা ঘুরিয়ে দিতে?

DA Case: আজ সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলার শুনানি। এই প্রেক্ষাপটে, রাজ্য সরকারি কর্মচারী কনফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায় একটি ভিডিও বার্তায় রাজ্য সরকারের গতদিনের শুনানির যুক্তি খণ্ডন করেছেন এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরেছেন। তাঁর এই ব্যাখ্যা রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মনোবল বাড়াতে সাহায্য করবে।
মূল বিষয়বস্তু
মলয় মুখোপাধ্যায় মূলত দুটি প্রধান বিষয়ের উপর আলোকপাত করেছেন:
- ১. তামিলনাড়ু প্রসঙ্গ এবং মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) প্রদানের ভিত্তি।
- ২. কেন্দ্রীয় হারে ডিএ প্রদানের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট।
তিনি জানিয়েছেন যে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে তামিলনাড়ুর উদাহরণ তুলে ধরতে পারে, যেখানে কর্মচারীরা রাজ্যের হারে ডিএ পান। এই যুক্তির জবাবে মলয় মুখোপাধ্যায় বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন।
তামিলনাড়ু এবং দিল্লির ডিএ প্রদানের ইতিহাস
মলয় মুখোপাধ্যায় উল্লেখ করেছেন যে ২০১৬ সাল থেকে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের মতো দিল্লি এবং চেন্নাইতে কর্মরত রাজ্য সরকারি কর্মচারীরাও কেন্দ্রীয় হারে ডিএ পেয়ে আসছেন। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী:
- ২০১৬ সাল: সপ্তম বেতন কমিশন চালু হওয়ার পর ডিএ ২% থেকে শুরু হয়।
- সর্বভারতীয় ভোক্তা মূল্য সূচক (AICPI): সময়ের সাথে সাথে AICPI-এর উপর ভিত্তি করে ডিএ বাড়তে থাকে।
- ডিএ বৃদ্ধির হার:
- প্রথমে ৭% বেড়ে ডিএ হয় ১৩২%।
- তারপর বেড়ে হয় ১৩৬%।
- পরে আরও বেড়ে ১৩৯% হয়।
- ২০১৮ সাল নাগাদ ডিএ ১৪২%-এ পৌঁছায়।
এই সমস্ত বৃদ্ধি কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের পাশাপাশি দিল্লি এবং চেন্নাইতে কর্মরত রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হয়েছে।
ঐতিহাসিক নির্দেশ এবং তার প্রভাব
১৯৯৪ সালের ১০ই নভেম্বরের একটি অর্ডারের কথা উল্লেখ করে মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন যে বামফ্রন্ট সরকারের আমলে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এই অর্ডারে বলা হয়েছিল যে নয়াদিল্লিতে কর্মরত রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা কেন্দ্রীয় সরকারের হারে ডিএ, এইচআরএ এবং সিটি কম্পেনসেশন অ্যালাউন্স পাবেন। পরবর্তীকালে এই সুবিধা চেন্নাইতে কর্মরত কর্মচারীদের জন্যও চালু করা হয়।
এর অর্থ হল, সেই সময় থেকেই তামিলনাড়ুতে কর্মরত রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা সারা ভারত ভোক্তা মূল্য সূচকের (All India Consumer Price Index) উপর ভিত্তি করে কেন্দ্রীয় হারে ডিএ পেয়ে আসছেন। বর্তমানে তামিলনাড়ু সরকারও ৫৫% ডিএ দেয়, যা AICPI-এর উপর ভিত্তি করেই নির্ধারিত।
মলয় মুখোপাধ্যায়ের মতে, রাজ্য সরকারের ডিএ প্রদান না করার কোনো যুক্তি নেই। তাঁর কথায়, “ডিএ সরকারকে দিতেই হবে”। কনফেডারেশনের কাছে সমস্ত প্রয়োজনীয় নথি রয়েছে, যা প্রমাণ করে যে তামিলনাড়ুতে কর্মরত কর্মীরা AICPI অনুযায়ী ডিএ পেয়ে থাকেন। তাই রাজ্য সরকারের যুক্তি আদালতে টিকবে না। দিল্লি এবং চেন্নাইতে কর্মরত রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা যেহেতু কেন্দ্রীয় হারে ডিএ পান, তাই পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে রাজ্যের কর্মীদের জন্য সেই পথেই হাঁটতে হবে।
এই সমস্ত তথ্য রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ মামলার লড়াইকে আরও শক্তিশালী করবে এবং তাঁদের ন্যায্য দাবি পূরণে সহায়ক হবে বলে আশা করা যায়।