পশ্চিমবঙ্গ

Birth Certificate Rules: জন্ম সার্টিফিকেট নিয়ে রাজ্য সরকারের বড় সিদ্ধান্ত, দুর্নীতি রুখতে চালু হল নতুন নিয়ম

Birth Certificate Rules: জন্ম সার্টিফিকেট প্রদানে দুর্নীতি এবং জালিয়াতি রুখতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এক নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সম্প্রতি নবান্নের তরফ থেকে জারি করা নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী, এখন থেকে জন্ম সার্টিফিকেট পাওয়ার প্রক্রিয়া আরও কঠোর এবং সুরক্ষিত করা হয়েছে। এই নতুন নিয়ম রাজ্যের সমস্ত পঞ্চায়েত এবং পৌরসভা এলাকায় কার্যকর হবে, যার মূল উদ্দেশ্য হল জন্ম সংক্রান্ত তথ্যের সঠিকতা নিশ্চিত করা এবং যেকোনো ধরনের জালিয়াতি বন্ধ করা।

নতুন নিয়মের কারণ

সম্প্রতি রাজ্যের একাধিক পঞ্চায়েত এলাকায়, বিশেষ করে পাঠানকুলি গ্রাম পঞ্চায়েতের মতো জায়গায়, জন্ম সার্টিফিকেট নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ ছিল যে, মোটা টাকার বিনিময়ে ভুয়ো জন্ম সার্টিফিকেট তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে, যা রাজ্যের সুরক্ষা এবং নাগরিক তথ্যের জন্য একটি বড় ঝুঁকি। এই ধরনের ঘটনা আটকাতেই রাজ্য সরকার এই কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে।

কী কী পরিবর্তন আনা হয়েছে?

আগে, গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় শুধুমাত্র পঞ্চায়েত প্রধানের সই দিয়েই জন্ম সার্টিফিকেট পাওয়া যেত। কিন্তু নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এই পদ্ধতিতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে, যা নিচে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হল:

  • BMOH-এর অনুমোদন বাধ্যতামূলক: এখন থেকে আর শুধু পঞ্চায়েত প্রধানের সই যথেষ্ট নয়। জন্ম সার্টিফিকেটের আবেদনপত্রটি প্রথমে সংশ্লিষ্ট ব্লকের ব্লক মেডিক্যাল অফিসার অফ হেলথ (BMOH)-এর কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠাতে হবে।
  • আশা কর্মীদের ভেরিফিকেশন: আবেদন জমা পড়ার পর, এলাকার আশা কর্মীরা আবেদনকারীর বাড়িতে গিয়ে শিশু এবং তার পরিবারকে পরিদর্শন (Physical Verification) করবেন। তারা নিশ্চিত করবেন যে শিশুটির অস্তিত্ব সঠিক এবং প্রদত্ত তথ্য সঠিক। এই ভেরিফিকেশন রিপোর্টটি সরাসরি BMOH-এর কাছে জমা দেওয়া হবে।
  • অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে প্রক্রিয়া: সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি রাজ্যের নিজস্ব জন্ম-মৃত্যু পোর্টালে (Janma-Mrityu Thathya Portal) অনলাইনের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে। BMOH আশা কর্মীদের রিপোর্ট খতিয়ে দেখার পর, সন্তুষ্ট হলে, পোর্টালের মাধ্যমে ডিজিটাল অনুমোদন দেবেন। এর ফলে, কোনো ভুল বা মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে সার্টিফিকেট তৈরি করা প্রায় অসম্ভব হয়ে যাবে।
  • দুর্নীতি বন্ধ: এই অনলাইন এবং ভেরিফিকেশন-ভিত্তিক পদ্ধতির ফলে জন্ম সার্টিফিকেট প্রদানের প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আসবে এবং দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পক্ষে জালিয়াতি করা কঠিন হবে। এর মাধ্যমে রাজ্যের নাগরিক নথিভুক্তিকরণ ব্যবস্থাও আরও শক্তিশালী হবে।

সাধারণ মানুষের জন্য পরামর্শ

যারা নতুন সন্তানের জন্মের পর সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন করবেন, তাদের এই নতুন নিয়মগুলি সম্পর্কে সচেতন থাকতে অনুরোধ করা হচ্ছে। আবেদন করার সময় সঠিক তথ্য প্রদান করুন এবং আশা কর্মীদের ভেরিফিকেশনের সময় সম্পূর্ণ সহযোগিতা করুন। এই নতুন ব্যবস্থা হয়তো কিছুটা সময়সাপেক্ষ হতে পারে, কিন্তু এটি আপনার সন্তানের ভবিষ্যতের জন্য একটি সুরক্ষিত এবং প্রামাণ্য নথি নিশ্চিত করবে। রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানানো উচিত, কারণ এটি একটি সুরক্ষিত সমাজ গঠনে সাহায্য করবে।

সবার আগে খবরের আপডেট পান!

টেলিগ্রামে যুক্ত হন

WBPAY Team

আমাদের প্রতিবেদন গুলি WBPAY Team এর দ্বারা যাচাই করে লেখা হয়। আমরা একটি স্বাধীন প্ল্যাটফর্ম যা পাঠকদের জন্য স্পষ্ট এবং সঠিক খবর পৌঁছে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের লক্ষ্য এবং সাংবাদিকতার মান সম্পর্কে জানতে, অনুগ্রহ করে আমাদের About us এবং Editorial Policy পৃষ্ঠাগুলি পড়ুন।
Back to top button